জিয়া-তামিমকে ধরতে পুরস্কার ঘোষনাঃ বাউন্টি হান্টিং কি এতই সহজ?

Published : 3 August 2016, 05:52 PM
Updated : 3 August 2016, 05:52 PM

গুলশানের হলি আর্টিজান হোটেল ও শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে সন্ত্রাসী হামলার মূল দুই পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত যথাক্রমে বরখাস্তকৃত মেজর জিয়া ও তামিম চৌধুরীকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ করে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (০২ আগষ্ট ২০১৬) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে পুলিশ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শ এ কে এম শহীদুল হক এ পুরস্কার ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি তথ্য প্রদান কারীদের পরিচয় গোপন রাখার প্রতিশ্রুতিও দেন। এর আগে আমাদের দেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সন্ত্রাসী/জংগী ধরতে পুরস্কার ঘোষনা করা হয়েছিল। পুরস্কারের লোভে এ পর্যন্ত কতজন নাগরিক তথ্য দিয়ে সন্ত্রাসী ধরিয়ে দিয়েছেন সেটা আমার জানা নেই। তবে সেটা যে খুবই নগন্য কিংবা শূন্য, সেটা জানতে আইনষ্টাইন হবার দরকার নেই।

গত দুই বছরে বাংলাদেশে একের পর এক ব্লগার, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, লেখক-প্রকাশক, বিদেশি নাগরিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু হত্যার প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি পলাতক মেজর জিয়ার নাম আলোচনায় আসে যিনি ২০১২ সালের শেষ দিকে সেনাবাহিনীতে এক ব্যর্থ অভ্যুথানের মূল পরিকল্পনাকারীদের একজন। সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে গিয়ে এই কর্মকর্তা জংগীদের সামরিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা যায়। গত এক- দুই বছরে বাংলাদেশে যত জংগী হামলা হয়েছে, আইএস ও আল কায়েদার পক্ষ থেকে সেসব ঘটনার দায় স্বীকার করা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নাম বদলে আনসার আল-ইসলাম বাংলাদেশ হিসেবে এবং আরেক নিষিদ্ধ দল জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া হয়তো আনসার আল ইসলামের সঙ্গে আছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামকে উদ্ধৃত করে গত জুনে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, "আমাদের সন্দেহ, সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা তাদের একজন নেতা। তিনি আত্মগোপন করে আছেন, কিন্তু আমরা তার সক্ষমতা জানি। তিনি যদি এর মধ্যে জড়িয়ে থাকেন, তাহলে তা আনসার আল ইসলামের জন্য একটি বড় শক্তির জায়গা হবে।" উল্লেখ্য যে, পলাতক মেজর জিয়া তার কোর্সের "সোর্ড অব অনার" (Sword of Honour) প্রাপ্ত একজন অফিসার যিনি একজন অত্যন্ত প্রশিক্ষিত কমান্ডো। জংগীদের অন্ধকার জগতে তার মূল্য (Value) অপরিসীম। সুতরাং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে নিঃসন্দেহে তিনি অত্যন্ত "High Value Target".

গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলায় ঘরছাড়া তরুণ-যুবকদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিখোঁজ ১০ জনের প্রথম যে তালিকা দিয়েছিল, তাতে সিলেটের তামিম আহমেদ চৌধুরীর নাম আসে। তামিম জেএমবির নেতা বলে গোয়েন্দাদের দাবি। তবে আইএসের বিভিন্ন প্রকাশনার বিশেষ করে আইএস এর মুখপাত্র দাবিক এ তার একটি সম্ভাব্য সাক্ষাতকার প্রকাশিত হবার পর তাকে সংগঠনটির বাংলাদেশ শাখার সমন্বয়ক বলে মনে করা হচ্ছে। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের বড়গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদ চৌধুরীর নাতি ৩০ বছর বয়সী তামিম ২০১৩ সাল থেকে নিখোঁজ। নিখোজের আগে তিনি কানাডার উইন্ডসরের বাসিন্দা ছিলেন। তার দাদা মজিদ চৌধুরী একাত্তরে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে স্থানীয়দের তথ্য। গুলশান এবং শোলাকিয়া হামলার জংগীদের আশ্রয়, প্রশিক্ষন এবং লালন-পালনের যাবতীয় দেখভাল তথা অর্থ ও অস্ত্র সাহায্য তিনিই দিয়েছেন বলে গোয়েন্দাদের ধারণা। যদি গোয়েন্দাদের এসকল ধারণা সত্যি হয়ে থাকে তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং আইন শৃংখলার প্রতি মারাত্বক হুমকি এই তামিম চৌধূরীও একজন High Value Target.

এই দুই হাই ভ্যালু টার্গেটকে ধরিয়ে দেবার জন্য অর্থ পুরস্কারের ঘোষনায় তাই অবাক হই নি।

উনিশ শতকে আমারিকার পশ্চিমে (যে অঞ্চলকে Wild West বলা হতো) ছোট বড় অনেক অপরাধী ছিল যারা আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে একের পর এক অপরাধ করে বেড়াত। এসব কুখ্যাত এবং ভয়ংকর অপরাধীদেরকে ধরিয়ে দেবার জন্য স্থানীয় শেরিফ (Sheriff) কিংবা কাউন্টি গভর্নর এর অফিস থেকে পুরস্কার ঘোষনা করা হতো। হ্যান্ড বিল ছাপিয়ে সারা দেশে না হলেও আশে পাশের সকল কাউন্টিতে ছড়িয়ে দেয়া হত। অনেক লোক তখন পুরস্কার ঘোষিত এসব অপরাধীকে ধরার জন্য দলবল নিয়ে বেড়িয়ে পড়ত। এটাকে বলা হতো Bounty Hunting. আর যারা বাউন্টি হান্টিং এ লিপ্ত হতো তাদেরকে বলা হতো বাউন্টি হান্টার (Bounty Hunter)। ঐ সময়ে বাউন্টি হান্টিং একটা পেশা এবং অনেকের জন্য নেশায় পরিনত হয়ে গিয়েছিল। শেরিফ বা স্থানীয় গভর্নরের অফিস থেকে যে ঘোষনা দেয়া হতো সেখানে পলাতক অপরাধীকে জীবিত অথবা মৃত ধরিয়ে দেয়ার আহবান থাকতো। পুরস্কার ঘোষিত কয়েকজন কুখ্যাত অপরাধী ছিলেন বিলি দ্যা কিড, বুচ ক্যাসিডি, জেসি জেমস, দ্যা এপ্যাচি কিড, জেরোনিমো, জন ওয়েসলি হার্ডিন। উল্লেখ্য যে, এদের কারো কারো মাথার জন্য ৫০০ শত হতে ৫০০০ ডলার পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষনা করা হয়েছিল। এদের কেউ বাউন্টি হান্টারদের হাতে, কেউ জনতার হাতে আবার কেউ পুলিশের সাথে বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন।

মাননীয় পুলিশ মহাপরিদর্শক যে পুরস্কার ঘোষণা করেছেন সেটার সদিচ্ছা বা অভিপ্রায় নিয়ে আমার কোন সংশয় নেই। কিন্তু তার ঘোষনায় কিছুটা গ্যাপ বা ফাঁক ফোঁকর রয়ে গেছে।

এটা কি শুধু তথ্য প্রদান বা ধরিয়ে দিতে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে নাকি সরাসরি ধরিয়ে দেয়ার কথা বলা হচ্ছে, আমি নিশ্চিত নই। নিশ্চিত নন আমার মত অনেকেই। আমি যদি রাস্তা ঘাটে তামিম বা জিয়া কাউকে পাই তাহলে কি করবো? পুলিশিকে ফোন করে বলবো যে আসেন, এখানে উনারা আছেন? কোন নম্বরে ফোন করবো? পুলিশকে তথ্য দিয়ে পুলিশ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলে এদেরকে আমার চোখে চোখে রাখতে হবে। এসময় যদি ওরা সন্দেহ করে আমাকে হত্যা করে কিংবা আঘাত করে তাহলে এর দায়িত্ব কে নেবে? পুলিশ কি আমার কথা বিশ্বাস করবে? আমার চিকিৎসার খরচ যোগাবে? আর যদি আমাকে হত্যা করে ফেলে (যেটা খুবই স্বাভাবিক) তাহলে আমার লাশ এবং পরিবারের কি হবে? আমাকেই জংগী বানানো হবেনা তো? কারণ এমনও তো হতে পারে একাকী তামিম অথবা জিয়াকে অনুসরন করার সময় সুযোগ পেয়ে ওরা আমাকে হত্যা করলো এবং তারপর হাতে একটা চাপাতি, পকেটে কিছু তথাকথিত জঙ্গিবাদী বই বা লিফলেট ঢুকিয়ে দিয়ে চলে গেল। কে তখন আমার আসল পরিচয় নিশ্চিত করবে?

এর চেয়ে ভাল অপশন হতে পারে একাকী অথবা আশে পাশের লোকজন নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে হাতে নাতে ওদেরকে ধরে বন্দী করে এরপর পুলিশকে খবর দেয়া। কিন্তু জীবিত ধরতে গেলে তো আমার জীবন সংশয়ের সম্ভাবনা আছে। পুলিশ আসা পর্যন্ত ওদের সংগীরা যদি ওদেরকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে এবং সেক্ষেত্রে যদি প্রানহানি হয় তাহলে এর দায়িত্ব কার? পুলিশ আমার কথা বিশ্বাস করবে? যদি ঘোষনাটা এমন হতো যে, "এই দুই জংগীকে জীবিত অথবা মৃত ধরিয়ে দিন" তাহলে কিন্তু পরিচয় নিশ্চিত হয়ে আমি এক কোপে ওদের দেহ থেকে মাথা আলাদা করে ফেলতাম। পুলিশ আসার অপেক্ষায় থাকতে হতো না। আবার এটাও ঠিক যে এই সুযোগে অনেকে প্রতিপক্ষকে মেরে বলবে যে " আমি মনে করেছিলাম সে তামিম অথবা জিয়া"। এসব ঝুকি থাকা সত্বেও, জীবিত অথবা মৃত ধরিয়ে দেবার আহবান থাকলে যে কেউ দেখা মাত্র নিজের জীবন বিপন্ন করে হলেও একটা চেষ্টা করে দেখতে পারতো। কিংবা তাৎক্ষনিকভাবে দুই-চার জনের একটা দল গঠন করে তামিম অথবা জিয়াকে কিংবা একসাথে থাকলে দু'জনকেই জীবিত অথবা মৃত ধরে ফেলতে চাইত। এক্ষেত্রে ধরাটা মুখ্য থাকতো, জীবিত নাকি মৃত সেটার প্রশ্ন পরে।

শুধুমাত্র ধরিয়ে (জীবিত অথবা মৃত স্পষ্ট করে না বলে শুধু ধরিয়ে দেয়া !) দেয়ার আহবান থাকলে কে নিজের জীবন বিপন্ন করতে চাইবে? তাও আবার সামান্য ২০ লক্ষ টাকার লোভে? ১৮৮০ সালের দিকে বিলি দ্যা কিডের মত ভয়ংকর অপরাধীদেরকে ধরার জন্য যদি ৫০০ থেকে ৫০০০ ডলার পর্যন্ত বাউন্টি ঘোষনা করা হয়ে থাকে তাহলে আজকের বাজারে সেটার মূল্য কমপক্ষে ২০ হাজার ডলার থেকে ১ লক্ষ ডলার। তো জিয়া-তামিমের মত ফিউজিটিভদের ধরতে মাত্র ২০ লক্ষ টাকা! এমনিতে তো দেশের বড় বড় চোরেরা ব্যাংক আর পাবলিক খাত থেকে শত শত কোটি টাকা মেরে নেয়ে চলে যাচ্ছে। আর দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং আইন শৃংখলার প্রতি মারাত্বক হুমকি এই দুই পলাতক কে ধরার জন্য মাত্র ২০ লক্ষ? চিন্তার দৈন্যতা আর কাকে বলে!

আচ্ছা ধরুন, সত্যি সত্যি আমি হাতের কাছে মেজর জিয়াকে কিংবা তামিম চৌধূরীকে পেয়ে গেলাম। এরপর সাহস করে আটক করতে গিয়ে তাকে মেরেই ফেললাম। তখন আমার আইনি সুরক্ষা কে দেবে? আবার কেউ যদি মুখমন্ডল বিকৃত একটা লাশ এনে বলে এটা তামিম চৌধূরী কিংবা মেজর জিয়ার লাশ, তাহলে সেটা প্রমান করার মত ডিএনএ (DNA) স্যাম্পল কি পুলিশের কাছে আছে? তামিমেরটা নেই এটা আমি ১০০% ভাগ নিশ্চিত। জিয়ার পিতা-মাতা, ভাই-বোন কেউ বেঁচে থাকলে কিংবা তার কোন সন্তান থেকে থাকলে তারাই ডিএনএ স্যামপ্লিং এর উপাদান হতে পারেন। কিন্তু পুলিশের ফরেনসিক বিভাগ কি সেই প্রস্তুতি নিয়েছে? আমি ৯৯.৯৯% নিশ্চিত যে এরকম কিছু তাদের মাথায় এখনো আসে নি।

আবার ধরুন দেশের আনাচে – কানাচে কোন এক জায়গা থেকে কেউ একজন, যেভাবেই হোক পুলিশ পর্যন্ত একটা খবর পৌঁছাতে পারলো যে, অমুক স্থানে জিয়া বা তামিম লুকিয়ে আছে। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কোন চৌকষ দল কি অন্য সকল কাজ ফেলে রেখে তাৎক্ষনিক সেই জায়গায় ছুটে যাবার প্রস্তুতি নিয়েছে?
এসব প্রস্তুতি না নিয়ে বাউন্টি হান্টিং এর ঘোষনা দেয়ার যৌক্তিকতা কতটুকু? পাঠকের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পর ঘটনাস্থল থেকে তার ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করে আলাদা দুটি হেলিকপ্টারে করে সেগুলো মূল বেইজ এ আনা হয়েছিল যেন একটি হেলিকপ্টার ধংস হয়ে গেলেও অন্যটিতে রক্ষিত স্যাম্পল থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সেটা বিন লাদেনের লাশ ছিল। যতদুর মনে পড়ে, যে হেলিকপ্টারে ডিএনএ স্যাম্পল বহন করা হচ্ছিল সেই কপ্টারে তার লাশও বহন করা হয়েছিল। এখানে আরও উল্লেখ্য যে, আমেরিকানদের কাছে আগে থেকেই বিন লাদেনের ডিএনএ স্যাম্পল ছিল। (No Easy Day এই বইটি পাঠক পড়ে দেখতে পারেন)। সামগ্রিক প্রস্তুতিটা ছিল অনেক ব্যাপক। আমাদের পুলিশ বাহিনীও হয়তো তেমন প্রস্তুতি নিয়েছে, আর না নিয়ে থাকলে অতি জরুরী ভিত্তিতে সব ফাঁক- ফোঁকর বন্ধ করে পূর্নাংগ প্রস্তুতি নেয়া দরকার।

শুধু সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষনা দিলেই তাদের ধরা যাবে বলে মনে হয় না। এরা অত্যন্ত চতুর, সতর্ক, প্রশিক্ষিত এবং সব সময় ছদ্মবেশে আছে বলে ধারণা করা যেতে পারে। তাই প্রধান প্রধান সংবাদ পত্রে, অন লাইনে, ফেসবুকে, এমনকি এস এম এসের মাধ্যমে প্রতিদিন না হলেও অন্ততঃ এক দিন অন্তর করে এক মাস বা দুই মাস কিংবা তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে এটা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং সকল স্যাটেলাইট চ্যানেলে ঘন্টায় ঘন্টায় এদের ছবি দেখিয়ে পুরস্কারের কথা ঘোষনা করা যেতে পারে। ১৯৯৫ সালের এপ্রিলে আমেরিকার ওকলাহোমা বোম্বিং এর পর হামলাকারী টিমোথি ম্যাকভেই এর ছবি ঘন্টায় ঘন্টায় প্রতিটি টিভি চ্যানেলে দেখানো হচ্ছিল আর সেজন্যই ফেডারেল গোয়েন্দারা তাকে দ্রুত গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছিল । আমাদেরকেও সেরকম কিছু একটা পন্থায় যেতে হবে। অনেক মৌসুমী ফলের ব্যবসায়ী তিন চার মাসের এক সীজনে ২০-২৫ লাখ টাকা উপার্জন করে। আর এই মুহুর্তে আমাদের দেশের দুই ভয়ংকরতম জংগীর জন্য মাত্র ২০+২০ = ৪০ লাখ? ওসামা বিন লাদেন এবং আইমান আল জাওয়াহিরি, এদের প্রত্যেকের মাথার দাম (জীবিত অথবা মৃত) ছিল ২৫ মিলিয়ন ডলার ! জ্বি আপনি ঠিকই পড়েছেন, ২৫ মিলিয়ন ডলার, টাকার অংকে ২০০ কোটি টাকা! জিয়া-তামিম যে মাপের জংগী, তাদের ধরার জন্য দশ- বিশ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল নিয়েই তবে মাঠে নামা উচিত। আর এই দুই ফিউজিটিভের যে ভ্যালু, তার উপর ভিত্তি করে এদের মাথার দাম অন্ততঃ পাঁচ কোটি টাকা এবং সুস্পষ্ট করে "জীবিত অথবা মৃত" ধরিয়ে দেবার ঘোষনা দেয়া হলে কিছু ফলাফল আসতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।

বাউন্টি হান্টিং এত সহজ ব্যাপার নয়। এখানে অনেক খরচ, প্রস্তুতি আর নাম গোপন রাখার পাশা পাশি নাগরিকের আইনি সুরক্ষার ব্যাপার আছে। আমাদের সেই পরিমান ফান্ড, প্রস্তুতি এবং আইনি সুরক্ষা দেবার মত মন-মানসিকতা আছে? নাকি এসব ঘোষণা শুধুই লোক দেখানো আয়োজন?