শ্রীহীন সংসদ ভবন

জাদু
Published : 13 March 2016, 04:25 AM
Updated : 13 March 2016, 04:25 AM

লুই আই কানের তৈরি করা সংসদ ভবনের নকশা নাকি মিলিয়ন ডলার খরচ করে দেশে আনা হবে। সরকারের মূল উদ্দেশ্য কি তা ক্লাস ওয়ান এর বাচ্চাও বুঝতে পারবে। আমার লিখার উদ্দেশ্য অবশ্য এটা নয়। আমাদের চিপায় ফেলে সরকার যে ট্যাক্স আদায় করছে, সে সেই টাকায় জনকল্যাণ ব্যতীত যা খুশি তাই করতে পারে!

যাই হোক মূল কথায় ফিরে আসি। না হলে আবার ৫৭ ধারায় পরে যাব। বেশ কিছুদিন পর সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। আহ কি চেহারা! সরকার লুই আই কানের নকশার পিছনে এবং বিরোধী দল দমনে এতো বেশি ব্যস্ত যে, সংসদ ভবনের সামনের পাম গাছগুলো যে তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছে তা দেখার মত সময় কারো হয়নি! পাশেই সাংসদদের থাকার জন্য সুবিশাল ন্যাম ভবন। জানি এই ভবনে উনারা থাকেন না। বেশিরভাগ ফ্ল্যাট ভাড়া দেয়া। তাই তাদের চোখে হয়তো পরে নাই বাসার বারান্দা থেকে। কিন্তু এর মাঝে অনেকগুলো সংসদ অধিবেশন বসেছে। মন্ত্রী- এম পিদের কিছু কার্যালয় সংসদ ভবনে। মন্ত্রী- এমপি দের গাড়ির গ্লাস কালো বলে কি তাদের চোখ ও কিছু দেখে না? ৬-৭ টা পাম গাছ পরে আছে সংসদ ভবনের সামনের ফুটপাতে, বিগত ১ বছরের বেশি সময় ধরে। বাকিগুলোর অবস্থা না বলাই শ্রেয়। ৩৩০ জন সাংসদ যদি জনগণের প্রতিনিধি হয়, তারমানে তাদের চিন্তা ভাবনা ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক আমাদের সমষ্টিগত চিন্তা। তাদের কাজ আমরা চাই বা না চাই আমাদের জন্য করা। তার মানে আমরা কি জাতি হিসাবে সৌন্দর্য পিয়াসু নই? কিন্তু দেশের মানুষ নাকি প্রতি বছর বিলিয়ন ডলার খরচ করে বিদেশ ভ্রমনে। সৌন্দর্য দেখতে। সেই খরচের তালিকা নাকি সরকারের মন্ত্রী – এমপি- আমলা দের দারাই সিংহভাগ পূরণ হয়। তাহলে এই দায় কার? বিশ্বের কোন দেশ তাদের সংসদ ভবন কে এতো অযত্নে রেখেছে কিনা আমার জানা নাই। কিন্তু আমাদের দেশের এই শ্রীহীন সংসদ ভবন দেখলে যে কোন মানুষের বা পর্যটকের আমাদের জাতি সম্পর্কে খুব বেশি ভালো ধারণা আসবেনা।

মাননীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, অধিকার বলে আপনাদের আসন সবার ওপরে। আপনাদের হাতে অনেক ক্ষমতা। আপনাদের মিন্টু রোডের এবং ব্যক্তিগত বাড়ি ঘর গুলো সর্বদা চক চক করে। সংসদ ভবন আপনাদের কারো ব্যাক্তিগত সম্পত্তি নয়, তাই আপনাদের এই নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই, জানি। কিন্তু এই দেশের জনগণের সেবক আপনারা। সেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে আপনারা ক্ষমতা পেয়েছেন। সংসদ ভবন এই জাতির গর্বের স্থাপনা। দয়া করে তার সৌন্দর্য বর্ধনে দ্রুত পদক্ষেপ নিন। ২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ ঘোষণা করে দেশের পরিচালকদের বসার জায়গা যদি এতো শ্রীহীন হয়, তাহলে বাকি দেশের কথা বাদই দিলাম!