গতকাল থেকে দেশব্যাপী মোবাইল অপারেটর রবি'র মাধ্যমে নি:খরচায় ইন্টারনেট চালু করেছে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মি. মার্ক জুকারবার্গ। ইতিপূর্বে অবশ্য এই পরিষেবা আফ্রিকান বেশ কিছু দেশে চালু হয়েছে বলে আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে অবগত হয়েছি। প্রাথমিকভাবে সর্বমোট পঁচিশটি ওয়েবসাইট 'ফ্রি ইন্টারনেট' পরিসেবার মাধ্যমে পাওয়া যাবে। পরবর্তিতে এটি বাড়বে বলেই আপাত অনুমেয়।
বর্তমান সরকারের যতগুলো ভালো উদ্যোগ আছে, তার মধ্যে বোধকরি সেরাটি হলো পুরো দেশকে ইন্টারনেট পরিসেবার আওতাভুক্ত করা। এর মাধ্যমে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কাজকর্মে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির পেয়ে একদিকে যেমন মানুষের কাছে তথ্যপ্রযুক্তি সহজলভ্য হবে, অন্যদিকে কাজের ক্ষেত্রে গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে, লালফিতার দৌরাত্ব্য আর দূর্নীতিও এতে করে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে, সন্দেহ নেই। তবে ব্যাপক ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির সফলতা পেতে সরকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যবহারকারীদের অনেক প্রস্তুতির দরকার আছে এ কথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।
ফ্রি নেট ব্রাউজ করার সুযোগ নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাবার যোগ্য। এ প্রসঙ্গে আমাদের আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনায়েদ আহমেদ পলক-এর অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করতেই হবে। তবে এই ফ্রি ব্রাউজিং সুবিধায় কিছুটা ভয় হয়। ভয় হয় কারণ আমরা তো যাতে বাঙালি! ফ্রি কিছু কোথাও পেলে, ব্যবহারের থেকে অপব্যবহার আমরা একটু বেশিই করি।
প্রাথমিকভাবে ফ্রি ব্রাউজিং তালিকায় স্থান পাওয়া ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে সরকারী কিছু সাইটও পাওয়া যাবে, দু তিনটি নিউজ সাইট পাওয়া যাবে, আর পাওয়া যাবে "ফেসবুক"। সবগুলো সাইটের মধ্যে ব্যবহারের দিক থেকে বোধকরি পঁচানব্বই থেকে সাতানব্বই শতাংশ ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হবে শুধুমাত্র ফেসবুক ইউজের জন্য। হিসেবটা পৌনপৌনিক নয়, এটি নিছকই অনুমান, তবে এর যথার্ততা এই সেবা উদ্বোধনকালে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী'র কথায় স্পষ্ট, তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, যা মোট জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ। এ দেশে প্রতি ১২ সেকেন্ডে একজন ফেইসবুকে প্রোফাইল খুলছে, যা দেশের জন্মহারের চেয়েও বেশি।
এখন প্রশ্ন হলো মি. মার্ক জুকারবার্গ -এর ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহারের এই সুযোগে 'ডিজুস প্যাকেজ' আর 'জয় প্যাকেজ' এর অনুরূপ প্রতিক্রিয়া আবার আমাদের সমাজে তৈরী হবে না তো! সংশ্লিষ্ট মহল সে বিষয়টা ভেবে দেখেছেন তো! আমরা তো ঘর পরা গরু, তাই আমাদের ভয় একটু বেশিই।