বেগম খালেদা জিয়া, প্রয়োজনে সাহস দেখান, নিজে স্বেচ্ছা গ্রেফতার বরন করে প্রতিবাদ জানান, কিন্তু ছাপোষা মানুষগুলোর মুখ চেয়ে অন্ততঃ আর হরতালের নির্দেশ দেবেন না!

মওলা ই কুদ্রত
Published : 4 May 2012, 07:12 AM
Updated : 4 May 2012, 07:12 AM

খবরে প্রকাশ, পর পর দুই দিন মিটিং করে বেগম খালেদা জিয়া নেতাদের বার বার ধমকাচ্ছেন কারন যখন উপর্যুপরি হরতালের তালে তালে "আওয়ামী লীগ সরকারকে ফেলে দেবার একটা সম্ভাবনা দেখা দিল", তখন কেন আরো হরতাল ডাকা হলনা! মির্জা ফখরুল বা রিজভীর উত্থান বিএনপির হেভিওয়েট কিন্তু তৃণমূলের সাথে সম্পর্কহীন প্রাক্তন আমলা আর দামী উকিল নেতারা মেনে নিতে পারেন নি, তাই তাঁরা সাইজ হয়েছেন! কেন্দ্রীয় নেতারা কেস খেলেও কেন কেন্দ্রীয় অফিসে যাবেন না তা বেগম জিয়া বুঝতে চান নি, আরো চটেছেন প্রাক্তন অলি আহমেদ আর হান্নান শাহ সহ প্রাক্তন সেনা নায়কদের "কাপুরুষোচিত" ভুমিকায়, কারন তারাও গা ঢাকা দিয়েছেন! এই সুযোগে বিগত দিনের সব স্বৈরাচারী সরকারের শিখণ্ডি মওদুদ সাহেব নাকি আবার বিএনপির সেক্রেটারী জেনারেল হবার আশায় তক্কে তক্কে প্রহর গুনছেন বলে মিডিয়া রিপোর্ট করেছে! এদিকে পালিয়ে টালিয়ে বিএনপির তৃণমূল কর্মীদের কাছে ইমেজ সঙ্কটে পড়েছেন হঠাৎ লাইম লাইটে আসা মির্জা ফখরুল! তাদের বক্তব্য বড় নেতা হবেন, কিন্তু রিস্ক নেবেন না, তাও কি হয়? মির্জা ফখরুলতো ইচ্ছে করলে রিজভী সাহেবের মতোই গ্রেফতার বরন করতে পারতেন, তাতে বিএনপির আন্দোলন চাঙ্গা হত বলে তৃণমূল কর্মীরা অনেকেই মনে করেন! পাশাপাশি আবার যারা এমনটি পালাতে পারেন, সেই সব বড় নেতারা আবার মির্জা ফখরুলের "স্বগুম" হওয়াকে আগে ভাগেই সমর্থন দিচ্ছেন নিজেদের পরবর্তীতে সেফ রাখতে, বলছেন নেতারা গ্রেফতার হলে আন্দোলন পিছিয়ে যাবে!কিন্তু আসলেই কি মির্জা ফখরুল "ইন্ডিসপেন্সিবল" ছিলেন?

এই সুযোগে এখন বিএনপি, তার আগে জাতীয় পার্টি, তার আগে বিএনপি, তার আগে আরো কি কি, সত্যিকারের "ইন্ডিসপেন্সিবল", বাংলাদেশের অ-আওয়ামী রাজনীতিক ঘরানার অন্যতম দড়াবাজ চরিত্র ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বিএনপির ত্রাণ কর্তা হিসেবে আবির্ভুত হতে চাইছেন, তবে তিনি রাজপথ থেকে তার চেম্বারকে বেশী প্রাধান্য দেন, সেখান থেকেই, যদিও এই মুহূর্তে তিনি দু একবার রাজপথে ও কিয়ত কালের জন্যে আসবেন বলেই ধারনা!

ম্যাডাম খালেদা জিয়া এখন ও বুঝতে চাইছেন না যে এই মুহূর্তে কেন, কোন সময়েই বাংলাদেশের জনগন হরতাল চায় না, বরং ইলিয়াস আলীর পরিবারের সাথে দেখা করার মাধ্যমে ও ব্যাবসায়ী নেতাদের তৎপরতায় সরকার ও বিরোধী দলের ভেতর সমঝোতা সম্ভাবনার যে ক্ষীণ আলোটি দেখা যাচ্ছে, ম্যাডাম হয়তো সেই টিকেই গ্রহন করে তাকে আর ও শক্তিশালী করার চেষ্টা করলে পারতেন, কারন প্রধানমন্ত্রী ইলিয়াস আলীর পরিবারের সাথে যখন একবার ডায়ালগে গেছেন এবং তাদের আশ্বস্তও করেছেন, তখন নির্দিষ্ট একটা সময়ের পরে না হলে এই মুহূর্তে বিএনপি যে কোন হরতাল বা জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচী দিলে তা দলটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে মানুষকে ভুল মেসেজ দিতে পারে! এবং তাতে এ নিয়ে দেয়া হরতালে প্রত্যক্ষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ও এইচ এস সি ক্যান্ডিডেটদের কয়েক লক্ষ পরিবারের সাথে সারা দেশবাসীও বিভ্রান্ত হবে, ক্ষতিগ্রস্থ হবে রাজনৈতিক পার্টি হেসেবে বিএনপির ইমেজ!

তাই, ম্যাডাম খালেদা জিয়া, আমাদের এই সব সামান্য যুক্তি ও আমাদের মতো ছা পোষা মানুষদের মুখের দিকে চেয়ে হলেও আপনি আর হরতাল দেবার নির্দেশ দেবেন না দয়া করে! যেহেতু আপ্নারা বলছেন অন্যান্য বিকল্প, যেমন মানব বন্ধন বা লং মার্চে কাজ হচ্ছেনা বলে বাধ্য হয়ে হরতাল দিচ্ছেন, তা হলে যদি সে ধরনের কিছু করাটাই অতীব প্রয়োজনীয় বলে আপনাদের মনে হয়, তবে সাহস নিয়ে সচিবালয় বা মন্ত্রীদের বাড়ী বা অফিস ঘেরাও করার নির্দেশ দেওয়া যায় কিনা ভেবে দেখুন!সাথে জনগণ কে এটাও স্পস্ট করুন আপনাদের সেই না হওয়া "কাজটি" কি? ইলিয়াস আলীর সন্ধান, নাকি আরো বৃহত্তর কিছু?
বেগম খালেদা জিয়া, প্রয়োজনে নিজে স্বেচ্ছা গ্রেফতার বরন করে প্রতিবাদ জানান, কিন্তু ছাপোষা মানুষগুলোর মুখ চেয়ে অন্ততঃ আর হরতালের নির্দেশ দেবেন না!সাধারন মানুষদের দয়া করুন, রেহাই দিন!