কালো টাকা ও পেশীশক্তিমুক্ত নির্বাচন সম্ভব নয়

হারিছ খান
Published : 16 July 2011, 04:34 AM
Updated : 16 July 2011, 04:34 AM

বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় কালো টাকা ও পেশীশক্তিমুক্ত নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা। তিনি বলেন, গোটা সমাজ ব্যবস্থা গতকাল কলুষিত। এ অবস্থায় কালো টাকা ও পেশীশক্তি মুক্ত নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, এসব অপকর্ম ঠেকানোর জন্য আগে জনগণকেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কালো টাকার মালিক, পেশিশক্তি সম্পন্ন দুর্নীতিবাজ প্রার্থীদেরকে ছুঁড়ে ফেলতে হবে জনগণকেই।

তিনি অবশ্য বলেননি নির্বাচনগুলো কী মাত্রায় ত্রুটিযুক্ত? সে যাই হোক কোন নির্বাচনই ত্রুটি মুক্ত নয়। নির্বাচন গণতন্ত্রের ভিত। সেই ভিতই যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, তাহলে গণতন্ত্র পুরোপুরি ত্রুটিযুক্ত এবং একটি দুর্বল ব্যবস্থা।

আধুনিক গণতন্ত্রের তিনটি মূল উপাদান রয়েছে। গণতন্ত্র জনগণের, জনগণের জন্য এবং জনগণ দ্বারা। জনগণ দ্বারা গণতন্ত্রের অর্থ জনগণই তাদের প্রতিনিধিত্ব নির্বাচন করবে। তাও কী সম্ভব? ত্রুটিযুক্ত নির্বাচন, দলীয় রাজনীতি, ভোট কেনাবেচার কৃষ্টির কারণে নির্বাচিত ব্যক্তি জনপ্রতিনিধিত্ব করে না। কোন অসচ্ছল ব্যক্তি যত জনপ্রিয়ই হোক না কেন নির্বাচনে জয়ী হবার সম্ভাবনা তার নেই। তাহলে জনগণের দ্বারা উপাদানটি আর রইল না।

বিশ্বময় জনগণের গণতন্ত্র থেকে জনগণ সর্বদাই বঞ্চিত। নির্বাচিত ক্ষমতাবানরাই শুধু লাভবান হয়েছে। সুতরাং গণতন্ত্র সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে না, গণতন্ত্র শুধুই ক্ষমতাবানদের ভাগ্য পরিবর্তন করে থাকে। তাহলে গণতন্ত্র জনগণের জন্য উক্তিটিও রইল না জনগণের জন্য, জনগণের দ্বারা- এই দুটি উপাদান না থাকলে জনগণের গণতন্ত্র উক্তিটিও বাদ পড়ে যায়। সুতরাং জনগণের নামে যে তন্ত্র তা ব্যক্তিতন্ত্রে রূপান্তরিত হয়ে যায়।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল অরোরা অবসরের পর সংসদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, 'একজন সাংসদের হাত উঠানামা করা আর টেবিলে আঘাত দিয়ে উল্লাস করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।'

আজ পৃথিবীর সব দেশই দুর্নীতি দ্বারা আক্রান্ত। এর একমাত্র কারণ গণতন্ত্র। গণতন্ত্র ক্ষমতাবান লোক সৃষ্টি করে যারা দুর্নীতি করে থাকে। গণতন্ত্র থেকে সৃষ্ট অর্থনীতি অবিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত। গণতন্ত্র সততায় বিশ্বাস করে না গণতন্ত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিশ্বাসী। আর এই সংখ্যার মারপ্যাঁচ হলো অবিশ্বাস আর অসততার মূল। অথচ আল্লাহ পাক-এর বিধান হলো খিলাফত। খিলাফত ব্যবস্থার মূলে রয়েছে সততা।
পৃথিবীতে খিলাফতের ন্যায় সফল কোন ব্যবস্থা আর আসেনি। মানুষ রচিত গণতন্ত্র কী করে খিলাফতের সমকক্ষ হতে পারে? খিলাফত অর্থই শত মানুষের শাসন আর গণতন্ত্র অর্থ হলো পেশী শক্তির বিজয়। খিলাফতের সুশাসন পৃথিবীতে জান্নাতের সুখ এনে দিয়েছিল অথচ মানুষ নির্বোধের মত গণতন্ত্র অনুসরণ করে। খিলাফত বাদ দিয়ে গণতন্ত্র গ্রহণ করা পাগলামি ছাড়া কিছু না।