এখনো আমাদের সমাজে স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে পুরোনো কুসংস্কার, বদ্ধমূল ধ্যান-ধারণার প্রয়োগ ও প্রাতিষ্ঠানিক সরকারি স্বাস্থ্যসেবা অপ্রতুল। পরিবারের কর্তাব্যক্তিদের নিজস্ব প্রথাগত সীমাবদ্ধ জ্ঞানই সেখানে চিকিৎসার মূল হাতিয়ার। এমনি কি অনেক সময় জরুরী অবস্থায় সঠিক স্থানে নিয়ে যাবার ভুল সিদ্ধান্তহীনতার কারণে অনেকেই অকালে মৃত্যু বরণ করেন। যাদের অধিকাংশ মানুষই বর্তমান উন্নত প্রযুক্তির আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার মূল ধারার বাইরেই অবস্থান করছে। তাই বর্তমান কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো নিয়োগকৃত ১৩ হাজার ৫শত কমিউনিটি হেলথ্ কেয়ার প্রোভাইডারদের মাধ্যমে কমিউনিটির মানুষদের কাছে দৌড় গোড়ায় অত্যাবশ্যকীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়ন গতিশীল করার জন্য সম্প্রতি জাতিসংঘের সম্মানজনক যে সাউথ-সাউথ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে, তারই বাস্তব রূপরেখা রয়েছে এই কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পে। তাই এই প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নের সাথে এদেশের স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত মানুষের অধিকার ও ডিজিটাল বাংলাদেশ এর স্বপ্ন বাস্তবায়ন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এমনিতেই দেশে বিদ্যমান কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর স্বাস্থ্য সেবার মান নিয়ে জনমনে যথেষ্ট বিভ্রান্তিমূলক ধারণা বিদ্যমান আছে। তাই এই প্রকল্পের স্বেচ্ছাচারিতা হবে এদেশের অসংখ্য মানুষের স্বাস্থ্যসেবা অধিকার নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। এ প্রকল্পটিকে ঘিরে অসহায় স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত মানুষের মাঝে অনেক আশার সঞ্চার হয়েছে। আমাদের সকলের উচিত হবে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সুষ্ঠুভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এদেশের মানুষের অনেক দিনের কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার আশার প্রদীপটি জ্বালিয়ে রাখতে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এই প্রকল্পের অধিকাংশই জনবলই দলীয় আনুগত্য ও নিবন্ধনকৃত আত্মীয়-স্বজনদের অনৈতিক সুপারিশের সুবাদে নিয়োগ প্রাপ্ত। কিন্তু দলীয় পরিচয়ে নিয়োগ পাওয়া এ বিশাল সংখ্যক জনবলের অমিতাচারিতার কারণে যদি প্রকল্পের প্রত্যাশিত সুফল না পাওয়া যায়, যদি দলীয় লোকদের আত্মোৎসর্গ মনোভাবের বদলে যদি প্রবঞ্চনা মনোভাব বিরাজ করে তাহলে তা হবে আমাদের জন্য চরম দুর্ভাগ্যের বিষয়। সবশেষে মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সমীপে আমার অনুরোধ আপনারা এ দেশের অবহেলিত মানুষের জন্য প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এমন কার্যকর পদক্ষেপ নিন, যেন এটি কাগজী প্রকল্প হয়ে দলীয় ভারে ন্যুব্জ না হয়ে পড়ে।
_______________
– জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহযোগিতায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা পপুলেশন সার্ভিসেস এন্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিএসটিসি) এর তত্ত্বাবধানে সরকারি সেবার মানোন্নয়নে নাগরিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে নাগরিক কণ্ঠ আত্মপ্রকাশ করে। বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম ব্লগের সাথে প্রস্তাবিত চুক্তির আলোকে পর্যবেক্ষণ পর্যায়ে এই পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে।
– আপনার কমিউনিটির কোনো সংবাদ শেয়ার করতে চান? জানান আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।