খাদ্য দুর্বৃত্তায়ন আর কত?

শাহানূর ইসলাম সৈকত
Published : 29 June 2012, 08:38 AM
Updated : 29 June 2012, 08:38 AM

বাংলাদেশের ৪১ শতাংশ জনগন দারিদ্রের মধ্যে বাস করে। তাদের মধ্যে ৩১ শতাংশের অবস্থান চরম দারিদ্র সীমার নিচে। তাছাড়া, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নদী ভংগন বা মৌসুম ভিত্তিক কর্ম সংকটেও পতিত হয় ব্যপক জনগোষ্ঠী । ফলে দেশের অর্ধেক জনগন যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে তা সহজে অনুমানীয়। একদিকে জনসংখ্যার আধিক্য, অন্যদিকে সম্পদের সীমাবদ্ধতা, দুটোই দারিদ্র মোকাবেলায় বড় চ্যালেঞ্জ। স্বাধীনতা পরবর্তীকাল থেকে সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য দারিদ্র বিমোচন হলেও এবং দারিদ্র বিমোচন সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও দারিদ্রের হার সামান্যই কমেছে এবং এখন এর ব্যাপকতা উদ্বেগজনক। দারিদ্র বিমোচনে অন্তরায় বিষয়সমূহকে চিহ্ণিত করে সংস্কার না করায় এখনো সরকারকে জরুরী ত্রান সরবরাহ ও কর্মসৃজন কর্মসূচী গ্রহন করার মাধ্যমে সাময়িকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। যদিও সমস্যার তুলনায় এসব কর্মসূচী অপ্রতুল। কর্মসূচিগুলো অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ভরপুর। খাদ্য অধিকার ও সামাজিক নিরাপত্তা সকলের মৌলিক মানবাধিকার যা জাতিসংঘ সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষনা, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি সহ বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু দ্রব্য মুল্যের দু:সহ চাপ তথা ক্রমাগত দ্রব্য মুল্য বৃদ্ধি খাদ্য অধিকার ও সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিকে শুধু কাগজে কলমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছে। খাদ্য মুল্য বৃদ্ধির অভিঘাত বিশেষ করে শহর ও গ্রাম অঞ্চলের দারিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। সরকার নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে তা সামাল দেবার চেষ্ঠা করলেও তা বাস্তবায়নে নান ক্রুটি বিচ্যুতি, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দূর্নীতি আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। বিদ্যমান কর্মসূচীতে যে মাত্রায় অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দূর্নীতি রয়েছে তার ফরে বাস্তবে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত খাদ্যের কত অংশ দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিকট পৌছাচ্ছে তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। এ বিষয়ে পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সবটা হয়ত প্রশাসনিক বা আইনী দৃষ্টিতে সত্য নয়, কিন্তু প্রকাশিত এসব খবরের বিশ্লেষণের মধ্য দিযে দুর্ভাগ্যজনক বাস্তবতা সম্পর্কে অমরা সহজেই অনুমান করতে পারি।