বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী দেশ

হাসান
Published : 25 May 2011, 03:44 PM
Updated : 25 May 2011, 03:44 PM

সিআইএ (CIA) ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক এবং ইউকিপিডিয়া মাথাপিছু জিডিপি অনুযায়ী এ বছরে শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকা তৈরি করেছে। জিডিপি বা গ্রোস ডোমেসটিক প্রোডাক্ট হল একটি দেশের উৎপাদিত সকল পণ্যের মূল্যমান। আর মাথাপিছু জিডিপি হলো ওই মূল্যমান যা গড়ে একজন ব্যক্তি উৎপাদন করে। নিচে মাথাপিছু আয়ের ক্রম অনুযায়ী দেশগুলোর পরিচিতি এবং যে কারণগুলো তাদেরকে শীর্ষ ধনী দেশ হতে সাহায্য করেছে তা তুলে ধরা হলো:

১· লিচটেনস্টাইনঃ
মাথাপিছুঃ ১২২,১০০ মর্কিন ডলার (২০০৭ সালে রেকর্ডকৃত) ।
রাজধানীঃ ভ্যাদুজ
জনসংখ্যাঃ ৩৫,০০২। জুলাই, ২০১০ পর্যন্ত (বিশ্বে ২১০তম)
ভৌগলিক অবস্থানঃ সেন্ট্রাল ইউরোপ
আয়তনঃ ১৬০ বর্গকিলোমিটার (বিশ্বে ২১৮তম)
ভাষাঃ জার্মান
স্বাধীনতা লাভঃ ১৮৬৬ সালে
আয়ের উৎসঃ ক্ষুদ্র আয়তন ও সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের অদিকারী হলেও দেশটি তার যথাযথ ব্যবহার ও শিল্পের বিকাশের ফলে বিশ্বের এক নম্বর ধনী দেশে পরিণত হয়েছে। EFTA ও EU-এর সদস্য হিসেবে দেশটি অবাদ বাণিজ্যের সুযোগের সদ্বব্যবহার করে আজকের অবস্থানে আসতে সক্ষম হয়েছে। মূলত শিষ্প-কারখানা ও অবাধ বাণিজ্যই দেশটির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রধান হাতিয়ার।

২· কাতারঃ
মাথাপিছুঃ ১২১,৭০০ মার্কিন ডলার (২০০৯ সালে রেকর্ডকৃত)
রাজধানীঃ দোহা।
অবস্থানঃ মধ্যপ্রাচ্য।
স্বাধীনতা লাভঃ ১৯৭১, ব্রিটেন থেকে।
ভাষাঃ আরবি
জনসংখ্যাঃ ৮,৪০, ৯২৬ (বর্তমান জন্মহার হিসেবে জুলাই, ২০১০-এ হবে)
আয়ের উৎসঃ এক সময় কাতার ইসলামি গরিব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল। ১৯৪০ সালে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কারের পর থেকে উন্নতি করতে থাকে। ২০০৯ সালে কাতারকে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে গণ্য করা হয়। এ দেশে কোনো আয়কর উত্তোলন করা হয় না। এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে কম কর আদায়কারী দেশ।

৩· লুক্সেমবার্গঃ

মাথাপিছুঃ ৭৮,০০০ মার্কিন ডলার। (২০০৯ সালে রেকর্ডকৃত)।
রাজধানীঃ লুঙ্মেবাগ
জনসংখ্যাঃ ৪,৯৭,৫৩৮ (বর্তমান জন্মহার হিসেবে জুলাই, ২০১০-এ হবে)
অবস্থানঃ পশ্চিম ইউরোপ
আয়তনঃ ২,৫৮৬ বর্গকিলোমিটার। (বিশ্বে ১৭৮তম )
ভাষাঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ফরাসি ভাষায় পাঠদান করা হয়। হাইস্কুলে পৌঁছার আগে শিখে নেয় জার্মান ভাষা। আর হাই স্কুলে পড়ালে যার প্রধান ভাষা ইংরেজি। তা ছাড়াও তাদের নিজস্ব ভাষা আছে Letzebuergesch. তবে স্থানীয় পত্রিকাগুলো সব ভাষায় তাদের প্রতিবেদন করে থাকে।
স্বাধীনতাঃ ৯ জুন, ১৮১৫।
আয়ের উৎসঃ এই ছোট্ট রাষ্ট্রটিতে যেন ঠাসাঠাসি করে ২৫০টির বেশি ব্যাংক আছে। এখানকার ব্যাংকিং ব্যবস্থা ইউরোপীয় দেশগুলের মধ্যে সেরা। এমনকি বিশ্বের মধ্যে সেরা। এ দেশের জনগণ খুব বেশি স্মার্ট।

৪· বারমুডাঃ
মাথাপিছুঃ ৬৯,৯০০ মার্কিন ডলার ( ২০০৪ সালে রেকর্ডকৃত)
অবস্থানঃ উত্তর আমেরিকা
রাজধানীঃ সেন্ট জোনস
জনসংখ্যাঃ ৬৮,২৬৮ (বিশ্বে ২০১তম)
ভাষাঃ ইংরেজি, পাটোয়া
আয়তনঃ ৫৪ বর্গকিলোমিটার (বিশ্বে ২৩১তম)
স্বাধীনতা লাভঃ ১ নভেম্বর, ১৯৮১ ।
আয়ের উৎসঃ মূলত আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও পর্যটন খাত দেশটির প্রধান আয়ের উৎস।

৫· নরওয়েঃ

মাথাপিছু আয়ঃ ৫৮,৬০০ মার্কিন ডলার (২০০৯ সালে রেকর্ডকৃত)
আয়তনঃ ৩,২৩,৮০২ বর্গকিলোমিটার (বিশ্বে ৬৭তম)
রাজধানীঃ অসলো
স্বাধীনতা লাভঃ ১৯০৫ সালে।
ভাষাঃ নরওয়েজীয়
লোকসংখ্যাঃ ৪৬,৭৬,৩০৫ (বিশ্বে ১১৮তম)
অবস্থানঃ উত্তর পশ্চিম ইউরোপ
আয়ের উৎসঃ ইউরোপের গুটিকতক উন্নত দেশের মধ্যে অন্যতম। তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস প্রধান সম্পদ। একমাত্র ২০০৬ সালেই রাশিয়া এবং সৌদি-আরব নরওয়ের চেয়ে বেশি তেল রফতানি করেছিল। দেশটি ই·ইউ-এর সদস্যপদ লাভ করেনি।

৬· জর্জিয়া
মাথাপিছুঃ ৫৭,০০০ মার্কিন ডলার (২০০৫ সালে রেকর্ডকৃত)
অবস্থানঃ পশ্চিম ইউরোপ
স্বাধীনতা লাভঃ ৯ এপ্রিল, ১৯৯১ ।
রাজধানীঃ তিবলিসি
লোকসংখ্যাঃ ৯১,৮১২ (বিশ্বে ১৯৫তম)
ভাষাঃ জর্জিয়ান, রম্নশ।
মুদ্রাঃ লারি
আয়ের উৎসঃ দেশটির আয়ের প্রধান উৎসের মধ্যে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন, কৃষি এবং পর্যটন।

৭· কুয়েতঃ
মাথাপিছু আয়ঃ ৫৪,১০০ মার্কিন ডলার
রাজধানীঃ কুয়েত সিটি
স্বাধীনতা লাভঃ ১৯৬১ সালে, ব্রিটেনের কাছ থেকে।
অবস্থানঃ মধ্যপ্রাচ্য, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশি রাষ্ট্র সৌদি আরব এবং ইরাক
জনসংখ্যাঃ ২,৭৯,১৩২(নন -ন্যাশনালসহ ১২,৯১,৩৫৪ জন) । (বিশ্বে ১৩৯তম)
আয়তনঃ ১৭,৮১৮ বর্গকিলোমিটার (বিশ্বে ১৫৭তম)
ভাষাঃ আরবি
মুদ্রাঃ দিনার
আয়ের উৎসঃ প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলন ও রফতানি থেকে আয় করে। তেল মজুতকারী দেশগুলোর মধ্যে কুয়েত পঞ্চম। বিশ্বের যত তেল মজুত আছে তার শতকরা ১০ ভাগ আছে কুয়েতে। এটি করবিহীন একটি দেশ। সরকারি রাজস্বের শতকরা ৮৫ ভাগ মাসে তেল রফতানি থেকে। মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিতীয় মুক্ত অর্থনীতির দেশ হিসেবে ওই অঞ্চলের দূত বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির অন্যতম কুয়েতের অর্থনীতি।

৮· সিঙ্গাপুরঃ
মাথাপিছু আয়ঃ ৫০,৩০০ মার্কিন ডলার (২০০৯ সালে রেকর্ডকৃত)
ভাষাঃ চীনা, তামিল ও ইংরেজি
জনসংখ্যাঃ ৪৭,০১,০৬৯ (বিশ্বে ১১৭তম)
রাজধানীঃ সিঙ্গাপুর সিটি।
অবস্থানঃ দণি-পূর্ব এশিয়া
স্বাধীনতা লাভঃ ১৯৬৫ ব্রিটেন থেকে
আয়তনঃ ৬৯৭ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট এশিয়ার ক্ষুদ্র একটি দেশ। ৬৩টি দ্বীপ ও সামান্য স্থলভূমি নিয়ে দেশটি তার অবস্থানকে সুদৃঢ় করেছে)।
আয়ের উৎসঃ দ্রুত বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির কারনে দেশটি এশিয়ান টাইগারের অন্যতম সদস্য। এশিয়ান টাইগারের অন্যতম দেশ-হংকং দণি কোরিয়ার ও তাইওয়ান। সিঙ্গাপুর বন্দর বিশ্বের ব্যস্ততম বন্দরগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের চতুর্থতম বাণিজ্য বিনিময় কেন্দ্র এখানে অবস্থিত।

৯· ব্রুনাই
মাথাপিছু আয়ঃ ৫০১০০ মার্কিন ডলার (২০০৯ সালে রেকর্ডকৃত)
অবস্থানঃ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া)
রাজধানীঃ বন্দর সেরী বেগাওয়ান
ভাষাঃ মালয়ী, ইংরেজি, চীনা।
মুদ্রাঃ ডলার
স্বাধীনতা লাভঃ ১৯৮৪ সালে।
আয়ের উৎসঃ অশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস বিদেশে রপ্তানি করে দেশটি ৯০ শতাংশ আয়ের সুযোগ ঘটে। এছাড়াও আছে কৃষি, ব্যাংকিং ও পর্যটন খাত।

১০· ফ্যারোই দ্বীপপূঞ্জ
মাথাপিছু আয়ঃ ৪৮,২০০ মার্কিন ডলার (২০০৮ সালে রেকর্ডকৃত)
অবস্থানঃ উত্তর ইউরোপে। নরওয়েন সাগর ও উত্তর অটলান্টিক সাগরের কতিপয় দ্বীপ নিয়ে এর অবস্থান।
রাজধানীঃ টোরসাভেন।
ভাষাঃ ফোরেজ, ডেনিশ।
জনসংখ্যাঃ ৪৯,০৫৭ (বিশ্বে ২০৮তম)
আয়ের উৎসঃ কৃষি, খনিজ সম্পদ ও পর্যটন ।

(উল্লেখ্য, এর সমস্ত তথ্য (CIA) অনুযায়ী এবং জনসংখ্যা বর্তমান জন্ম ও মৃত্যুহার হিসেবে ১ জুলাই, ২০১০ পর্যন্ত ধরা হয়েছে)।