শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। রাষ্ট্র ধনী গরিব প্রতিটি নাগরিকের সুশিক্ষা নিশ্চিত করবে- এটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বিশ্বের মাঝে নিজেদের একটি উন্নত জাতি হিসেবে দাড় করাতে হলে সরকারের উচিত হচ্ছে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বাজেট নির্ধারণ করা। যেন জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাড়িয়ে থাকতে পারি যুগের পর যুগ। এ লক্ষ্যে মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্কলারশীপ প্রদান করা, কম খরচে পড়াশোনা নিশ্চিত করা, প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য সম্মানজনক চাকরী নিশ্চিত করার দায়িত্ব কিন্তু রাষ্ট্রের উপরই।
চরম বাস্তবতা হচ্ছে, বাঙালি জাতি হিসেবে দুঃখ আমাদের কপালে লেগেই আছে। যুগ যুগ ধরে আমরা যুলুম-নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছি। আর এখন যুলুমের শিকার হচ্ছি স্বদেশের শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা। যে প্রজন্মের উপর টিকে থাকবে আগামীর দেশ, যারা জাতীর ভভিষ্যৎ, সেই প্রজন্মের মৌলিক অধিকারই আজ বাধার সম্মুখিন নানা দিক থেকে। তারমধ্যে সম্প্রতি যোগ হয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি'র উপর ৭.৫% সরকারি ভ্যাট।
অথচ একটি শিক্ষিত জাতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভ্যাট আরোপের পরিবর্তে সরকারের উচিত ছিলো-
– গরিব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ভাতা প্রদান করা
– মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকসহ সর্বস্তরের পড়াশোনার ব্যায় কমানো।
– অন্যান্য খাতে যে পরিমাণ ভর্তুকি দেয়া হয় তারচেয়ে বেশি শিক্ষাখাতে ভুর্তুকি দেয়া (যদিও কৃত্রিকভাবে আর্থিক সংকট দেখিয়ে ভর্তুকির কথা বলা হয়, বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থের অভাব নেই)
– সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষার্থীদের ফ্রি পড়াশোনার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
– প্রতিটি জেলায় বড় বড় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা (এতে রাজধানীতে চাপ কমবে, শিক্ষার্থীরা যার যার এলাকায় থেকে পড়াশোনা করলে খরচ কমবে, বেপরোয়া চলাফেরা-মাদকতা-চারিত্রিক অবক্ষয় হওয়ার সুযোগ কমে যাবে)।
সূতরাং বেসরকারি শিক্ষার্থীদের উপর ভ্যাট চাপিয়ে দেয়াটা শিক্ষার্থীদের উপর সরকারের যুলুম ছাড়া কিছুই নয়। এটা জাতির জন্য লজ্জাজনক।