নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব হোক দুশ্চিন্তা মুক্তির পথ

বি স্যানাল
Published : 2 August 2012, 03:40 AM
Updated : 2 August 2012, 03:40 AM

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে যার জন্য হরতাল-অবরোধের মতো ঘটনা, হরতালে বাসে আগুনে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে চালকের মারা যাওয়া-জনমনে আতঙ্ক, সচিবালয়ে ককটেল বিস্ফোরণ-প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে বাসে আগুন এবং বিরোধী দলীয় প্রথম সারির নেতাদের কারাবরণ তা নিয়ে অস্থিরতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা মেনে নিয়ে আমাদের আশঙ্কামুক্ত করুণ। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে করজোড়ে প্রার্থনা আর জল ঘোলা করবেন না। দেশের মানুষ সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ রাজনীতির নজির দেখানোর সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামে যে সরকারের জন্য আন্দোলন করছেন-এতো হাঙ্গামা করছেন তার কুফল তো আপনার সরকারের শেষে জনগণ দেখেছে যে ইয়াজউদ্দিন রাষ্ট্রপতি থাকাবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি তো তা থাকতে পারেননি। এবার আওয়ামী লীগও যদি কোনো ইয়াজউদ্দিনকে হাজির করে তাহলে আমাদের দুর্দশার কোনো অন্ত থাকবে না। তাই আর তত্ত্বাবধায়কের দাবি নয়। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রস্তাব দিয়েছেন-ক্ষমতাসীনদল ও বিএনপির অংশগ্রহণে সরকার গঠন করে নির্বাচন অনুষ্ঠান- এ দাবি মেনে নিন। প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাব জানার পর একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে খুব আশাবাদী হয়েছিলাম-তাহলে এবার রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হচ্ছে-আর বোধহয় হরতাল, অবরোধের মুখে পড়তে হবে না, পুড়ে মরতে হবে না বদর আলীর মতো কাউকে, রাস্তায় বাসের সংকট হবে না যে ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থেকে এক কিলোমিটার দৌঁড়ে উঠতে হবে, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার মধ্যে পড়তে হবে না হরতালের যাঁতাকলে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সে আশা মলিন হয়ে যায়-যখন শুনতে পেলাম এক ইফতার পার্টতে খালেদা জিয়া বলছেন, কোনো অন্তর্বর্তী সরকার নয়-তত্ত্বাবধায়কের অধীনেই নির্বাচন হবে। কিন্তু ওই তত্ত্বাবধায়কও একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একথা ভুলে গেলে চলবে না। আর একটি বিষয় অনেকদিন ধরে ভাবছিলাম লিখবো- গণতন্ত্রের স্বার্থেই কিন্তু আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী হতে দিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য ও ভারতে তো নির্বাচনের জন্য কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দরকার পড়ে না। ওইখানকার নির্বাচন কমিশন এতো বেশি শক্তিশালী যে, তারা প্রধানমন্ত্রী- প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পারে-তাদের দুর্নীতি দমন বিভাগ-তদন্ত সংস্থা এসবই স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করে। সেজন্যই তাদের ওখানে জবাবদিহি আছে- আমাদের দেশের তুলনায় অধিকতর গণতন্ত্রের চর্চা হয়। তাই গণতন্ত্রের বিকাশে ৩ মাসের তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চেয়ে বেশি প্রয়োজন শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন-এটার জন্য আন্দোলন করুন। অবশ্য আপনাদের তো সমস্যা নেই-কারণ এবার আপা আছে- তো সামনে আমি আছি-এই ভাবনা থেকে প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে হয়ত আপনিও চান না। যাই হোক আপাত সমাধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেটা মেনে নিয়ে আমাদেরকে দুশ্চিন্তা থেবে বাঁচাবেন বলে খালেদা জিয়ার কাছে প্রত্যাশা রইলো।