গবেষণায় একধাপ এগিয়ে জাবি

দ্বিতীয় জীবন
Published : 18 May 2011, 05:12 AM
Updated : 18 May 2011, 05:12 AM

বিকল্প পদ্ধতিতে মশা দমনের পদ্ধতি আবিষ্কারে সাফল্য পেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ডঃ আব্দুর জব্বার হাওলাদার এবং সহকারী অধ্যাপক কবিরুল বাশার।গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ, সূর্যকন্যা' ব্যবহার করে কিউলেক্স কুইনকুইফেসিয়েটাস মশা দমনে সফলতা অর্জন করেন তারা। একাজে তাদের সহযোগিতা করেন একই বিভাগের এম ফিল গবেষক নাসরিন জাহান এবং স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী এইচ এম আল-আমিন।

গবেষকরা জানান, প্রাথমিকভাবে একশতটি গাছ আলাদা করে সেগুলোর পাতা, কাণ্ড, বাকল, ফুল ও ফল হতে রস তৈরী করা হয়।

তারপর সেই রসগুলোকে মশার ৩য় দশার শূক কীটের (লার্ভা) উপর পরীক্ষা করা হয়। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায় সূর্যকন্যার পাতা ও ফুল মিশ্রিত রস মাত্র ছয় ঘন্টায় একশত ভাগ শূককীটের মৃত্যু ঘটায়। যদি সেটা পূর্ণাঙ্গ শূককীটের উপর প্রয়োগ করা হয় চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে একশত ভাগ শূককীটের মৃত্যু ঘটে। গবেষকগন প্রাকৃতিক পরিবেশে গবেষণার ফল পরীক্ষার জন্যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কীট গবেষণাগার IRES (Insect Rearing and Experimental Station) এ কাজ করেও একই ফলাফল পান। এরপর গাছটির পাতা ও ফুল মিশ্রিত রস দিয়ে কয়েল তৈরী করে প্রাপ্তবয়স্ক মশার উপর পরীক্ষা করা হয়। এতে আধঘণ্টায় প্রায় একশত ভাগ মশাই অজ্ঞান হয়ে যায় এবং এগুলো পরবর্তীকালে আর বেঁচে উঠতে পারে না।

সূর্যকন্যা একটি বর্ষজীবী গুল্ম যার বৈজ্ঞানিক নাম Spilanthes acmella| এটি ৫৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বড় হতে পারে। ফুল হয় মার্চ-এপ্রিল মাসে। উন্মুক্ত স্থান, শুকনো বা ভিজে মাটি, ময়লা বা পরিস্কার সব জায়গাতেই এরা জন্মাতে পারে। এদের বাংলাদেশের সর্বত্রই পাওয়া যায় এবং মোটামুটিভাবে আগাছা হিসেবেই গন্য করা হয়।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ড. আব্দুল জব্বার হাওলাদার জানান, এই গাছের রস তৈরী করা অত্যন্ত সহজ। গাছের কার্যকর অংশ সংগ্রহ করে তা ছেঁচে বা বেটে রস তৈরী করে তা মশা জন্মাবার স্থান যেমন বদ্ধ ড্রেন বা নালার পানিতে মিশিয়ে দিলেই হয়। এ পদ্ধতি শিক্ষিত-অশিক্ষিত যে কেউ প্রয়োগ করে অতি সহজেই মশা দমন করতে পারে।

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, সরকার যদি এ ব্যাপারে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয় তাহলে আর বিদেশ থেকে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে কীটনাশক আমদানি করতে হবে না এবং রাসায়নিক পদার্থের উপর নির্ভরশীলতা কমানো যাবে একটি পরিবেশ বান্ধব উপায়ে।