উড়াল সড়ক: ইতাল-থাইয়ের সঙ্গে চুক্তি এ মাসেই

সংকলক
Published : 2 Jan 2011, 04:38 PM
Updated : 2 Jan 2011, 04:38 PM

ঢাকা, জানুয়ারি ০২ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সিকদার রিয়েল এস্টেটের আবেদনে স্থগিতাদেশ আসার পরপরই যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বলেছেন, রাজধানীর উড়াল সড়ক নির্মাণে চলতি মাসেই ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।

এ সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব না পাওয়া সিকদার রিয়েল এস্টেটের প্রস্তাব বিবেচনার জন্য হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলো, তা রোববার স্থগিত করে আপিল বিভাগ।

এরপর যোগাযোগমন্ত্রী সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এ মাসেই ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া শেষ করে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেওয়া হবে।

উড়াল সড়ক নির্মাণে ইতালি ও থাইল্যান্ডের যৌথ প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানির সঙ্গে সরকার চুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর হাইকোর্টে আবেদন করে সিকদার রিয়েল এস্টেট ও কোরিয়াভিত্তিক কেসিসি লিমিটেড।

স্থগিতাদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, "এ আদেশের ফলে প্রকল্পটির কার্যক্রমে বাধা রইলো না।"

আদালত স্থগিতাদেশ দিলেও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাইকোর্টের নির্দেশনা সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। এতে উড়াল সড়ক নির্মাণ কাজ শুরুতে আর কোনো বাধা রইলো না।

রাজধানীর যানজট নিরসনে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ীর পাশের কুতুবখালী পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণের জন্য চূড়ান্ত দরপত্র হয় গত ২৩ নভেম্বর।

সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় দেশের সবচেয়ে বড় এ নির্মাণ প্রকল্পে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি এবং সিকদার রিয়েল এস্টেট ও কেসিসি লিমিটেড অংশ নেয়।

তবে এ ধরনের কাজ করার অভিজ্ঞতা না থাকার কারণ দেখিয়ে সিকদারের প্রস্তাব ফেরত দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ।

সেতু বিভাগের সচিব মোশাররফ হোসেন ভূইয়া গত ১৮ ডিসেম্বর জানান, কারিগরি প্রস্তাব মূল্যায়নে সিকদার রিয়েল এস্টেট ও কেসিসি লিমিটেড উত্তীর্ণ হতে পারেনি। কারিগরি মূল্যায়নে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানিকেই কাজ দেওয়ার সুপারিশ করেছে এ সংক্রান্ত মূল্যায়ন কমিটি।

চূড়ান্ত দরপত্র মূল্যায়নে কোনো ধরনের চাপের অভিযোগও নাকচ করে মূল্যায়ন কমিটি।

এর আগে সিকদার রিয়েল এস্টেটের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করা হয়, মন্ত্রণালয় থেকে মূল্যায়ন কমিটির ওপর চাপ সৃষ্টি করে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ অভিযোগ অস্বীকার করে মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, "মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করা হয়নি।"

নির্মিতব্য উড়াল সড়ক শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, সাত রাস্তা, মগবাজার, কমলাপুর, খিলগাঁও, গোলাপবাগ হয়ে যাত্রবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত যাবে। মূল সড়কটি হবে ২১ কিলোমিটার। এর সঙ্গে আরো ৫ কিলোমিটারের দুটি লিংক যুক্ত হবে। এর একটি হবে মানিক মিয়া থেকে সাতরাস্তায় এবং অন্যটি হবে পলাশী থেকে মগবাজারে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঢাকার যানজট নিরসনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। গত ২৩ অগাস্ট প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা।

পিপিপির আওতায় হওয়ায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ৭০ শতাংশ ব্যয় বহন করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং ৩০ শতাংশ ব্যয় সরকার বহন করবে।

এ সড়কে গাড়ির জন্য টোল আদায় করা হবে। প্রতিটি কার, এসইউভি ও মাইক্রোবাসের জন্য ১২৫ টাকা। বাসের জন্য এর দ্বিগুণ এবং ট্রাকের জন্য কারের চার থেকে ছয়গুণ ভাড়া দিতে হবে।