আমার দেখা ২৯ এপ্রিল ১৯৯১

Published : 3 May 2014, 07:28 AM
Updated : 3 May 2014, 07:28 AM

২৯ এপ্রিল ১৯৯১। সোমবার। ২২ এপ্রিল আমি এবং আমার এক কলিগ একটা কাজে চট্টগ্রাম গিয়েছিলাম । ২৯ এপ্রিল দুপুরেই কাজ শেষ করার পর সেদিন রাতেই ট্রেনে করে ঢাকা ফেরার সিদ্ধান্ত নেই এবং অনেক কষ্টে তূর্ণা নিশীথার ২ টা টিকিট ম্যানেজ করি।। গত কয়েকদিনের ব্যস্ততায় আমরা দুজন জানতামই না একটা দূর্যোগ এগিয়ে আসছে । যতদুর মনে পড়ে বিকেল থেকে আকাশ বেশ কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছিল। সন্ধ্যার ঠিক পরপরই বৃষ্টি। রাত ন'টায় আমরা যখন গেস্ট হাউজ থেকে রেল ষ্টেশনের দিকে রওয়ানা হই তখন অন্যান্য সময়ের মত রাস্তায় তেমন একটা রিক্সা বা স্কুটার পাইনি। যাহোক, অনেক কষ্টে আমারা একটা গাড়ী যোগাড় করে রাত নয়টায় যখন ষ্টেশনে পৌঁছেছি, তখন মুসলধারে বৃষ্টি, বজ্রপাত এবং কিছুটা দমকা বাতাস। ষ্টেশনে এসে দেখি হাজার হাজার যাত্রী। অধিকাংশ যাত্রীই বাহির থেকে এসেছেন কিন্তু বৃষ্টির কারনে বাড়ী বা গন্তব্য স্থলে যেতে না পারায় আটকা পড়েছেন। রাত ১০ টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেইল ছেড়ে যাবার কথা। রাত ১১ টায় তূর্ণা নিশিথা। বহির্গামী অন্যান্য ট্রেন প্লাটফরমে দাঁড়িয়ে থাকলেও কাউকেই ট্রেনে উঠতে দেয়া হচ্ছিল না। অনেক বাক বিতন্ডার পর ঢাকা মেইলের যাত্রীরা ট্রেনে চড়ে বসলেন। আমরা তখনও প্লাটফরমে দাঁড়িয়ে। আস্তে আস্তে বাতাসের গতিবেগ বাড়ছিল। তখনও জানিনা ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত দেয়া হয়েছে।

প্রচন্ড বাতাসের কারনে ট্রেন ছাড়তে চাইছিল না কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ভিভিআইপি কিছু যাত্রীর চাপে রাত ১১টা নাগাদ ঢাকা মেইল চট্টগ্রাম ষ্টেশন ছেড়ে যায়। আমরা তূর্না নিশীথার যাত্রীরা তখনও জানি না ভাগ্যে কি আছে। প্রচন্ড বৃষ্টি, আর ঝড়ো হাওয়া বইছে। তখনই কে যেন একজন আমাকে বললো ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেতের কথা। আমি আমার কলিগকে গেস্ট হাউজে ফিরে যেতে বললাম। কিন্তু তিনি নব বিবাহিত, তাই ঢাকায় যাওয়ার তাড়না বেশী। আমার কথা কানে নিলেন না। রাত আনুমানিক ১২টার দিকে আমাদেরকে ট্রেনে ঊঠতে দেয়া হল এবং যাত্রীদের প্রচন্ড হৈ চৈ এবং চাপে পড়ে ষ্টেশন মাষ্টার ট্রেন ছাড়তে অনুমতি দিলেন। আনুমানিক ১২ টা ৩০ মিনিটে ট্রেন ছেড়ে দিল। ট্রেনটি ষ্টেশনের বাইরে আসা মাত্র আমরা সবাই বুঝলাম কেন ট্রেন ছাড়া হচ্ছিল না। এত বাতাস আর বৃষ্টি আমি জীবনে কোন দিন দেখিনি। মনে হচ্ছিল ট্রেন কাত হয়ে পড়ে যাবে। খুবই আস্তে আস্তে চলে পাহাড়তলী এসে পৌছাল। তারপর ঘোষনা এল ট্রেন আর যাবে না। আর যায় কোথায়? অনেক লোক এই ঝড় বৃষ্টির মধ্যে নেমে গিয়ে পাহাড়তলী ষ্টেশন মাষ্টারকে ট্রেন সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতে চাপ দিল । তিনি জানালেন, রেল লাইনে অনেক গাছ পড়ে আছে, তাছাড়া বাতাসের কারনে ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়তে পারে। চট্টগ্রাম ফিরে যাওয়াই ভাল। কিন্তু কে শোনে কার কথা। সবাই চেপে ধরলো, তিনি নিরুপায় হয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেন। একবার জোরে, একবার আস্তে, এভাবে চলতে লাগলো ট্রেন। মাঝে মাঝে বাতাসের ধাক্কায় মনে হচ্ছিল এই বুঝি লাইনচ্যুত হবে। ফৌজদারহাট অতিক্রম করতে না করতে শুরু হল আরও জোরে বাতাস এবং বজ্রপাত। বৃষ্টি তো ছিলই। এবার সত্যিই আতংকিত হয়ে গেলাম আমরা। প্রতিটি বগিতে কে বা কারা আজান দেয়া শুরু করলো। এক জনের পর আরেকজন। আজান আর জোরে জোরে কোরআন তেলাওয়াত। শিশু, মহিলাদের তীব্র চিৎকার। এক বিভীষীকাময় পরিস্থিতি। ভাটিয়ারী ষ্টেশনে এসে থেমে গেল ট্রেন। আর সামনে যাবার উপায় নেই কারন বৃষ্টিতে,বাতাসে সামনে কিছু দেখা যাচ্ছিল না এবং ততক্ষনে রেলের নিজস্ব টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন। সামনের ষ্টেশনের ক্লিয়ারেন্স না পেলে যাওয়া যাবে না। একদল যাত্রী প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি মাথায় করে ট্রেন থেকে নেমে ষ্টেশন মাষ্টারকে খুজতে গেল, কিন্তু পুরো ষ্টেশন তখন ভুতুরে বাড়ী। বিদ্যুৎ নেই, নেই কোন জনমানব। প্রচন্ড ঝড় বইছে, গাছপালা, বাড়ীঘর উড়ে যাচ্ছে চোখের সামনে। আমরা তখন ও জানি না অন্যান্য স্থানে কি হচ্ছে। সবাই এবার ট্রেনে ফিরে এলাম। এর মধ্যে একদল যাত্রী ট্রেনের খাবার বগি লুট করলো। যেভাবেই হোক তারা বুঝতে পেরেছিল সামনে খারাপ সময়, হয়তো আমরা রেল ষ্টেশনে আটকা পড়তে যাচ্ছি। তাই খাবার, পানি সব লুট করে নিজেদের দখলে নিয়ে নিল। সেদিন আমি বুঝলাম মানুষ আমরা কতটা কুৎসিত, নোংরা এবং স্বার্থপর হতে পারি। কোন কোন বগিতে সুর করে জিকির চলছে। আজানও থেমে নেই। ট্রেনের জানালার কাঁচ নামিয়ে দিয়েছি আমরা। তার ভেতর থেকে দেখছি কিভাবে বড় বড় গাছ, বাড়ী ঘর এমনকি গরু ছাগল উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

হঠাৎ আশে পাশের বাড়ী ঘর (সেখানে ততক্ষনে কিছুই আর অবশিষ্ট ছিল না) থেকে একদল নারী-পুরুষ ট্রেনের দরজায় এসে নিরাপদ আশ্রয়ের আকুতি জানালো। যাত্রীরা মুহুর্তে দুইভাগ হয়ে গেল। একভাগ (আমি ও আমার কলিগ সহ সংখ্যায় ৫-৬ জন) তাদেরকে আশ্রয় দিতে চাই, আর সংখ্যাগরিষ্ঠ চায়না তারা ভেতরে আসুক। ট্রেনে ডাকাতি অথবা লুটপাট হতে পারে। সাথে সাথে মহিলা যাত্রী যারা ছিলেন তারা তাদের স্বর্নের জিনিসপত্র খুলে লুকিয়ে ফেলতে লাগলেন। পুরুষেরা পকেট থেকে টাকা –পয়সা বের করে জুতার ভিতরে, প্যান্ট উঁচু করে মোজার ভেতরে অথবা আন্ডার গার্মেন্টস এর ভেতরে লুকাতে শুরু করলেন। আমরা কয়েকজন হতভম্ব। এসব কি হচ্ছে? প্রচন্ড ঝড়, বৃষ্টি আর বজ্রপাত মাথায় করে হতভাগ্য মানুষগুলো ফিরে গেল বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির দিকে। এর পর আরো ৭-৮ টি দল এলো। সবাইকে ফিরিয়ে দেয়া হল। রাত ৩-৪ টা নাগাদ ট্রেনের ছোট ছোট শিশুরা পানি পিপাসায় অস্থির হয়ে গেল। কিন্তু খাবার গাড়ীর পানি আগেই লুট হয়ে গেছে। টয়লেটের বেসিন থেকে পানি এনে কেউ কেউ খাওয়ালো। কিছুক্ষন পর তাও শেষ।

মনে হচ্ছিল এই বুঝি ট্রেন উড়িয়ে নিয়ে যাবে। ভেতরে হৈ চৈ, চিৎকার, চেচামেচি, আজান, জিকির। কেউ কেউ ট্রেন থেকে বের হয়ে মিলিটারী একাডেমিতে গিয়ে আশ্রয় নিতে বললেন। কিন্তু কয়েক বার ২-৪ জনে মিলে অতি কষ্টে ট্রেনের দরজা সামান্য খুলে যা দেখলাম তাতে ট্রেন থেকে বের হবার সাধ মিটে গেল। বাইরে সাক্ষাৎ কেয়ামত চলছে। সূর্যাস্তের আগে আকাশ যেমন লালচে আভায় ভরে যায়, সে রাতে ভোরের আকাশ তেমনি লাল। বৃষ্টি নেই তবে প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইছে। বজ্রপাত হচ্ছে। মরতে হলে ট্রেনের ভেতরেই মরবো। ট্রেনের বাতি অনেক আগেই নিভে গেছে। ভৌতিক অন্ধকার। ভোর ৫ টার দিকে আবার বৃষ্টি শুরু হল। সেকি মুশলধারে বৃষ্টি!! বাতাস আর বজ্রপাত সমানে সমান। বৃষ্টি কখন থেমেছে জানি না। সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে বৃষ্টি, বাতাস আর বজ্রপাত খানিকটা থেমে গেছে মনে হল। সাহস করে একজন, দুইজন করে ট্রেন থেকে নেমে এলাম। যা দেখলাম তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না কেউ।

আশে পাশের কোন গাছ-পালা, বাড়ী-ঘর অবশিষ্ট নেই। সব ধংসস্তুপ। কোন জন মানব নেই। কবরের নীরবতা। ষ্টেশনের পাশে একটা চাপকল ছিল। দুমড়ে- মুচড়ে পড়ে আছে। সামনে-পেছনে রেল লাইনের উপর বড় বড় গাছ পড়ে আছে। বজ্রপাতে মিলিটারি একাডেমির একটি বিল্ডিং এর কোনা ধ্বসে পড়েছে। রেল লাইনের পশ্চিম পাশ পানিতে ডুবে আছে রেল লাইন বরাবর। ছোট কালভার্ট দিয়ে সবেগে পানি ঢুকছে পূর্ব পাশে। বুঝে নিলাম জলোচ্ছাস হয়েছে। কিন্তু এই জলোচ্ছাস যে ততক্ষনে ২ লক্ষ মানুষ ভাসিয়ে নিয়েছে – সেটা জানতেও পারিনি। কারো কাছে রেডিও ছিল না। তখন মোবাইলের যুগ নয়। উপকুলীয় অন্যান্য এলাকায় কি হয়েছে, কল্পনাতেও আসেনি।

আমাদের সবার তখন একটাই চিন্তা কি করে এখান থেকে বের হওয়া যায়। চট্টগ্রামে ফিরে যাওয়া যাবে না, এ ব্যাপারে সবাই একমত। গেলে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ফেনী বা আরেকটু সামনে কুমিল্লা পর্যন্ত যেতে পারলে তারপরের অংশটুকু বাসে করে যাওয়া যাবে। কিন্তু রেলের নিজস্ব যোগাযোগ তথা সিগনালিং ব্যবস্থা সম্পূর্ন আকেজো, সামনের ষ্টেশন থেকে ক্লিয়ারেন্স না পাওয়া গেলে ট্রেন ছাড়তে পারে না। কিছু যাত্রী ষ্টেশনের কোন একজন কর্মচারীকে খুঁজে বের করে তাদের সাথে কি এক কারনে তর্কাতর্কী, তার পর গায়ে হাত। ব্যাস, এতক্ষন যে রেল কর্মচারীরা নিখোঁজ, হঠাত কোন এক অজ্ঞাত স্থান থেকে তারা লাঠি, দা নিয়ে যাত্রীদের উপর চড়াও হয়ে গেল। অনেক যাত্রী, ছেলে, বুড়ো, মহিলা-শিশু তাদের হাতে নিগৃহীত হল। যারা রেল কর্মচারীদের গায়ে হাত তুলেছিল তাদের দুই একজন বেদম মার খেল। আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম। এরপর মার খাওয়া যাত্রীরা ফুঁসে ঊঠল, তারপর ধাওয়া, পালটা ধাওয়া। এভাবে চলতে থাকলে কপালে সবার দুর্গতি আছে। আমরা কয়েকজন গিয়ে ট্রেনের চালককে অনুরোধ করে বললাম যে কোন ভাবেই হোক ট্রেন সামনে নিয়ে যাবার জন্য। যেহেতু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, তাই এখানকার সিগনাল না পেলে সীতাকুন্ডের দিক থেকে কোন ট্রেন আসবে না এটা নিশ্চিত। তিনি কিছুটা রাজী হলেন। কিন্তু রেল লাইনের উপর পড়ে থাকা বড় বড় গাছ পালা সরাবে কে? আমরা ৩০-৪০ জন ট্রেন থেকে নেমে লাইন ধরে হাটতে লাগলাম, আর যেখানে যত বড় ছোট গাছ রেল লাইনে পড়ে ছিল সেগুলো সরাতে লাগলাম। ট্রেন আমাদের পিছু পিছু চলতে লাগলো। যেখানে একটু ফাঁকা, সেখানে আমরা সবাই ইঞ্জিনে উঠে বসি, আবার গাছ পালা সরাতে হলে নেমে যাই। দুপর দেড়টায় যাত্রা করে বিকাল ৫ টার দিকে আমরা বাড়বকুন্ড পৌছাই। এরপর থেকে রেল লাইন মোটামুটি পরিস্কার। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে লাকসাম পৌছালাম। একেবারেই ফাঁকা লাকসাম ষ্টেশনের লোকজন আমাদেরকে দেখে চমকে গেল। ট্রেন ভর্তি শত শত লোক তৃষ্ণার্ত, ক্ষুধার্ত এবং আমরা কয়েকজন ভীষন ক্লান্ত। লাকসাম ষ্টেশনে একটা হোটেল খোলা ছিল। কয়েকশত লোকের এই দুরবস্থা দেখে হোটেল মালিকের লোভের আগুন বেড়ে গেল কয়েকগুন। ৫ টাকার এক প্লেট ভাত মুহুর্তে ৩০ -৪০ টাকা হয়ে গেল। ২ টাকার একটা ডিম হয়ে গেল ২০ টাকা !!!! কিন্তু খাবার অপ্রতুল। ৬-৭ শত যাত্রীর সবাইকে খাওয়ানো সম্ভব নয়। যা হোক আমরা নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন মিলে প্রথমে শিশুদের খাবার ব্যবস্থা করলাম। এর মধ্যে কিছু বিদ্রোহী বাংগালীর আবির্ভাব হল। তারা আমাদের রেশনিং নিয়ম মানবেন না। পকেটে টাকা আছে, তাই তাদেরকে খেতে দিতে হবে। অযথা হাঙ্গামা এড়াতে শত শত মানুষকে অভুক্ত রেখে তাদেরকেও খেতে দিলাম। হোটেলের পাশেই চাপ কল, সেখান থেকে পেট ভরে পানি খেয়ে রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে আবার ও ট্রেন যাত্রা শুরু। রাত দশটা নাগাদ কুমিল্লা পৌছালাম। এখানেও আমাদেরকে দেখে সবাই অবাক। আমরা আমাদের অবস্থার কথা দায়িত্বরত ষ্টেশন মাষ্টারকে জানালাম। তিনি সহানুভূতি পরায়ন হয়ে সব কিছু ঠিক করে যেভাবেই হোক রাতের মধ্যে আমাদেরকে ঢাকা পাঠানোর আশ্বাস দিলেন। এখানে বেশ কিছু যাত্রী নেমে গেলেন। অনেকে কুমিল্লা থেকে বাসে যাওয়ার জন্য বাস স্ট্যান্ডে চলে গেল। কুমিল্লায় জীবন যাত্রা মোটামুটি স্বাভাবিক। হোটেল/রেস্টুরেন্ট খোলা ছিল। সবাই খেয়ে নিলাম। রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে আখাউড়ার ক্লিয়ারেন্স নিয়ে ট্রেন যাত্রা করলো। ১লা মে ১৯৯১, ভোর চারটায় ঢাকা পৌঁছালাম। এরপর বাসায়। উপকুলীয় এলাকার খবর তখন আসতে শুরু করেছে মাত্র। সেদিনই দুপুরে বাসে চেপে চলে গেলাম যশোর। তারপর বরিশাল। সেখানে গিয়ে বুঝলাম – কি ভয়ংকর পরিস্থিতি। এরপর ত্রান তৎপরতায় জড়িত ছিলাম প্রায় একমাস।

জাতি হিসেবে আমরা এমন, আমরা তেমন; এসব নিয়ে বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে আমরা গর্ব করি, কথার ফুলঝুরি ছুটাই, পত্রিকায়- ব্লগে কাব্য রচনা করি । কিন্তু ২৯ এপ্রিল থেকে ০১ মে পর্যন্ত দুঃসহ সেই রেল যাত্রায় আমি জেনেছি – আসলে আমরা কতটা নীচ, হিংস্র এবং স্বার্থপর হতে পারি। এরপর থেকে আমি আর কোন দিন জাতি হিসেবে আমাদেরকে নিয়ে গর্ব করি না।