আজ ১লা বৈশাখ,১৪১৯।
বাংলা নতুন বর্ষ।
সারাদেশ আজ মেতেছে উত্সবের আমেজে…
চলছে মেলা, শোভাযাত্রা,পানতা-ইলিশ খাওয়া।
মিডিয়ার কল্যাণে সারা দেশের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সরাসরি প্রচারিত হচ্ছে…
ছেলে-মেয়ে,কিশোর-কিশোরী,তরুণ-তরুণী বৈশাখী সাজে মেতে উঠেছে আনন্দে…।
ভালই লাগে…
কিন্তু এই ভাল লাগাটা মন খারাপে পরিনত হয়,যখন বুঝতে পারি, এ সবই আসলে আমাদের উৎসব পালনের নামে ভন্ডামি।
আমাদের তরুণ-তরুণী,মা-বোনেররা আজকের "বৈশাখী ফ্যান্টাসি" পালন শেষে সন্ধ্যা কিংবা রাতেই টেলিভিশন খুলে দেখতে বসে যাবেন হিন্দি চ্যানেলের কোন রঙ্গিন সিরিয়াল কিংবা অন্য কোন অনুষ্ঠান।
একদিনের বাঙালিপনা ছেড়ে আগামীকাল থেকে "ইয়ো ম্যান"টাইপের অদ্ভুত জীবে পরিনত হবে…।
আমরা ভুলে যাব পাতার বাঁশি,তাল-পাতার পাখা,বিন্নি ধানের খই,সাজ,চরকি,নাগরদোলা,বাতাসা,মিষ্টি-সন্দেশ,গজা,বেলের শরবত,মাটির পুতুল ইত্যাদি…।
কাল থেকে আমরা বারগার,পিৎজা,চিকেন ফ্রাই,কোল্ড-ড্রিঙ্কস,সিশা,বিয়ার,গাজা,ফেন্সিডিল,ইয়াবা এসব নিয়ে মেতে উঠবো আবার…।
এসব দেখে ভীষন লজ্জা হয়…আমাদের সাংষ্কৃতিক ঐতিহ্য এতটা গভীরে থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র আমাদের উদাসীনতা, ভণ্ডামি ,বিজাতীয় ভাষা বা সংষ্কৃতির এ প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণেই আমরা শেকড়হীন হয়ে যাচ্ছি,ক্রমশ-ই…। আমাদের লোকজ সাংসতিক অনুষ্ঠানগুলো স্পন্সরের নামে মালটিন্যাশ্নাল কিংবা বড় কোন করপোরেট হাউজের পন্যের মোড়কে পরিবেশিত হচ্ছে,এখানে যতটা না মায়া,তার থেকে বেশি মায়াকান্না আর বানিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি…।
আমাদের তরুণ-তরুণীরা,সন্তানরা যেভাবে বিজাতীয় সাংষ্কৃতিক বলয়ে বেড়ে উঠছে, আজ থেকে ৫০ বছর পরের কথা একটু চিন্তা করুন,তখন এই প্রিয় বাংলাদেশে বাংলা নববর্ষ উযযাপনের এই অকৃর্তিমতা থাকবে কিনা…??? এখন-ই সময়,নিজের ঐতিহ্যকে,শেকড়কে জানার,জানানোর,তাকে আঁকড়ে ধরার, তা না হলে এই সব ঐতিহ্য একদিন কেবল রুপকথার গল্পের মত শোনাবে।
সময় গেলে কিন্তু সাধন হয়না…।