১৪ বছর পর ছেংগার চর পৌর যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের মৃদু বাতাস

এস এম শারফুদ্দিন শাওন
Published : 22 Nov 2016, 02:36 AM
Updated : 22 Nov 2016, 02:36 AM

চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগার চর পৌর যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের দিন আগামী ২৬ তারিখ রোজ শনিবার নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্মেলনের আওয়াজ শুনে একদিকে খুশির আমেজ অন্যদিকে বেদনার শোক সমুদ্র। এত দীর্ঘ সময়ের পর কাউন্সিল হলে বেদনার শোক সমুদ্র হবে কেন? হবে তো উচ্ছ্বাস, হবে তো কৌতহল, হবে তো উচ্ছল, হবে তো ঢামাঢোল। কিন্তু আমি খুবই কাছে থেকে ঝড়ে পরতে দেখেছিলাম দু-দুই জন উজ্জ্বল নক্ষত্রের অকালে পতন।

পরম শ্রদ্ধা আর অকৃতিম ভালবাসায় স্মরণ করছি নব গঠিত ছেংগারচর পৌর যুবলীগের প্রথম আহবায়ক পরে সভাপতি মরহুম ফারুক খান চিশতি, আরো স্মরণ করছি প্রথমে যুগ্ম-আহ্বায়ক পরে সফল সাধারণ সম্পাদক, পরবর্তীতে সভাপতি মরহুম রেজাউল করিম হুমায়ুন কমিশনারকে। সৃষ্টিকর্তার কাছে ফরিয়াদ আল্লাহ যেন তাদের বেহেস্ত নসিব করেন।

আমি অভাগারও ঐ আহবায়ক কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়কের দায়িত্ব পালনের সৌভাগ্য হয়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক পরে সভাপতি নির্বাচিত হই। হাভাতের অভাবে রাজনৈতিক দৌড়ে বেশী দূর আগাতে পারিনি। কিন্তু মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা গুণপোকার কামরে এলাকায় গিয়ে বার বার ক্ষত-বিক্ষত ছেংগার চর বাজারে। সব শেষ সেনা বাহিনীর পৈশাচিকতার শিকার হলাম তাও আবার আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার এক মাস পর অর্থাৎ উপজেলা নির্বাচনের পরের দিন। সেই থোকে এলাকার কোন রাজনীতির সাথে তেমন কোন সম্পর্ক রাখি নাই। হয়ত এটা আমার অপরাধ। তবে সাইবার যুদ্ধে বা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পিছিয়ে নেই। তবে পদ পদবী চাই না, চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন পুরনের অভিষ্ট লক্ষ্যে কাজ করতে, চাই জাতির জনকের জন্ম শত বার্ষিকী আর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করতে, চাই শেখ হাসিনাকে তথা বাংলাদেশটাকে হাস্যোজ্জল দেখতে। চাই তলা বিহীন ঝুড়ি নয়, ঝুড়ি ভর্তি অর্থনীতি। সে লক্ষে কাজ করতে হলে চাই নিঃস্বার্থ মেধাবী দেশ প্রেমিক সমাজ সচেতন নাগরিক বা কর্মী বাহিনী।

নেশাগ্রস্থ, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পারে যুব সমাজকে ধ্বংস করতে। তাদের দ্বারা সমাজ ও রাষ্ট্র তথা লীগ বা দল শান্তির পায়রা উড়াতে পারে না। তারা সমাজের কীট, রাষ্ট্রের কীট এমনকি রাজনৈতিক দলেরও কীট। তাই নেতা নির্বাচনে সব হিসাব কষে নির্বাচন করা জরুরী বলে আমি মনে করি।

নিজের মধ্যে আবদ্ধ যে মানুষ সে অন্যের মঙ্গল সাধন করতে পারেনা। যারা বিস্তৃত উদার নিজের সুখের কথা না ভেবে সমাজের কথা ভাবে, দেশের কথা ভাবে, আঞ্চলিক রাজনীতি নয় কেন্দ্রিয় রাজনীতির কথা ভাবে, যুগে যুগে তারাই সবচেয়ে বেশী নির্যাতিত,বঞ্চিত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় ঐ নীতিবান বা আদর্শবান নেতার মৃত্যুর পর রেখে যাওয়া ছেলে মেয়েরা ন্যুনতম মর্যদাটুকুও পায় না। তাই তো আজ নীতি হীনতার প্রতিযোগীতা। এ প্রতিযোগিতায় যদিও সর্বনাশ ডেকে আনে তবুও জুলুম করাই যেন স্বভাবে পরিণত।

মতলব উত্তরের রাজনৈতিক টার্নিং পয়েন্ট খ্যাত ছেংগার চর পৌরসভা বহুবিধ কারণে অতীব গুরুত্বপুর্ণ একটি স্থান। রাজনীতির উত্থান পতনও হয় এই স্থান থেকে। তাই সতর্কতার সাথে এখানকার নেতা নির্বাচন করা সব দলের জন্য অপরিহার্য। তবে আওয়ামীলীগের জন্য তেমন উদ্বেগ বা উৎকন্ঠার কোন কারণ দেখতে পাচ্ছি না। কারণ আওয়ামীলীগের নেতা নির্বাচক হচ্ছেন প্রায় ২৫ বছর যিনি সফলতার সাথে ঢাকা মহানগরে সাংগঠনিক থেকে আন্দোলন সংগ্রামের একমাত্র কারিগড়, রাজপথ কাপানো অগ্নিশাল, যার উজ্জল জ্যোতিময়তায় আলোকিত মতলব উত্তর দক্ষিণ সহ পুরো বাংলাদেশ সেই কিংবদন্তি এক নাম মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম মাননীয় (ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী)। যিনি ইতিমধ্যে মাদক মুক্ত মতলব গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তার নির্বাচনী এলাকায় ও রাজনৈতিক টার্নিং পয়েন্টে মাদকাসক্ত বা ইয়াবা ব্যবসায়ীরা কোন সংগঠনে স্থান পেতে পারে না।

দলীয় লোকদের মধ্যে ভালবাসার খুবই ঘাটতি পরিলক্ষিত। এটা শুভ লক্ষণ নহে। পরিশেষে বলব, শুধু ছেংগার চর নয় গোটা দেশের রাজনীতিতে আমুল পরবর্তন আনতে হবে। সৎ এবং সাহসী, যোগ্য মেধাবী সর্বোপরি দলের প্রতি আনুগত্যশীল দেশ প্রেমিক নেতা তৈরি করতে হবে। যাতে করে আগামী নির্বাচন তথা মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ভিশন পুরণে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।