নিতাই দার ব্রয়লার মুরগী আর আমার ইনকিউবেটর তৈরীর গল্প

Published : 11 Dec 2016, 11:27 PM
Updated : 11 Dec 2016, 11:27 PM

অনেক দিন হলো কিছু একটা লিখবো লিখবো করে সময় পাচ্ছি না। আসলে অনেক দিন ব্লগে কিচ্ছু লিখি না। অনেক বিষয় মাথায় জমা হয়ে আছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা নিয়ে আগে লিখবো সেই দ্বিধা-দ্বন্দ এখনো আছে। আজ নিতাই দা'র ব্রয়লার মুরগী নিয়ে লেখার পর ভাবলাম এখনই সময়।
আজ থেকে প্রায় ২৫-৩০ বছর আগে ঢাকায় ব্রয়লার মুরগীর প্রচলন হয়। একেবারে প্রথম দিকে "আফতাব গ্রুপ" ব্রয়লারের একদিন বয়সী বাচ্চা উৎপাদন ও বাজারজাত করতো। এর একচ্ছত্র বাজার ওরাই নিয়ন্ত্রন করতো। এরপর কাজী ফার্মস, প্যারাগন, নারিশ, রেনেটা, ব্র্যাক, আগা লিমিটেড, পাহাড়িকা ও আফিল অ্যাগ্রো সহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্রয়লার উৎপাদন ও বিপণন শুরু করে। ২০০৮-০৯ সালে সরকারী ভাবেও ব্রয়লারের বাচ্চা উৎপাদন করা শুরু হয় ।

১৯৯৬-৯৭ সালে আমি আমাদের বাসার ছাদে প্রথম একটা পরীক্ষামূলক ব্রয়লার ফার্ম করি যেটা মূলতঃ আমার ছোটভাই দেখাশোনা করতো। সেই আমলে ৫০০ বাচ্চা দিয়ে শুরু করি। প্রথম দিকে প্রচুর মুনাফা করেছি, বেশ কয়েকবার লোকসানও হয়েছে। মুরগিতে মড়ক লাগা ছিল লোকসানের মূল কারন। এরপর ২০০০ সালে আমি গাজীপুরে আরো বড় পরিসরে ব্রয়লার ফার্ম করি যেখানে প্রতিটি শেডে ১০০০ করে মোট তিনটি শেডে ৩ হাজার ব্রয়লার উৎপাদন করতাম। বাজার ভাল থাকলে ৩০০০ মুরগীতে সব খরচ বাদ দিয়ে ৫০-৭৫ হাজার টাকা মুনাফা হতো। বাজার খারাপ থাকলে ২০-২৫ হাজারের বেশী উঠতো না।

তখন এদেশের মানুষ প্রধানত দেশী মোরগ-মুরগীর উচ্চ দামের কারনে ব্রয়লারের দিকে ঝুঁকে পড়ছিল। (আমি তখন ভাবতাম একদিন হয়তো দেশী মোরগ-মুরগী বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আমার সেই ধারণা এখন পর্যন্ত ভুল প্রমানিত রয়েছে)। যাইহোক, ব্রয়লার উৎপাদনের সেই দিনগুলোতে মাঠ পর্যায়ের খামারীরা কিভাবে বাচ্চা উৎপাদনকারীদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকতো সেটা দেখতাম আর অবাক হতাম। তিন থেকে ছয়মাস আগে বাচ্চা বুকিং না দিলে এক দিনের বাচ্চা পাওয়া যেত না। এর পাশাপাশি বিক্রেতারা ইচ্ছা মত দাম নিয়ন্ত্রন করতো। যেই বাচ্চার দাম কোন মতেই ১৫ বা ২০ টাকার বেশী হওয়ার কথা নয় সেটি তারা ৪০-৫০ এমনকি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি করতো। আমি তখন ভাবতাম কিভাবে একটা ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদনের হ্যাচারী করা যায়। নোয়াখালীর লক্ষীপুর অঞ্চলে এক বিঘার একটা জমিও কিনলাম। কিন্তু পরে আমার অংশীদারদের সাথে বনিবনা না হওয়ায় বাচ্চা উৎপাদনের হ্যাচারী করা হয়ে উঠেনি।

সেসময়ে একটা খাওয়ার উপযোগী ব্রয়লার ডিমের দাম ছিল ২ টাকা আর হ্যাচিং উপযোগী ডিমের দাম ছিল ৫-৮ টাকা । ইনকিউবেটরে ২১ দিন রাখলে মুরগীর বাচ্চা ফুটে। ভাল ইনকিউবেটর হলে হ্যাচিং রেট ৯০-৯৫% পর্যন্ত হয়ে থাকে। ২১ দিনের বিদ্যুৎ খরচ, নষ্ট হওয়া ডিমের মূল্য, সেই সাথে তদারকি ও অন্যান্য খরচ এবং যুক্তি সংগত মুনাফা মিলিয়ে এক দিনের বাচ্চার মূল্য কিছুতেই ২০ টাকার উপরে যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু মুনাফার ক্ষেত্রে আমাদের বেনিয়া ব্যবসায়ীরা কে কবে যুক্তির ধার ধেরেছেন সেটা নিয়ে গবেষনা হতে পারে বিস্তর। যাইহোক, ২০ টাকার সেই বাচ্চা আমি তিন থেকে ছয় মাস আগে বুকিং দিয়ে ৪০-৫০ টাকায় কিনতাম। এভাবে এক দিনের ব্রয়লারের বাচ্চা আমার ফার্মে আসার আগেই আমার চলতি মূলধনের ৬ – ৯ লক্ষ টাকা বাচ্চা উৎপাদনকারীর একাউন্টে জমা হয়ে যেত এবং সেটা সাইক্লিক হারে চলতো – চলতেই থাকতো। যাহোক শেষমেশ, মোটামুটি ভাল মুনাফা করে এবং কিছুটা ধাক্কা খেয়ে সেই ব্যবসা থেকে সরে আসি।

ভাবতাম কিভাবে একটা ইনকিউবেটর চলে? তখন ইন্টারনেটের তেমন পরিসর ছিল না, উইকিপিডিয়াও বোধ হয় চালু হয় নি। তাই ইচ্ছে থাকা সত্বেও এব্যাপারে বিস্তারিত জ্ঞান আহরণ করা সম্ভব হয় নি। চট্টগ্রাম-পার্বত্য চট্টগ্রামে থাকাকালীন সময় আমি মূলতঃ ময়লা পানিতে আধা সেদ্ধ করে ড্রেসিং করা ব্রয়লার খাওয়া বাদ দেই। আবার উচ্চ মূল্যের কারণে দেশী মুরগী খাওয়াও সম্ভব হতো না।

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে আমাদের পাহাড়ী ভাই বোনেরা কিন্তু সবাই বাড়ীতে মোরগ – মুরগী পালন করে থাকেন। রাংগামাটি, খাগড়াছড়ি কিংবা বান্দরবানের বিভিন্ন বাজারে গেলে আমি তাদের কাছ থেকে দেশী মোরগ-মুরগী কিনে নিয়ে আসতাম।

আমাদের দেশী জাতের মোরগ-মুরগী লালন-পালন এবং এর বংশ বৃদ্ধিতে কয়েকটি সমস্যা আছে। একটা মুরগী এক সাথে ১০-১২ টা'র বেশী ডিমে তা' দিতে পারে না। দিলেও অনেক ডিম নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া, দেশী মুরগীর বাচ্চা বড় হতে এবং বড় হয়ে নিজে ডিম দেবার উপযোগী হতে প্রায় এক বছর সময় লাগে। এরপর আছে রোগ বালাইয়ের আধিক্য। মূলত এসব কারনেই আমাদের দেশের আপামর সাধারণ জনগন বানিজ্যিকভাবে দেশী মুরগী পালনে তেমন একটা উৎসাহী হয়ে উঠছেন না। পার্বত্য চট্টগ্রামে যখন ছিলাম তখন মনে মনে ভাবতাম, যদি আমার কাছে একটা ইনকিউবেটর থাকতো তাহলে আমি সবার আগে দেশী হাঁস-মুরগীর বাচ্চা ফুটিয়ে সেগুলো সহজ লভ্য করে তোলার চেষ্টা করতাম।
আমার সেই স্বপ্ন হয়তো স্বপ্নই থেকে যেত। ২০১৬ সালের জুন মাসে আমার জীবনে একটা বড় ঘটনা ঘটে যায় (সেটা নিয়ে অবশ্যই এক দিন লিখবো)। এরপর বাসায় অনেক দিনের অখন্ড অবসর। সময় কাটানোর তাগিদেই পড়াশোনা করা এবং এসময় কিভাবে যেন আমার সেই পুরনো আগ্রহ অর্থাৎ ইনকিউবেটরের বিষয়টি আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেছি। অষ্টম শ্রেনীতে থাকা কালে পাড়ার একটা বিজ্ঞান ক্লাবের সভাপতিও ছিলাম। পড়াশোনা করে যা বুঝলাম সেটা হলো প্রয়োজনীয় উপকরণ পেলে বাসায় বসে একটা ইনকিউবেটর বানানো আমার জন্য কোন ব্যাপারই না।

একটা ইনকিউবেটরের মধ্যে তিনটা জিনিষ খুব গুরুত্বপূর্ন। সঠিক তাপমাত্রা ও আদ্রতা নিয়ন্ত্রন এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর ডিম উল্টিয়ে-পাল্টিয়ে দেয়া। এই তিনটা জিনিষ ঠিক থাকলে অর্থাৎ তাপমাত্রা গড়ে ৩৬.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস, আদ্রতা ৫০ – ৭০ % এবং গড়ে দুই বা চার ঘন্টা অন্তর অন্তর ডিম উল্টিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে ইনকিউবেটরে ডিম রেখে দিলে কোয়েলের ডিম ১৭-১৮ দিনে, মুরগী ২১ এবং দেশী হাঁসের ডিম ২৮ দিনে ফুটবে। অক্টোবর ২০১৬ মাসে দুই সপ্তাহের জন্য ওয়াশিংটন ডিসিতে যেতে হলো। সেখানে বসে অন লাইনে অর্ডার করে তিনটা তাপমাত্রা ও আদ্রতা নিয়ন্ত্রক যন্ত্র আনালাম। দেশে ফিরে আউটার ষ্টেডিয়ামের ইলেকট্রনিক্স মার্কেট থেকে কয়েকটা মাইক্রো কন্ট্রোলার চিপ (আই সি), ট্রান্সফর্মার, গুলশান থেকে এসি'র মোটর, মিরপুর থেকে বিদ্যুতের তার, সুইচ আর পরিচিত কিছু যন্ত্রাংশ। যখন যেটা হাতের কাছে পেয়েছি কিনে নিয়েছি। প্রগতি স্মরনী, কচুক্ষেত এবং মিরপুর ঘুরে কিছু পুরনো প্লাইউড আর স্ক্রূ কিনলাম। হাতুরী, স্ক্রু ড্রাইভার, জিগ স', ড্রিল মেশিন সহ কিছু যন্ত্রপাতি আমার বাসায় সব সময়ই থাকে। নভেম্বরের মাঝামাঝি কাজ শুরু করলাম। গিন্নী দেখে বেজায় চটলেন কিন্তু মুখে কিছু বললেন না, কারণ তিনিও চান আমি যেন কিছু একটা নিয়ে ব্যাস্ত থাকি। প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল কিভাবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিম উল্টানো হবে। অনেক পড়াশোনা করলাম, বেশ কয়েকটি সার্কিট বানালাম, কিন্তু কোনটাই কাজে আসলো না। এরপর এক পুরনো বন্ধু, ইলেকট্রনিক্স হবিষ্ট এর স্মরনাপন্ন হলাম এবং সম্ভাব্য একটা মাইক্রো কন্ট্রোলার নিয়ে আলোচনা করলাম। তিনি পথ দেখিয়ে দিলেন। মাত্র ৪-৫ দিনের ভেতর তেমন একটা সার্কিট বানিয়ে ফেললাম যেটা দুই ঘন্টা পর পর একটা মোটরকে ৬ সেকেন্ডের জন্য ঘুরাবে এবং তার ফলে ডিম গুলো এক দিক থেকে অপর দিকে ঘুরে যাবে।

এরপর মাপ নিয়ে একটা বাক্স বানানো হলো, বাক্সের উপরে বিভিন্ন সার্কিট, পাওয়ার সব দেয়া হল। প্রথম বার তাপমাত্রা ও আদ্রতা নিয়ন্ত্রক সুইচ অন করে দেখলাম সেটা যেভাবে কাজ করার কথা সেভাবে কাজ করছে না। নিজে নিজে অনেক ভাবে চেষ্টা করেও যখন হলো না তখন রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠানকে মেইল করে সমাধান চাইলাম। ওরা সমাধান দেবার আগেই অবশ্য আমি বুঝে গেলাম কোথায় কি করতে হবে? সেই ধারণা অনুযায়ী কাজ করে হাতে নাতে ফল পেলাম।

এরপর কাজ করলাম হিটার নিয়ে। সাধারণ বৈদ্যুতিক হিটার বা রান্নার হিটার চলবে না কারণ এটাতে অতিরিক্ত তাপ উৎপাদন হয় যা ডিম এবং প্লাইউড বাক্সকে পুরিয়ে ফেলতে পারে। অনেক এক্সপেরিমেন্ট করে অবশেষে ১০০ ওয়াটের একটা সাধারণ বৈদ্যুতিক বাল্ব এবং দুইটা বিশেষ ধরনের হিটিং এলিমেন্ট ( মূল্য ৩০ টাকা) সাথে দুইটা ১২ ভোল্টের ডিসি ফ্যান লাগিয়ে দিলাম। সব কিছু নিয়ন্ত্রন করার জন্য দুইটা রিলে ও (Relay) সাথে লাগাতে হলো।

আদ্রতা নিয়ন্ত্রনের জন্য রান্না ঘর থেকে একটি ছোট প্লাষ্টিকের বাক্স কেটে সাথে একটা ফ্যান লাগিয়ে দিলাম। বাক্সটা মসলা রাখার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। এখন শীত প্রায় এসে গেছে। তাই আদ্রতা প্রায়শঃই ৫০ এর নীচে চলে যাচ্ছিল। রান্নাঘর থেকে একটা ট্রে এনে সেটা ডিমের ট্রে'র নীচে পানি ভরে রেখে দিলাম। এবারে আদ্রতা ৬০% পর্যন্ত পেয়ে গেলাম।

সমস্ত সিষ্টেমটাকে এক সাথে বসাতে গিয়ে দেখলাম মোটর বসানোর জায়গার মাপ-জোকে কিছু ভুল ছিল। তাই বাক্স কেটে একটা সমাধান বের করতে হল। এরপর আবারো টেষ্ট রান করে দেখলাম সব কিছু ঠিক আছে কিনা? ফলাফল আশানুরূপ হলো।

আমার তর সইছিলো না। ৮ ডিসেম্বর বিকেল নাগাদ আমার টেষ্ট রান সম্পন্ন হতেই বাজারে গিয়ে কোয়েল, হাঁস এবং মুরগীর কিছু ডিম কিনে এনে ইনকিউবেটরে বসিয়ে দিলাম। কিন্তু শুরুতেই বিপত্তি। খালি ডিমের ট্রে যত সহজে ঘুরছিল, ডিম ভর্তি ট্রে তত সহজে ঘুরছিল না। ফলে আবারো মোটর খুলে সেখানে কিছু কারিগরি বিদ্যা আর সুক্ষ বুদ্ধি খাটাতে হলো। পরদিন ৯ ডিসেম্বর তারিখে পূর্বাচল এলাকার একটা বাজারে গেলাম (এই বাজারটা নিয়ে ব্লগার আইরিন একটা লেখা লিখেছিলেন, ছবি পোষ্ট করেছিলেন) এবং সেখান থেকে আরো কিছু ডিম নিয়ে এসে ইনকিউবেটরে দিলাম। এখন সারাদিন ইনকিউবেটরের সামনে বসে থাকি আর দেখি তাপমাত্রা- আদ্রতা এসব ঠিক আছে কিনা? দেখি ডিমের ট্রে ঠিক মত ঘুরছে কিনা ? ডিম দেবার পর ট্রে ভারী হয়ে গেছে তাই অনেক সময় মোটরের শক্তিতে নাও কুলাতে পারে। সেটা চিন্তা করে একটা বাইপাস সার্কিট তৈরী করে নিলাম যেটা দিয়ে মাইক্রোকন্ট্রোলারের সাহায্য ছাড়াই যখন-তখন মোটরকে ঘুরানো যাবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৬ ডিসেম্বর তারিখে কোয়েলের ডিম ফুটবে, এর ৩ দিন পর মুরগী এবং তার ৭ দিন পর হাঁস।

আমার এই ইনকিউবেটরে তিনটি ট্রে লাগিয়েছি। প্রতিটি ট্রে তে ৩০ টি করে এক সাথে ৯০ টি ডিম ইনকিউবেশনের জন্য দেয়া যায়। বাক্সের সাইজ বড় করলে একই মেশিন দিয়ে ১৮০ এমনকি ১০০০ টা পর্যন্ত ডিমের ইনকিউবেটর বানানো সম্ভব। গবেষনা পর্যায়ের কিছু বাজে খরচ সহ এ পর্যন্ত আমার খরচ হয়েছে ৮০০০ টাকার মত। বিক্রয় ডট কম এ একই ক্ষমতার (৯০ টি ডিম) সম্পূর্ন বিদেশ থেকে আমদানীকৃত ইনকিউবেটরের দাম ১৫-২০ হাজার টাকার কাছাকাছি। বানিজ্যিকভাবে উৎপাদনে গেলে আমারটা ৬০০০ টাকার মধ্যে এটা বানানো সম্ভব। আর বিদেশী সার্কিট এর বদলে স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য মাইক্রো কন্ট্রোলার এবং সেন্সর দিয়ে বানালে খরচ পাঁচ হাজারের মধ্যে নেমে আসবে বলে আমার বিশ্বাস। আমার ডিজাইন অনুসরণ করলে ১০০০ ডিমের জন্য ইনকিউবেটরের উৎপাদন খরচ কিছুতেই ১৫ হাজার টাকার বেশী হবে না।

ইনকিউবেটরটি দেখতে খুব আহামরি কিছু হয়নি। তাই এর মধ্যে কিছু সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করেছি। দেখতে যেমনই হোক, কাজ করছে, সেটাই বড় কথা। আমি তো আর বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদনে যাইনি। তাহলে সমস্যা কোথায়?

আরেকটা কথা না বলে পারছিনা। এই ইনকিউবেটর দিয়ে কুমির, সাপ, রাজহাঁস, টার্কি অর্থাৎ মোটামুটি সব ধরনের ডিমই ফূটানো সম্ভব। এক বন্ধুকে অনুরোধ করেছি, যেভাবেই হোক, কয়েকটা কুমিরের ডিম আমার চাই ই চাই। সে কথা দিয়েছে – অন্ততঃ চেষ্টা করে দেখবে। আমি জানি সে পারবে। আপাততঃ এখন শুধু অপেক্ষার পালা।

আপনারা যারা এতক্ষন ধৈর্য্য ধরে এই বিশ্রী লেখাটি পড়লেন, তারাও অপেক্ষায় থাকুন। ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ আপডেট দিব।

বিঃদ্রঃ নিতাই দা'কে আলাদা করে ধন্যবাদ।