জীবন সে তো কচু পাতার পানি। অকাল ও ক্ষণস্থায়ী জীবনের সাথে কচু পাতার এই তুলনা হয়ত সুখকর বা আনন্দদায়ক নয়। কিন্তু সাতসকালে বৃষ্টিজল বিধৌত কচু পাতার সবুজ গালিচায় বসে এক সুন্দর ফড়িং যদি সুস্বাদু খাবারে তার সারারাত্রির উপবাসভঙ্গ করে, তবে তা দেখতে বড় মনোমুগ্ধকর দৃশ্যই বটে।
বৃহৎ যৌগিক চোখ, দুই জোড়া শক্তিশালী ও স্বচ্ছ পাখা, ছয়টি পাসমেত সুশোভন ফড়িং যখন দীর্ঘায়িত শরীরটাকে সমকোণ ও পাখাগুলোকে আনুভূমিক রেখে আয়েসি ভঙ্গিতে জলমুক্তো সামনে রেখে সবুজ গালিচায় বসে প্রাতরাশ সারে- তখন মনে হয় আহা জীবনটা যদি কচু পাতার পানির মতো স্বল্পায়ুর না হতো! তবে দৃষ্টিসীমায় আরো এমন সুন্দরেরা যুগে যুগে হয়ত ধীরলয়ে হামাগুড়ি দিয়েই যেত। আর সেসময় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অমৃত আবহ সংগীত নিয়ে হাজির হতেন!
আনন্দধারা বহিছে ভুবনে,
দিনরজনী কত অমৃতরস উথলি যায় অনন্ত গগনে ॥
পান করি রবে শশী অঞ্জলি ভরিয়া-
সদা দীপ্ত রহে অক্ষয় জ্যোতি-
নিত্য পূর্ণ ধরা জীবনে কিরণে ॥
বসিয়া আছ কেন আপন-মনে,
স্বার্থনিমগন কী কারণে?
চারি দিকে দেখো চাহি হৃদয় প্রসারি,
ক্ষুদ্র দুঃখ সব তুচ্ছ মানি
প্রেম ভরিয়া লহো শূন্য জীবনে ॥
'কবি'র তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় আপনি আসলেই খুব সত্যি। জীবন এতো ছোট কেনে?
ছবিঃ সুখেরছায়া, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।
তারিখঃ ১০ মে ২০১৬, সকাল।