গামকার আচমকা নির্দেশে দুর্ভোগে বিদেশগামীরা

এস এম শারফুদ্দিন শাওন
Published : 11 Dec 2016, 01:55 AM
Updated : 11 Dec 2016, 01:55 AM

গতকাল সৌদি আরব গমন ইচ্ছুক কিছু সংখ্যক নারী কর্মী ও পুরুষ কর্মীদের আর্তনাদ ও আর্তচিৎকারে ভারী হয়ে উঠেছিল আকাশ জমিন তরুলতা। অভিশাপ দিচ্ছিল গামকার পরিচালক পর্ষদের সকল সদস্যদের। তখন জানতে চাইলাম তাদের সমস্যার কথা। তখন আজিবর নামে একজন কর্মী জানালো তার ফিট কার্ড কেন পাবে না? কি তাদের অপরাধ জানতে চাইলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ তার প্রশ্নের জবাব দিতে পারে নাই। এমনেই হাজারো আজিবরদের মেডিকেল ফিটকার্ড বঞ্চিত হয়ে তাদের স্বপ্নের দেশে যাওয়ার পথে মেঘাচ্ছন্নতায় ঢেকে দিয়েছে তাদের স্বপ্নময় পৃথিবীটাকে।

সর্বস্ব ত্যাগ করে জীবনটাকে একটু সুখের আবেশে রাঙানোর জন্য মাতৃভূমি বাংলার মমতা ত্যাগ করে, কেউ সুদে, কেউ শেষ সম্বল বিক্রি করে পারি জমায় বিদেশের পথে। আর সে পথে কাঁটা হয়ে ক্ষত-বিক্ষত করছে গামকা (মধ্যপ্রাচ্যে গমনেচ্ছুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টারগুলোর সমন্বয়কারী সংস্থা হল গালফ কো–অপারেশন কাউন্সিল অ্যাপ্রুভড মেডিকেল সেন্টারস অ্যাসোসিয়েশন- গামকা) নামক সিন্ডিকেট। তাই সাধারণ মানুষগুলো গা-ম-কা র নাম দিয়েছে গরীব মারার কারখানা। গামকা সিন্ডিকেটের খবর বিভিন্ন সময় সংবাদের শিরোনামও হয়েছে। কিন্তু প্রতিকার তেমন একটা হয়নি।

কথায় কথায় আন-ফিট আবার টাকা দিলে সবই ফিট যেন ফিট আনফিটের মগের মুল্লুক! কেউ নেই এই হত দরিদ্র মানুষগুলোর কথা শোনার। কেউ নেই তাদের চোখের পানি মোছার। ওরা যা ইচ্ছা তা করে যাবে আর অন্য দিকে দেশের সচেতন মহল চুপ করে থাকতে পারে না। জবাব তোমাকে দিতেই হবে কেন ২৪ বা ২৫ তারিখের নিম্নগামী সময়ের ফিট যাত্রীদের পুনরায় মেডিকেল করতে হবে? আর করলেও খরচের ৫৩০০ টাকা যাত্রীদের কেন দিতে হবে? জানতে ইচ্ছে হয় ঐ গরীব মারার কারখানা বিনা নোটিশে ফিট কার্ড দেওয়া বন্ধ বা পুনঃ মেডিকেলের অধিকার তাকে কে দিয়েছে? আগাম নোটিশ ব্যতীত এ ধরনের হটকারী সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। শাস্তি দাবী করছি সিন্ডিকেট মাহাজনী কারবারীদের বিরুদ্ধে। গরীবের রক্ত চুষে খেয়ে খেয়ে আলিসান-গাড়ি-বাড়ি বিত্তবৈভের মালিক হয়ে যা খুশি তা করার এখতিয়ার সরকার তোমাদের দেয় নাই। সময় থাকতে বদলে যাও। বদলে গিয়ে রক্ষা পাও।


প্রতিবাদের কন্ঠ যখন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে লণ্ড ভণ্ড হয়ে যাবে তোদের সিন্ডিকেট আর রক্তচোষা ব্যবসা। গতকাল কোন এক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এক প্রাইভেট হাসপাতালে জোর করে হিজরা বানানো হয়। এ সব হাসপাতাল নামের কসাইখানা থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিতে একজনই আছেন সে আমাদের রত্ন গর্ব জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই পারবেন গামকার বর্তমান খামখেয়ালির সমুচিত শিক্ষা দিতে, পারবেন সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে জন হয়রানি বন্ধ করে রেমিটেন্স প্রেরণকারী এই দুঃখিত মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে।

নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে, ঢাকাস্থ সৌদি অ্যাম্বাসি নতুন নিয়ম করে গামকাকে নির্দেশ দিয়েছে নেট পেমেন্ট ব্যতীত হেলথ কার্ড প্রদান করতে হবে। কারণ গামকার অনিয়মের ফলে হাজার হাজার বিদেশগামী কর্মীদের ফিট কার্ড মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় ঐ ভোক্তা নিরীহ মানুষগুলোকে। এই মানুষগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, বিদেশ প্রেরণ করতে হবে, তা হলেই আমাদের অর্থনীতির চাকা আরো মজবুত হবে। সরকারের ভিশন পুরণে সহায়ক হবে এই পরিশ্রমী কর্মীরা।

পরিশেষে গামকার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক, খেটে খাওয়া, সর্বস্ব হারা মানুষগুলোর ভোগান্তি দূর হোক, পুনঃ মেডিকেলের ঘোষণা প্রত্যাহার হোক, স্ব স্ব সম্মান বজায় রাখুন নতুবা এর দায় গামকার চেয়ারম্যানকেই নিতে হবে।