অনেক কম বয়সী মেয়েকে বিয়ে করার প্রবনতা এক রকমের অস্বাভাবিকতা। যদিও বর্তমানে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

হাসান
Published : 23 May 2011, 04:32 PM
Updated : 23 May 2011, 04:32 PM

আমার পরিচিত এক এএসপি ৩৩ বছর বয়সে বিয়ে করলেন ক্লাশ টেনের তথা ১৪ কি ১৫ বছরের এক মেয়েকে। আমি ভাইয়াটিকে জিজ্ঞাস করেছিলাম এইটা কি করলেন? তিনি বললেন ঠিকই আছে, টার্গেট এরকমই ছিল। এখন আপনারাই বলেন পুরুষ মানুষের সন্তান ৫৫/৬০+ বছর পর্যন্তও হতে পারে। আর নারীদের ক্ষেত্রে সাধারণত ৩৫-৪০। এখন এই দম্পত্তি যদি পুরোপুরি শরিয়তের ওপর চলেন তাহলে তাদের সন্তান-সন্ততি ১৫-২০ জনও হতে পারে!! আর এক্ষেত্রে শিশু বয়সে বিয়ে হওয়া মেয়েটারই বা কি অবস্থা হতে পারে? এই ১৪ বছরের শিশুটির সাথে ভদ্রলোকটির কি রকম সমন্বয় হতে পারে? আজকাল অধিকাংশ শিক্ষিত যুবকদের টার্গেট অল্পবয়সী তথা বড়জোড় ইন্টার কিংবা অনার্স ফার্স্ট ইয়ারের (মানে ইন্টারই) কোন মেয়েকে বিয়ে করা (যদিও পরে পস্তায়)। তাহলে উচ্চশিক্ষিত মেয়েদের বিয়ের কি উপায় হবে? একজন মেয়ে গ্রাজুয়েশন করা মানে বিয়ের বিষয়টি কঠিন হয়ে গেল। আর মাস্টার্স পাশ করল মানে পাত্র পক্ষের কাছে বয়স বেড়ে গিয়ে বিয়ের দরজাটাই অনেকটা বন্ধ হয়ে গেল!! আজকাল উচ্চশিক্ষিত ও তথাকথিত বয়স বেশি হওয়া বেকার মেয়েকে পাত্রস্থ করাটা যে অভিভাবকদের পক্ষে কত ভয়াবহ রকমের কঠিন এবং যন্ত্রণাদায়ক তা ভুক্তভোগী মাত্রই অবগত। গ্রাজুয়েশন অথবা মাস্টার্স করা ২৪-২৫ বছরের অনেক ভালো মেয়ে আছেন। আর বিয়ের ক্ষেত্রে মানুষ উভয় পক্ষের যথাসম্ভব খোঁজখবর নিয়েই করে। সেক্ষেত্রে যে মেয়েটি ২৪/২৫ বছর বয়স পর্যন্ত ভালো সে ভালো থাকার সম্ভাবনাই অধিক। অন্যদিকে স্কুল -কলেজের অপ্রাপ্ত বয়সের বালিকাটির ব্যাপারে ভবিষ্যৎ বানী করা কঠিন। কারণ তার খারাপ হওয়ার সুযোগ এখনও পড়ে আছে। হতে পারে মেয়েটি সুযোগের অভাবে ভাল। এছাড়া অনেক ব্যবধানের তথা অল্পবয়সী মেয়ে বিয়ে করার সমস্যা ভুক্তভোগী মাত্রই জানে। বিয়ে মানুষের প্রোডাক্টিভিটি/ উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়। তবে ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা শেষ করেই বিয়ে করা ভালো। পড়াশুনা ও কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখা গেলে ভাল। আর বিয়ের একটা শর্ত কিন্তু আর্থিকভাবে সক্ষম হওয়া। সেটা না হলে প্রয়োজনে রোজা রাখার কথা বলা হয়েছে। আর্থিকভাবে সক্ষম হওয়ার বয়সটাও কিন্তু খুব কম নয়। বিশেষ করে শিক্ষিত শ্রেণীর লেখাপড়া শেষ করে কর্মসংস্থান। ইসলামের বিধান অনুযায়ী বিয়ের ক্ষেত্রে বর-কনের অন্যান্য বিষয়ের ভারসাম্যের মত বয়সেরও সমতা থাকা উচিত। অস্বাভাবিক কোন কিছু ইসলামে নেই। ইসলাম ন্যাচারাল। ইসলামে অস্বাভাবিক কোন কিছু আছে বলে মনে হলে বুঝতে হবে সেটা আমাদের বুঝার ভুল। আর পড়াশুনা শেষ করে ২৫-৩০ এর মধ্যে বিয়ে করলে পুরোপুরি শরিয়তের ওপর থাকলেও ৩-৪ জনের বেশি সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা কম। অনেক কম বয়সী মেয়েকে বিয়ে করার প্রবনতা এক রকমের অসুস্থতা। যদিও বর্তমানে এ রোগটি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আর মনে রাখা দরকার নি:সন্দেহে মহান আল্লাহর বিধানই শাশ্বত।

তারাচাঁদ লিখেছেন : একজন নারী যখন গর্ভধারণ করে, তখন ভ্রূণ থাকে তার তলপেটে । ভ্রূণটি যখন আস্তে আস্তে বড় হয়, তখন নয়া মেহমানকে স্থান দেবার জন্য কটি দেশের হাড়কে অনেক ছাড় (Relaxation of ligaments and interarticulaar joints ) দিতে হয় । ১৮ বৎসর বয়সে অনেক হাড়ই পূর্ণভাবে গঠিত হয় না । অপূর্ণ হাড় ছাড় দিবে কেমন করে ? তাই ১৮ বৎসর বয়সের আগে কোন নারীর গর্ভধারণ করা উচিত নয় ।

প্রসুতিবিদ্যা ( Obstetrics ) বলে, নারীর জন্য ১ম সন্তান ধারণের আদর্শ বয়স ১৮ থেকে ২৩ বৎসর। ৩৫ বৎসর বয়সের পর সন্তান ধারণ করতে বারণ করা হয় । ৩৫ বৎসর বয়সের পর গর্ভজাত নারীর সন্তানরা বেশ কিছু জেনেটিক ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।

এএসপি সাহেব বয়সে ৩৩ হলে কি হবে, তার বুদ্ধি এখনও পরিপক্ক হয় নাই । ( নাকি তিনি ইতোমধ্যে বিভিন্ন বয়সের অনেক নারীকে পরীক্ষা করে ফেলেছেন ? কেন যেন সন্দেহ হয় ! ) এত অল্প বয়সের মেয়ে পুতুল খেলা ছাড়া আর কোন কাজে লাগবে আমি বুঝতে পারছি না ।

বাংলাদেশে বাল্য বিয়ের ভয়াবহ চিত্র:

আর যৌতুককে অবশ্যই না বলুন। কারন যৌতুকের কারনে দেশে স্বামীগৃহে নির্যাতনে নারী মৃত্যুর সংখ্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

যৌতুক ও অন্যান্য কারণে স্বামীগৃহে নির্যাতনের পর জীবন দিতে হয়েছে এপ্রিল মাসে ৩৪ জন, ফেব্রুয়ারী মাসে ২৩ জন, জানুয়ারি মাসে ১৬ জন, ডিসেম্বর মাসে ২৭ জন, নভেম্বর মাসে ৩৫ ও অক্টোবর মাসে ১৮ নারীকে জীবন দিতে হয় ।