কাল রাত দেখা দুটি দুঃস্বপ্ন

ফাতেহুল বারী
Published : 23 Feb 2015, 03:22 AM
Updated : 23 Feb 2015, 03:22 AM

২৪ অক্টোবর, ২০১৪
কাকডাকা ভোর
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
জাতীয় পতাকায় মোড়ানো গোলাম আযমের মরদেহ, বিউগুল বাজছে। খালি পায়ে লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পরা প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দাঁড়ানো গোলাম আযমের মরদেহের পাশে। বিদেশী ধাঁছের ফর্সা চেহারা, বেদনার্ত । উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন, "আমরা আমাদের মহান নেতা, পথপ্রদর্শক, পরম বন্ধূকে হারালাম।"
আমার ঘুম ভেঙে গেল, বুকের ভিতরটা ভয়ে কাঁপছিল। পাশে ঘুমাচ্ছেন আমার সন্তানের মা, তাঁকে জাগালাম, জিগ্যেস করলাম- গত ২৪ অক্টোবর, ২০১৪ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন? নিশ্চিন্ত কণ্ঠে তিনি জবাব দিলেন শেখ হাসিনা। আমার বুকের ভিতর থেকে অস্ফুট একটা পঙতি বেড়িয়ে এল- 'ভাগ্যিস সেদিন শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন!' হালকা অনুভব হল, ঘুমিয়ে পড়লাম।

২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
প্রথম প্রহর
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
শহীদ মিনারের বেদীতে বেশ আয়েশি ভঙ্গীতে বসা মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ, সামনে হাত জোড় করে বসা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। দুজনের উর্দু কিছু কথোপকথন নিচে বাংলায় অনুদিত হল-
জিন্নাহঃ আমি এখনো 'বাঙ্গাল' ভাষাকে ঘৃণা করি। আমি তখন জীবিত থাকলে ওসব ফালতু ভাষা আন্দোলন-ফান্দোলন গুঁতা মেরে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতাম।
খালেদা জিয়াঃ জী স্যার।
জিন্নাহঃ আমি East Pakistan-কে এখনো স্বাধীন রাষ্ট্র মনে করিনা। তোমাকে এখানে West Pakistan- এর স্পিরিট কায়েম করতে হবে।
খালেদা জিয়াঃ নিশ্চয়ই স্যার।
জিন্নাহঃ তো আজ তোমরা এখানে ফুল-টুল দিবে না। নাযায়েজ কাম।
খালেদা জিয়াঃ না স্যার। আগের ঐসব ফুল-টুল দেয়া ছিল লোকদেখানো। আজ সারারাত এখানে আপনার সান্নিধ্যে থাকব স্যার। আগামীকাল রাত ১২টা পর্যন্ত এই 'টঙ'-এর চারপাশে ১৪৪ ধারা জারী করা আছে। প্রভাত ফেরি-টেরি সব বাদ। চারদিকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা, কারো এখানে ঢোকার সুযোগ নেই স্যার।
জিন্নাহঃ থ্যাঙ্ক ইউ। West Pakistan- এর পূর্ণ স্পিরিট এখানে কায়েম করা চাই-ই।
খালেদা জিয়াঃ ইনশাল্লাহ্ স্যার।
জিন্নাহঃ West Pakistan এবং ISI সবসময় তোমার পাশে থাকবে।
খালেদা জিয়াঃ থ্যাঙ্ক ইউ স্যার।

আমার ঘুম ভেঙে গেল, বুকের ভিতরটা ভয়ে কাঁপছিল। পাশে ঘুমাচ্ছেন আমার সন্তানের মা, তাঁকে জাগালাম, জিগ্যেস করলাম- গত ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন? নিশ্চিন্ত কণ্ঠে তিনি জবাব দিলেন শেখ হাসিনা, একুশের প্রথম প্রহরে বিনম্র শ্রদ্ধায় শহীদ মিনারের বেদীতে ফুল দিয়েছেন। হালকা অনুভব হল, ঘুমিয়ে পড়লাম।