ইয়েমেন: অস্টম দিনের প্রতিবাদের সময় আরো একটি মৃত্যু

সংকলক
Published : 23 Feb 2011, 08:26 AM
Updated : 23 Feb 2011, 08:26 AM

রাষ্ট্রপতি আলি আব্দুল্লাহ সালেহ-এর বিরুদ্ধে সারা দেশে আরো বিক্ষোভ প্রদর্শনের মাধ্যমে ইয়েমেনের প্রতিবাদ, শনিবার অষ্টম দিনে গড়িয়েছে। ১১ ফেব্রুয়ারি তারিখে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ, প্রতিবাদকারী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের মাধ্যমে দিনের শেষে আরো খারাপ পরিণতির দিকে গড়িয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এপর্যন্ত অন্তত: ছয়জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে এবং এএফপির সংবাদ অনুসারে, শনিবারে ইয়েমেনের রাজধানী সানার শহরতলিতে আরো একজন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। আল জাজিরা জানিয়েছে মোটামুটি হাজারখানেক শাসক বিরোধী প্রতিবাদকারীদের সাথে ৩০০-৪০০ জনের সালেহ অনুসারী একটি দলের সংঘর্ষ হয়েছে। কেউ কেউ জানিয়েছে ভিড়ের মধ্যে তারা গুলির শব্দ শুনেছে। ইয়েমেন পোস্টের সংবাদ অনুসারে, সানাতে অন্তত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত তিন দশকেরও বেশী সময় ধরে সালেহ ইয়েমেনের শাসন ক্ষমতা পরিচালনা করে আসছেন। প্রতিবাদকারীরা তার শাসন ব্যবস্থাকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও এটি সহিংসতাকে উস্কে দেয় বলে অভিযোগ তুলেছে। যখন এ মাসের প্রথমদিকে মিশরের প্রতিবাদকারীরা যখন হোসনী মোবারককে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে দেয়ার জন্যে শোরগোল তুলেছিল, তখন সালেহ ২০১৩-সালে, তার মেয়াদ শেষে আর পুনর্নির্বাচনের চেষ্টা না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অভ্যন্তরীন সমালোচনা পাশ কাটানোর আশা করেছিল। সালেহ দাবি করছে যে বিদেশী শক্তি বিরোধী বিক্ষোভকারীদের মদদ যুগিয়েছে, যারা নাকি দেশটিকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

য়াক আল ওয়াক ব্লগ শনিবারের ঘটনার একটা সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেছে:

সানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিছুটা দুরে ছাত্ররা [ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ ছাত্র কংগ্রেসের] পোষা গুণ্ডাদের পেটাতে সক্ষম হয়, সানাতে দিনটি শুরু হয় বাজেভাবে। (মিশেল শেফার্ড টরেন্টো স্টারের কাছে তার রিপোর্টে দিনটির অনুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়েছেন।) তারপরে ঘটনা আরো খারাপ হতে থাকে। লাঠি হাতে নেয়া গুণ্ডাদের পাশাপাশি আরো কিছু লোক, যাদের উপজাতীয় বলে সনাক্ত করা হয়েছে, তারা ছাত্রদের ওপর গুলি চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করে। …

কিন্তু পরিস্থিতি আরো তীব্র হওয়া এক উদ্বেগজনক লক্ষণ, এমনকি এই ঘটনার উপর আরো আলোকপাত করা হলে দেখা যাচ্ছে যে সংঘর্ষের কেন্দ্রে উপস্থিতি সাংবাদিকরা (যারা স্থানীয় ইয়েমেনী সাংবাদিক) বলছে যে, সংর্ঘষে জিপিসির গুণ্ডা পরিচয়ে ছিল সাদা পোশাকের নিরাপত্তা কর্মীরা। এছাড়াও অসমর্থিত সূত্র থেকে জানা গেছে যে সরকার সানার বাইরের উপজাতিদের ট্রাকে করে শহরে নিয়ে এসেছে ছাত্র বিক্ষোভ দমন করার জন্য।

গতকালের গ্রেনেড হামলার পর তাইজের পরিস্থিতি আজ অপেক্ষাকৃত শান্ত রয়েছে। …

এডেনের পরিস্থিতি আরো অশান্ত ছিল, যদিও আজকে কোন কোন এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী বের হয়ে এর অবস্থা অনেকটাই খারাপ করে তুলেছিল। বিক্ষোভকারীরা গতরাতে এডেনে, একটি পুলিশ স্টেশন ও কয়েকটি সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়।

এখানে টুইটারে দিনের শেষের কয়েকটি প্রতিক্রিয়া প্রদান করা হল:

@শেফার্ডএম: দুপুরের সহিংসতার পর থেকে আর কোন ঘটনা ছাড়াই তারা সানা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করছে। #ইয়েমেন #ওয়াইএফ

@নাজানাইনমোশিরি: আমাদের #ইয়েমেনের আল জাজিরা টিমকে ভয় দেখানো হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে তারা অফিস ছেড়ে বেরুতেই পারছে না।

@হারুনআলআমরিকি: সাবা নেট: #এডেন-এর নির্মম সহিংসতা দুজন নিহত হয়েছে, আহত ১৭ হয়েছে জন। http://bit.ly/dHQ4OW #ইয়েমেন

@ওমেনফ্রমইয়েমেন: আজ #আলিসালেহ জনগণকে হুমকি দিয়েছে যে "বিক্ষোভ দমনের জন্যে তিনি এখনো পুলিশ এবং সেনাবাহিনী পাঠাননি" কি নির্জলা মিথ্যাচার! #ইয়েমেন #ওয়াইএফ

@আইয়োনাক্রেগ: মারমুখো দাঙ্গা পুলিশ থেকে বাঁচার জন্যে @জেববুন-এর সাথে গলিপথে লুকিয়েছি। বাড়িগুলোর ওপর থেকে মহিলারা আমাদের দিকে পাথর ছুঁড়ে মেরেছে। শেষে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছেছি #ইয়েমেন

রিপোর্টাস উইদাউট বর্ডার-এর গণ মাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে বর্তমানে ইয়েমেনের অবস্থান ১৭৮ টি দেশের মধ্যে ১৭০ তম, রুয়ান্ডা এবং চীনের মাঝামাঝি।

——————————————————————
লিখেছেন John Liebhardt · অনুবাদ করেছেন বিজয়
মূল খবরঃ গ্লোবাল ভয়েসেস