ওয়াজেদ জুনিয়রকে জিজ্ঞাসা – তিনটি প্রশ্ন

হাসানুজ্জামান তালুকদার
Published : 28 Oct 2014, 06:17 AM
Updated : 28 Oct 2014, 06:17 AM

আজকে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মুখবইয়ের একটি মুখবন্ধ-বার্তা পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে।

তিনি রাষ্ট্রমণ্ডল সংসদীয় সংঘে স্পীকার শিরিন শারমিনচৌধুরী সভাপতি নির্বাচিত হবার বিষয়ে বলেছেন।
তিনি আন্ত:সংসদীয় ঐক্যে সংসদ সদস্য সাবের চৌধুরী সভাপতি নির্বাচিত হবার বিষয়ে বলেছেন।
তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে বাংলাদেশের সদস্য নির্বাচিত হবার বিষয়ে বলেছেন।
তিনি আন্তর্জাতিক দুরযোগাযোগ ব্যবস্থা ঐক্যের প্রশাসনিক পরিষদে সদস্য হবার বিষয়ে বলেছেন।

তিনি আরো বলেন; "এ সকল সাফল্যের ঘটনায় আমরা সারা বিশ্বের দেশগুলির বহুলাংশের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। এটি বিশ্বে আমাদের অবস্থান ও জনপ্রিয়তার একটি বিশাল স্বীকৃতি। এ স্বীকৃতি ও জনপ্রিয়তা আমরা অর্জন করেছি আমাদের আওয়ামী লীগ সরকার ও দলের সদস্য, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের কঠোর পরিশ্রম ও সাফল্যের মাধ্যমে। আজ বাংলাদেশ বিশ্ব সমাজের এক অতি সম্মানিত ও সদস্য হিসাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, এর মূল কারণ আওয়ামী লীগ সরকার ও প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্জনসমূহ।"

বাংলাদেশের্ এতো এতো সাফল্য সত্যিই আমাদের পুলকিত করে যে ফলতঃ বটে, কিন্তু বাহ্যতঃ নয় এমন অথচ কার্ষকর ক্ষমতাসম্পন্ন পদ্ধতিতে স্বর্ন কেনা বেচার ব্যবসার মতো।

বিষয়টা একটু খুলেই বলি।

একদা জনৈক স্বর্ন ব্যবসায়ী আমাকে জানালো; আমি স্বর্ন কেনাবেচার ব্যবসা করতে চাই কিনা। এতে প্রচুর লাভ। পদ্ধতিটা এমন যে, আমি  এজেন্টকে টাকা দিবো, উনি আমার নামে স্বল্প মুল্যে স্বর্ন কিনবেন। এবং তাদের উয়েব ঠিকানায় আমার সমস্ত তথ্য আমি দেখতে পারবো। এই ক্রয় হবে সিঙ্গাপুর, আমেরিকা, ইউরোপ বা মালেয়শিয়াতে। এবং স্বর্নের দাম বাড়লে পরে আবার তারা বিক্রী করে দিবে এবং আমাকে আমার লভ্যাংশ দিবে। এভাবে আমি স্বর্ন কেনা বেচার ব্যবসা করতে পারি।
পৃথিবীর বুকে মাথা উচু করে দাড়ানো একটি দেশের নাম বাংলাদেশ।

ইতিহাস এবং সাহিত্যের ভাষায় বলতে গেলে;

জাতির জনক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে জন্ম নেওয়া তার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আজ তারই কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরীর স্বপ্ন দেখছে।

এই স্বপ্ন, এই আশা, এই প্রচেষ্টা, তাদের জোর করে ক্ষমতা গ্রহন (নন্দলাল তো একদা একটা করিল ভীষন পণ) করে এতো এতো প্রচেষ্টা আমরা বৃথা যেতে দিতে পারি না। আমাদেরও এগিয়ে আসা দরকার।

না না না। সোনার বাংলার এই ডিজিটাল তরি কিছুতেই ডুবে যেতে দেবো না।

সাত সাগরের মাঝি কখন তোমার নৌকা মেরামত করা হবে? দেখ ডাকে জাহাজ, আর আমি তোমার ডিঙ্গি নায়ের জন্য বসে থাকবো?

আসলে আমার কথা খুব বেশী কিছু না।

আমার লেখা পড়লে তিনি সজীব অবস্থা থেকে হয়তো হতাশ হয়ে আধমরা হয়ে যাবেন। সজীব সাহেব বলেবেন; আমি আইটি এর উপরে আমেরিকা থেকে উচ্চ উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে বাংলাদেশের সেবা করার পন নিয়ে এসেছি একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরী করে আমেরিকা বানিয়ে দেব আর মি. হাতাশি কি সব ধুলা বালি আর গাড়ি ঘোড়ার প‌্যা প‌্যু শব্দের কথা বলে? এসব ফালতু আর ছোটখাট বিষয়টি এই আইটি ইঞ্জিনিয়ারের ভাবার সময় আছে?

কিন্তু তবুও আমি বলবো; একটি দেশের কোন মহানগর কিংবা রাজধানী এমন হবার নয়।

১. ঢাকা শহরের প্রতিটি (৯৯.৯৯শতাংশ) আবাসিক এলাকা ও অলিগলিসমুহ নোংরা, ধুলাবালি আর গণ্ধে পরিপুর্ন, যান্ত্রিক শব্দ দিন রাত সব সময় পুরো শহরকে গ্রাস করেছে। সারারাত শব্দ আর শব্দ। কতজন মানুষ নিরাপদ আর নি:শব্দ এলাকা এবং/কিংবা সাউন্ডপ্রুফ বাসা বাড়িতে বসবাস করার সুযোগ পান  এবং এই সমস্যা সমুহ সমাধানের বিষয়ে সজীব সাহেব কিছু ভাবছেন কিনা কিংবা এটাকে আমলে নেবার বিষয় মনে করছেন কিনা?

২. সামরিক আবাসিক এবং কর্ম এলাকার ভিতরে যেসব রাজনীতিবিদরা বসবাস করেন তাদের অচিরেই সামরিক এলাকাসমুহ থেকে বের করে আনা উচিত নতুবা তাদের রাজনীতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া বা স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়া উচিত। এই বিষয়ে সজীব ওয়াজেদের সরকার কোন পদক্ষেপ বা ব্যবস্থা নিবে কিনা?

৩. আর সংক্ষেপে আরো একটি  প্রশ্ন করতে চাই যে ক্ষুদ্র ব্যবসার বিষয়ে তার সরকার কিছু করবেন কিনা? যেন বাংলাদেশের অনেক মানুষ অন্তত ক্ষুদ্রপতি হতে পারে।

যাইহোক অনেক কথা লেখার আর ব্যাখ্যা করার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু এতো লিখতে অনেক কষ্ট হয় তাই আপাতত এখানেই ক্ষমা করা হলো।