অটিজম উপলক্ষ্য মাত্র, বাঁকা চোখে দেখা

আকাশের তারাগুলি
Published : 29 July 2011, 06:33 AM
Updated : 29 July 2011, 06:33 AM

সদ্য ঘুরে গেলেন ইন্দিরা পুত্রবধু সোনিয়া গান্ধী। এসেছেন অটিজম সম্মেলন উপলক্ষে। দীর্ঘদিন তিনি ভু ভারতে অটিজম সচেতনতা নিয়ে সংগ্রাম করছেন। এটাকে সংগ্রাম বলাই শ্রেয়। কারন সমাজে অটিজমের যে নেতিবাচক ধারনা তা থেকে বের হয়ে আসার জন্য জনগনকে যে জাগরণ করতে হয়, পিতামাতা পরিবারের মনে যে শক্তি তৈরী করিয়ে দিতে হয়, তা সংগ্রামই। এই সংগ্রামে সদ্য যুক্ত হয়েছেন হাসিনা তনয়া সায়মা পুতুল। এর আগে বাংলাদেশে অটিজম নিয়ে যে কাজ হয়নি তা নয়, কিন্তু তা একেবারেই অপ্রতুল। সায়মা সম্ভবত এটাকে বাংলাদেশে সংগ্রামে পরিনত করতে যাচ্ছেন। আর যদি তা হয়ই তাহলে এর চেয়ে ভালো কিছু কমই হয়। সে ক্ষেত্রে সরকারকে পর্যাপ্ত সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে, ইনফ্যাক্ট সহযোগিতা নয় চালকের আসনেই বসতে হবে। সমাজে অটিজম সম্পর্কে যে ভুল ধারনা ছিলো বা আছে তা এক দিনে শোধরাবার নয়, এর জন্য প্রয়োজন সামষ্টিক কর্মসূচি। সমাজের নানান স্তরকে এরসাথে যুক্ত করতে হবে।

এই সম্মেলনে দক্ষিন এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অতিথিবৃন্দ যোগ দেন জাতিসংঘ বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সোনিয়া গান্ধীর এই সফর আমাদের অটিজম সম্মেলনকে যতটা না মহিমান্বিত করেছে তারচেয়ে বেশী আলোড়ন তৈরী করেছে জাতীয় ও রাজনৈতিক অংগনে।

সোনিয়া গান্ধি ভারত কংগ্রেসের সভাপতি, ইন্দিরার পুত্রবধু। ইন্দিরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যে বিশাল অবদান রেখেছেন তা নিঃসন্দেহে অনস্বীকার্য। বিশ্বের আর কোন ব্যাক্তি বা রাষ্ট্র এমন করে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে পারেনি। অনেকেই অনেক ভাবে একে ছোট করতে চান বাস্তবে যারা হীন চেষ্টা করেন তারাই নিজেকে ছোট করেন। নানান কারনে দেরী করে হলে ইন্দিরাকে আমাদের স্বাধীনতা সম্মাননা দেয়া হয়েছে তা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। সোনিয়া ইন্দিরার অবর্তমানে সেই সম্মাননা গ্রহন করে বাংলাদেশকে সম্মানিতও করেছেন।

রাজনৈতিক অংগনে ভারত বিরোধীতা সেই পাকিস্তান আমল থেকেই চলছে এবং এখনো চলছে। যে সব যুক্তিতে সেই ৭১ পুর্বে ভারত বিরোধীতা চলেছে, এখনো একই যুক্তিতে ভারত বিরোধীতা চলে এসেছে। এটা যতটা বাস্তবিক তার চেয়ে কয়েক গুন রাজনৈতিক। ৭৫ পরিবর্তনে এই ভারত বিরোধিতা পুঁজি করে নানান রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব। ৭৫ আগেও ছিলো। কিন্তু পরে এসে এটা মহামারি আকার ধারন করেছে। একটা জুজুকে সামনে নিয়ে এসে রাজনীতি ও দেশের সর্বনাশ করতেও দ্বিধা করা হয় নাই, জংগী বাদ এই ভারত জুজুকে দেখিয়েই বাড়তে দেয়া হয়েছে।

হঠাৎ করেই রাজনৈতিক ময়দানে একটা পরিবর্তন ঘটে গেছে। এই পরিবর্তন আসলে কতটা স্থায়ী সেটাই ভাববার বিষয়। কতটা বিপদজনক সেটাও বাঁকা চোখে দেখার বিষয়। এই কদিন আগেও ভারত বিরোধীতা করে বক্তৃতা বিবৃতি দেয়া হয়েছে। বক্তৃতা বিবৃতি গুলো কি এটা আসলে উল্লেখ করার দরকার করে না। মনমোহন সেপ্টেম্বরে এদেশ সফরে আসলে জমে থাকা বেশ কিছু জট খুলে যেতে পারে পজিটিভলি, তাতে আওয়ামি লীগ বিরোধিতার নামে ভারত বিরোধিতা হাস্যকর হয়ে যেতে পারে এমন টা ভাবছেন অনেকেই। ভারত বিরোধী বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোও হয়তো ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরেছেন। তাই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন তারা।

ভারত বিরোধিতা না করে তারা এর থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। এবং তা সোনিয়ার সফর কে কেন্দ্র করেই।

কিছু বচন আমরা দেখে নিতে পারি, ডঃ তালুকদার মনিরুজ্জামান, উনার শিক্ষক কিন্তু রাজনৈতিক অবস্থান ও আমরা জানি।

"শেখ হাসিনা ভারতের হাতের পুতুল বা তাদের হুকুমে কাজ করেন একথা সত্য নয়।"

স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন

"বাংলাদেশ ও ভারতের সুসম্পর্ক থাকা উচিত। এ সম্পর্ক নষ্ট করছে একটি চতুর্থ শক্তি।"

উনারা না বললেও আমরা জানি এই চতুর্থ শক্তিটা কে

মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভারপ্রাপ্ত তিনি খুবই দুঃখ করে বললেন,

সোনিয়ার আগমনকে স্বাগতম জানিয়েছেন এবং বলেছেন, 'সরকার মর্যাদাপূর্ণভাবে আমাদের আমন্ত্রণ জানাননি। কুরিয়ার দিয়ে আমন্ত্রণ লিপি পাঠিয়ে দিয়েছেন। সম্মানজনকভাবে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হলে আমরা (বিএনপি) ইন্দিরা গান্ধীকে সম্মাননা দানের সভায় যেতাম।

এই তাৎক্ষনিক রাজনৈতিক ইউটার্ন তা দেশের জন্য কতটুকু সুখের আমি জানিনা, তবে দুঃখের হতে পারে।

একটা প্রবাদ আছে হিন্দু যখন ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হয় সে বাড়ি ফেরার সময় বেশি করে গরু গোশত কিনে নেয়। ভূরিভোজন এমন ভাবে করেন যে সারা জীবন গরু না খেয়ে থাকা উসুল করেন। সবশেষে রোগ বাঁধিয়ে জীবনহানির আশংকা হয়।

বিএনপির এই হঠাৎ ভারত প্রিয়তা আমাদের সর্বনাশ ডেকে আনবে নাতো?!!

পুনশ্চ সংযোজন ৩০, জুলাই:
ভারত আওয়ামী লীগ আমাদের শত্রু নয় বন্ধু : জামায়াত

তবে কি দেখার আছে অনেক কিছু?!