ইবোলাঃ চাই জনসচেতনতা

ইমামুল হুসাইন ইমন
Published : 23 Oct 2014, 12:51 PM
Updated : 23 Oct 2014, 12:51 PM

ইবোলা ভাইরাস এক আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।  এই পর্যন্ত ৪,৮৭৭ জন মানুষ ইবোলায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ দিয়েছে।  ডিসেম্বরের মধ্যে পশ্চিম আফ্রিকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০০০০ ছাড়াবে, এমনি এক তথ্য দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা "হু"।  সিয়েরা লিওন, লাইবেরিয়ায় ইবোলা ভাইরাস মহামারী আকার নিয়েছে।  বর্তমানে ইবোলা একটি সর্বাধিক আলোচিত বিষয়।  বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশের মানুষই হয়তো এটি নিয়ে শঙ্কিত।

ইবোলা নিয়ে সব জায়গাই আলোচনা-সমালোচনা হলেও এই নামটি বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলের মানুষদের কাছে অজানা।  তারা জানেন না ইবোলা কি? কিভাবে ছড়ায়? প্রতিরোধ ব্যবস্থাইবা কি? তাই আমার মনে হয় ইবোলা সম্পর্কে গ্রাম অঞ্চলের মানুষদেরকে জানানো অবশ্যই দরকার।  কারণ বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে ইবোলা প্রবেশ করলে আস্তানা করতে বেশি সময় লাগবে না।  তাছাড়া আমাদের দেশের গ্রাম অঞ্চলের মানুষেরা অর্ধ-শিক্ষিত, অশিক্ষিত যার কারণে পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনের মাধ্যমে সচেতনতা কার্যক্রম বাড়াতে হবে।  গ্রাম অঞ্চলে মাইকিং, উঠান বৈঠাক ইত্যাদি কার্যক্রম চালু রাখলে গ্রামের অশিক্ষিত মানুষগুলো ইবোলা সম্পর্কে জানতে পারবে।

ইবোলা বাদুড়, বানর ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়ায়।  আর গ্রামের মানুষেরা বাদুড়ে, পাখিতে খাওয়া ফলমূল না জেনেই অহরহ খেয়ে থাকে।  যার কারণে তাদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১০০%।  বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলগুলোতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার মাত্রাটা একটু কম।  তাই গ্রাম অঞ্চলের মানুষদের সচেতন করার প্রয়োজনটা একটু বেশি।  আমাদের দেশের প্রাথমিক স্কুল গুলোতে ইবোলা ভাইরাস সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে।  বাচ্চারা অনেক সময়  অপরিস্কার খাবার গ্রহণ করে যার তালিকায় ইদুরে, বাদুড়ে খাওয়া ফলমুলও থাকে।  তাই ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের মাঝে ইবোলা সম্পর্কে আলোচনা করলে তারা হয়তো এই সমস্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে।

শুধু প্রাইমারী স্কুল নয়, হাই স্কুলে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ইবোলা সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে।  জনসচেতনতা বাড়ানো না গেলে এই ভাইরাস যদি আমাদের দেশে প্রবেশ করে তাহলে সংক্রামনের হাত থেকে বাঁচার কোন সহজ রাস্তা থাকবে না।  বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী সংস্থার প্রচারের কারণে আমাদের দেশের গ্রাম অঞ্চলের মানুষেরা এইডস সম্পর্কে ব্যাপকভাবেই জানে।  এইডস কি? কেন হয়? কিভাবে হয়? ইত্যাদি।  সুতরাং এইডসের মতো ইবোলা সম্পর্কেও জনগণকে জানাতে হবে।

বাংলাদেশ সরকার ও সকলকে অনুরোধ করবো যার যার অবস্থানে থেকে অর্ধ-শিক্ষিত, অশিক্ষিত মানুষদেরকে ইবোলা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করতে করুন।  কারণ, জনসচেতনাই হতে পারে মুক্তির একমাত্র পথ।