রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেবত্ব ও বাঙালির মনোজমিনের রহস্যময়তা

সংকলক
Published : 13 May 2012, 04:01 AM
Updated : 13 May 2012, 04:01 AM

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী উদযাপনকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে তার বন্দনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যকর্ম বা তার ঐতিহাসিক অবদান নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক কোনো কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে না। বরং একতরফাভাবে সবাই তার মাহাত্ম্য বর্ণনায় ব্যস্ত।

রবীন্দ্রনাথকে কেন এভাবে দেখা হচ্ছে এটা একটা প্রশ্ন বটে। তবে এর উত্তর পেতে আমাদের হয়তো তার দুশোতম জন্মবার্ষিকী পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এতে অবাক হওয়ারও কিছু নেই। বাংলাদেশ ও ভারত, দু'জায়গাতেই বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কাছে রবীন্দ্রনাথের অবস্থান ঈশ্বরের পরেই। সন্দেহ নেই যে তার ভূমিকা ও অবদান সাহিত্য ছাড়িয়ে অনেকদূর বিস্তৃত হয়েছিল। আর সাহিত্যের জগতেও তিনি এমন একটা সামাজিক অবস্থানে যেখানে বিশ্বের খুব কম সাহিত্যিকই রয়েছেন। দুটো দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা তিনি, তাই তার অর্জন বা অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করার কোনও জায়গাই নেই। কিন্তু তাই বলে তাকে, বিশেষ করে বাংলাদেশে কেন সন্ততুল্য গণ্য করা হয়, এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন বা আলোচনা না করাটাও এখন আর ঠিক কাজ নয়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু একজন কবি বা সাহিত্যিক ব্যাক্তিত্ব হিসেবে নন, বরং পরিপূর্ণ জ্ঞান বা প্রজ্ঞার প্রতীক হিসেবেই বিবেচিত হন। তাকে একজন মহাগুরু হিসেবেই চিত্রায়িত করা হয়েছে। তিনি কবিদেব (মহাকবি) নন, গুরুদেব (মহাগুরু)। সাধারণের দৃষ্টিতে, রবীন্দ্রনাথের কবিতায় তার সর্বজ্ঞানের বিপুল প্রকাশ ঘটেছে। তাই শুধু তার সাহিত্যকর্মকেই পূজা করা হয় না, তিনি যা বলেছেন বা করেছেন, তারও মাহাত্ম্য অনেক। আমার পরিচিত একজন সিনিয়র শিক্ষক ও লেখক আমাকে একদিন বলেছিলেন, 'আমার দৃষ্টিতে তিনি কোন অন্যায় করতে পারেন না।'