'মাতৃমৃত্যু ও মাতৃস্বাস্থ্যসেবা জরিপ ২০১০' সূত্রে পাওয়া যায়, গত বছর দেশে প্রায় চার লাখ ৩৮ হাজার শিশু অস্ত্রপচারের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে। ২০০১ সালের তুলনায় এই সংখ্যা পাঁচ গুণ বেশি।
দেশে শিশু জন্মের সংখ্যা ও হার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রপচারও বেশি হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রপচারে জবাবদিহির কোনো ব্যবস্থা নেই। এতে সেবা গ্রহণকারী পক্ষকে বিপুল অর্থ অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীতে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রসবের ক্ষেত্রে অস্ত্রপচার দরকার হয়। মায়ের অপুষ্টি ও গর্ভকালীন সমস্যার কারণে প্রসবে জটিলতা দেখা দেয়। মা ও নবজাতকের প্রাণ ও স্বাস্থ্যরক্ষায় অস্ত্রোপচার করতে হয়।
জাতীয় জরিপের তথ্য সূত্রে পাওয়া যায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একাধিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ও দাতা সংস্থার সহায়তায় ২০১০ সালে দেশে মাতৃমৃত্যু ও মাতৃস্বাস্থ্য সেবার ওপর সারা দেশে জরিপ করেছে। জরিপে এক লাখ ৭৫ হাজার পরিবারের তথ্য নেওয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০১ সালে ২ দশমিক ৬ শতাংশ শিশুর জন্ম হয়েছিল অস্ত্রোপচারে, আর ২০১০ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১২ দশমিক ২ শতাংশে। অর্থাৎ ১০ বছরে অস্ত্রোপচারে শিশু জন্মের হার পাঁচ গুণেরও বেশি বেড়েছে।
এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী শামস এল আরেফিন বলেন, শিক্ষিত ও ধনীদের যে এই হারে অস্ত্রোপচার দরকার, তার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হারের চেয়ে তা অনেক বেশি। আবার নানা বিবেচনায় যেসব দরিদ্রের অস্ত্রোপচার বেশি দরকার, কিন্তু তারা সে সুযোগ পায় না। শিশু জন্মে অস্ত্রপচার বৃদ্ধি নিয়ে অনেকটাই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। কয়েক জন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা যায়, অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক মায়েদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা অনেক বেশি হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অক্ষমতার কারণে পূর্ণ বয়ষ্ক গর্ভবতী মায়েদেরও এই সমস্যা হয়।