বৃক্ষ রোপণ করি সবুজ বাংলাদেশের জন্য

ইখতিয়ার ফাহিম শোয়াইব
Published : 3 May 2011, 04:56 AM
Updated : 3 May 2011, 04:56 AM

'গাছ লাগান দেশ বাঁচান'। যানবাহনের গায়ে ও বন বিভাগের অফিসের দেয়ালে লেখা এ স্লোগানটি প্রায়শ চোখে পড়লেও দেশের সরকারি বনাঞ্চল দিন দিন ন্যাড়া হচ্ছে। তথাপি দেশের মানুষ আগের চেয়ে বৃক্ষ রোপণের ব্যাপারে উৎসাহিত হচ্ছে, যা একটি ইতিবাচক সাফল্য। দেশে জনসংখ্যার তুলনায় আবাদি জমির পরিমাণ এমনিতে কম, তার ওপর প্রতিবছর আবাসনের জন্য আবাদি জমি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। তাই গাছ লাগানোর আগে কী জাতের গাছ লাগালে দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণ সহ প্রাকৃতিক পরিবেশের সহায়ক হবে সে বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার। বর্ষা এলেই গাছ লাগানোর কথা আমরা অনেকেই ভাবি। কেউ বা বসতবাড়ির ভিটায় একটি বনজ, ফলদ কিংবা একটি ঔষধি গাছ অথবা বাণিজ্যিকভাবে বৃক্ষ বাগান অথবা জমির আইলে বা পুকুর পাড়ের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন জাতের কাষ্টল উদ্ভিদ বা ফলদ-ঔষধি গাছ রোপণের ব্যাপারে সচরাচরই আমরা বলাবলি করি। কোন অঞ্চলের আয়তনের পরিবেশগত ভারসাম্যে ২৫% বনভূমি থাকা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে কেবলমাত্র ৭% বনভূমি রয়েছে। তাছাড়া পরিবেশ হানিকর গাছ লাগানো হলে ও সুফলের চেয়ে কুফল বয়ে আনবে। যেমন ইউকেলিপটাসসহ, একাশিয়া, আকাশমণি, মিজ্জাম, শিশু, মেহগনি, রেইনট্রি ইত্যাদি বিদেশি জাতের গাছ আমাদের দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশ উপযোগী নয়। এবং পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এসব গাছ অতিরিক্ত পানি পোষণসহ ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের মাটিকে শুষ্ক, অনুর্বর ও মরুময় করে তোলে। পুকুর পাড়ে লাগালে মাছ চাষ ব্যাহত হওয়াসহ পানিকে দূষিত করে। এসব গাছের নির্গত গ্যাসে বাতাস বিষাক্ত হওয়াতে আশেপাশে দেশীয় ফলের গাছে ফলধরা হ্রাস পাওয়াসহ বন্ধ হয়ে যায়। এ সব গাছে পাখি পর্যন্ত বাসা বাঁধে না। মোদ্দাকথা, সীমিত জায়গাতে শুধু কাঠের হিসেব করে বিদেশি জাতের গাছ লাগানোতে হীতে বিপরীত হয়ে দেখা দিচ্ছে, যার জন্য একদিন আফসোস করতে হবে। তাই প্রস্তাব হচ্ছে_

১. কাঠ এবং ফল একই বৃক্ষ থেকে পাওয়া যাবে এমন দেশীয় জাতের গাছ লাগান, যা আমাদের আবহমান বাংলার চিরন্তন প্রকৃতি ও পরিবেশকে রক্ষা করবে।
২. ভেষজ ঔষধি গাছ লাগান যাতে আমাদের ভেষজ ঔষধ শিল্পের উন্নতি ও প্রসার হবে।
৩. দৃষ্টিনন্দন ও পরিবেশ সহায়ক দেশীয় জাতের কাঠের গাছ লাগান।
৪. বনজ বৃক্ষের উপযুক্ত স্থান বনাঞ্চল তাই বনাঞ্চলে বনজ বৃক্ষ রোপণ করুন, আর সমতলে ফলের গাছ।
৫. জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধির বিষয়টি মাথায় রেখে খাদ্য, পুষ্টি প্রভৃতি চাহিদা মেটানোর বিষয়টিকে কাঠের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন। কারণ আমাদের ভূমি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।