‘কাঁটাতারের বেড়া আমাদের সাহিত্যকে কখনই আলাদা করতে পারবে না’

গৌতম বুদ্ধ পাল
Published : 17 April 2017, 02:48 AM
Updated : 17 April 2017, 02:48 AM

পহেলা বৈশাখ ১৪২৪ বঙ্গাব্দ উপলক্ষে বিশ্ব কবিমঞ্চ সিলেটের আয়োজনে গত ১৫ এপ্রিল শনিবার সিলেট নগরীর দরগা গেইটস্থ রোটারিয়ান ড. আর কে ধর মিলনায়তনে ভারতীয় কবিদের অংশগ্রহণে এক বৈশাখী কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৫টায় বিশ্ব কবিমঞ্চ সিলেট মহানগরের সমন্বয়কারী গৌতম বুদ্ধ পালের সঞ্চালনায় রোটারিয়ান ড. আর কে ধর এর সভাপতিত্বে শুরু হয় বৈশাখী কবিতা আড্ডা।

আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আসন গ্রহণ করেন ওপার বাংলা থেকে আগত বাচিক শিল্পি, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী ইলা মিত্রের পরিবার সদস্য বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পি, টিভি ও রেডিওর সঙ্গে যুক্ত বাংলা ভাষা সংহতি'র সম্পাদিকা শ্রীমতি অঞ্জনা মিত্র, আরও আসন গ্রহণ করেন কলকাতা থেকে আগত বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী আন্তর্জাতিক নজরুল গবেষণা কেন্দ্র কলকাতা ইউনিটের সম্পাদীকা কবি শ্রীমতি মাধবী মজুমদার, উপস্থিত ছিলেন মাধবী মজুমদারের স্বামী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত শ্রী রতন মজুমদার।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে আসন গ্রহণ করেন সিলেটের বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক কবি লাভলী চৌধুরী, বিশ্ব কবিমঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কবি মীর লিয়াকত, বিশ্ব কবিমঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক কবি পুলক কান্তি ধর, কবি অসিত দেব। কবিদের এই আড্ডায় মঞ্চে উপবিষ্ট কবিদের ফুল দিয়ে বরণ করেন তরুণ কবি সামীমা আরা সুমী ও শাহাদাত শুভ।

কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আড্ডা, একে একে বৈশাখী কবিতা পাঠ ও শুভেচ্ছা বক্তৃতা নিয়ে আসেন সিলেটের কবিরা, কবি হরিপদ চন্দ, কবি হিমাংশু চন্দ্র দাস, কবি মাধব রায়, কবি মাসুদা সিদ্দিকা রুহি, কবি চন্দ্র শেখর দেব, কবি সামীমা আরা সুমী।

সিলেট সাহিত্য পরিষদের সভাপতি পুলিন রায়, কবি পুলক কান্তি ধর, কবি লাভলী চৌধুরী, কবি মীর লিয়াকত, কবি অসিত দেব সকলেই নিজ নিজ কাব্যগ্রন্থ থেকে কবিতা পাঠ করেন।

বক্তব্য রাখছেন ভারত থেকে আগত বাচিক শিল্পি কবি অঞ্জনা মিত্র।

বাচিক শিল্পী কবি অঞ্জনা মিত্র প্রথমেই সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান, বাঙালির আতিথেয়তায় কমতি নেই, সিলেটে এই প্রথমবার, এখানে না আসলে জানতামই না সিলেট সর্ম্পকে। তিনি তার নিজের কাব্যগ্রন্থ থেকে কয়েকটি কবিতা আবৃত্তি করেন, পাঠ করেন ভারতীয় কবিদের কবিতা, মুগ্ধ আমন্ত্রিত কবিবৃন্দ।

সংগীত শিল্পী কবি মাধবী মজুমদার তার বক্তব্যের শুরুতেই বিশিষ্ট লোকজশিল্পি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কালিকা প্রসাদ ভট্টাচার্যের গাওয়া শেষ গান 'আমি তোমারি তোমারি তোমারি নাম গাই, আমার নাম গাও তুমি' গানটি পরিবেশন করেন, পরে তাহার আত্মার শান্তি কামনার জন্য এক মিনিটি নিরবতা পালন করা হয়।

তিনি তার বক্তৃতায় বলেন, এপার বাংলা আর ওপার বাংলা আমরা কখনই আলাদা নই, আমাদের সাহিত্য এক, আমরা সবাই মানুষ, পার্থক্য এটাই আপনার বাংলাদেশী আর আমরা ভারতীয়। সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া আমাদের সাহিত্যকে কখনই আলাদা করতে পারবে না। যার জন্য কাঁটাতার পেরিয়ে আজ আমরা সিলেটে। আমাদের ভাষা এক আমরা অভিন্ন। পরে তিনি তার নিজের কাব্যগ্রন্থ থেকে কয়েকটি কবিতা পাঠ করেন।

আগত কবিদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন কবি পুলক কান্তি ধর, রোটারিয়ান ড. আর কে ধর, কবি লাভলী চৌধুরী এবং বৈশাখী অভিনন্দন ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

বক্তব্য রাখছেন রোটারিয়ান ড. আর কে ধর।

পরিশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি তার সমাপনী বক্তৃতায় বলেন, 'এই আড্ডা শেষ নয়, আমার কাছে মনে হচ্ছে আড্ডা শুরু হচ্ছে। এপার বাংলা- ওপার বাংলার মেলবন্ধন আমাকে আজ করেছে অনুপ্রাণিত। আজ আমরা কেউ এক দেশের নাগরিক নই, আমরা আজ বিশ্ব নাগরিক।'

সবাইকে আবারও নববর্ষের শুভেচ্ছা, ধন্যবাদ আমন্ত্রিত অতিথিদের।