ঘুরে আসুন মেইন-৪ (যাত্রা শুরু)

ফকির সেলিম
Published : 14 Nov 2015, 04:47 PM
Updated : 14 Nov 2015, 04:47 PM

২৮শে জুলাই মঙ্গলবার। আজ আমাদের মেইন যাত্রার দিন। ঘুম ভাংল সকাল ৮টায়। সবাই তখন গভীর ঘুমে। অনুকে ডেকে তুল্লাম। ফ্রিজ থেকে বের করে পরাটা গরম করে খেয়ে শুরু করলাম ডাকাডাকি। রেডী হয়ে বের হতে হতে ১০টা বাজল। আমরা দর্পনের বাসায় গেলাম রিপাদের তুলতে। যাত্রার শুরুতেই বিরাট বাধা। হিলসাইড এভিনিউ আর ১৯০ ষ্ট্রিটের সিগন্যাল লাইটের আগে ঘটল এক অঘটন। আমিতো সোজা যাচ্ছি। বিপরীত দিক থেকে এক ষ্কুল বাস বামে মোড় নিতে গিয়ে আমার গাড়ীর পেছনে লাগিয়ে দিল ঘষা। বেশ খানিকটা যায়গার রং উঠে গেল আচড় লাগার মতো। গাড়ী থামিয়ে নামলাম। বাস ড্রাইভারও নেমে এলো। অল্প বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গ ড্রাইভার। গাড়ীতে বেশ কয়েকজন বাচ্চা। লোকটি নেমেই সরি সরি বলতে লাগলো। ভীষণ মেজাজ খারাপ হচ্ছিল। ওকে বললাম 'ইউ শুড বি মোর কেয়ারফুল ম্যান'। শহীদুল আর আমি দুজনেই ক্লিক ক্লিক করে কয়েকটি ছবি তুললাম। তা দেখে সে আরো ভয় পেয়ে গেলো। শহীদুল বললো পুলিশ কল করবা? আমি বললাম নাহ। পুলিশ ডাকলে কমপক্ষে ঘন্টা খানেক নষ্ট হবে। আরো বেশীও লাগার সম্ভাবনাই বেশী। ওদেরকে রাস্তার মধ্যে অপেক্ষা করানো ঠিক হবে না। লোকটিকে বললাম ইউ মে গো। সে আবারো সরি সরি বলতে লাগলো। সে বললো আই হ্যাভ টু রিপোর্ট দিস টু মাই কোম্পানী। অভয় দিয়ে আমি বললাম ডোন্ট ওরি, আই এ্যাম নট গোয়িং টু কম্প্লেইন। সে বললো আর ইউ শিওর। বললাম ইয়েস ম্যান গো। থ্যাংক ইউ বলে চলে গেলো সে।


দর্পনের বাসায় গিয়ে রিপাদের তুললাম। শহীদুলের কি যেনো জরুরী কাজ রয়েছে জ্যাকসনহাইটস। ৫ মিনিটের কাজ। সিদ্ধান্ত হলো শহীদুলের কাজ শেষে জ্যাকসনহাইটসের কোথাও বসে নাশতা সেরে বের হবো। সাগামোর এভিনিউ থেকে বের হবার আগে সবাই এক লাইনে দাড়িয়ে সেল্ফি করা হলো। রওনা হলাম ঠিক ১০টায়।

জ্যাকসনহাইটসের কোথাও বসে নাশতা সেরে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হলো না। ১১টা বেজে গেছে। ওদিকে দর্পন ইজি পাস ভুলে রেখে এসেছে। নর্দান বুলেভার্ডের ডানকিন থেকে যে যার পছন্দমত নাশতা নিলো। রিশা বল্লো উইন্ডি খাবে। ভাগ্য ভালো পাশেই উইন্ডি। নাশতা শেষ করে দর্পনের বাসা হয়ে ইজি পাস নিয়ে মেইনের পথে সত্যি সত্যি যাত্রা শুরু করলাম ঠিক দুপুর বারোটায়।

আমার গাডীতে রিপা তার জামাই বেলাল অনু আর রামিন। দর্পনের সংগে শহীদুল রিশা আর রিহা। ওদের দুই বোনের সাথে বহুদিন পর দেখা। গতরাতে ব্রুকলীনে যখন প্রথম দুজনের দেখা হলো মনো হলো কেউ কাউকে চেনে না। অথচ দুজন দুজনের জান ছাল ছোটবেলায়। রিহা রিশার চেয়ে সামান্য বড়ো। সেইজন্য দুজনকে একসাথে বসতে দেয়া যাতে ফ্রি হয়। হোয়াইটস্টোন ব্রীজ পার হওয়ার মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানকিভাবে বিদায় জানালাম কুইন্সকে। সামনে দর্পনের গাড়ী, পেছনে আমরা। —-

(চলবে)