তেলে ভাজা কড়মড়ি…

সোহাগ আল ইমরান
Published : 4 Jan 2012, 06:10 PM
Updated : 4 Jan 2012, 06:10 PM

আমার এতোগুলো কথা,আনন্দ,হিংসা,আকুতি,মিনতি,কান্না সব প্রকাশয় MLM business কে ভিত্তি করে।বাংলাদেশে বহুদিন ধরে MLM ব্যবস্থা চলছে।এখন আরো উন্নত,খাতা-কলম ছাড়ায় এগুলো পরিচালিত হচ্ছে।আধুনিক সমাজের আধুনিকতা দেখানোর জন্য ভাসমান নতিপত্র দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।অনেকে আবার বলে smart business. বর্তমানে e-commerce ভিত্তিক বহু MLM business চলছে।এগুলোর প্রতিপাদ্য বিষয় দুই হাতে product ভরে চোখ ধাধানো রঙে ঢঙে টাকা চালাচালির একটু উন্নতম খেলা।তবে যদি না পারো ধরতে তবে তুমিও তেলে ভাজা কড়মড়ির দলে।তোমাকেও আহারের নিবিড়ে একটু সস মাখিয়ে চেটে পুটে লুটে খাবে।

আমি MLM business এর বিরুদ্ধে লড়তে আসে নি।আমি ঐসব মানুষের বিরুদ্ধে বলতে চায়,যারা মানুষের টাকা চালাচালির খেলায় মেতে অবশেষে ব্যবসার ক্ষতি দেখিয়ে দিনের পর দিন ঐসব সরল মানুষের টাকা আটকে রেখে তাদের চাহিদা পূরনে ব্যস্ত হয়ে পরেছে।

সেদিন একটা MLM company এর অফিসে যেয়ে দেখি দূর দুরান্ত থেকে মানুষ এসেছে তাদের টাকা কবে পাবে জানতে। কিন্তু কেউ জানে না,বলতে পারে না,সে টাকা কবে দেওয়া হবে।শুধু তাদের আশ্বস্থ করে চলেছে,এবং তারা ১০০% নিশ্চিত দিচ্ছে যে তাদের পূর্বের টাকা পেতে তাদেরকে আরো buying করতে হবে।এখন নাকি নতুন আঙ্গিকে business শুরু হচ্ছে। এখন buying করলে আর কোনো ভয় নেই।আচ্ছা বলুনতো এমন কথার ভিত্তি কি?পূর্বের সাথে বর্তমান কথা একটু উন্নত যে,পূর্বে যে সব কোম্পানি চলে গেছে বা টিকে থাকতে পারে নি তাদের সাথে তুলনা করতো।আর বর্তমানে বলে,আমাদের পূর্বের system এ একটু ভুল ছিল,তাই এখন আমরা সে ভুলগুলো সুধরায়ে নতুন ভাবে business করছি।এখন নাকি আর কোনো ভয় নেয়।হাসি পেলো খুব,একটু মুচকে হেসে মনটাকে ঠান্ডা করলাম।আরে ভাই ভয় তো কোনো সময় নেই,তবে এ মানুষগুলোর মুখে কেন এতো প্রশ্ন,কেন বা এদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

সমাধান ছাড়াই একটু একটু করে মানুষেরা ফিরছে কোনো এক অজানা পাড়ে আতঙ্কিত মনে।দুপুরের সময় তখন।অফিসে কর্মরত মানুষের ভিড়ও ধিরে ধিরে কমছে।আমি এক এজেন্টের সাথে নিচে নামলাম বাসায় ফিরার উদ্দেশ্যে।এজেন্ট বললো,চল খেয়ে আসি।ওদের এক লিডার খাওয়াবে।অফিস থেকে একটু দুরে,রিক্সা চড়ে পৌছালাম।অনেক বড় রেস্টুরেন্ট।রেস্টুরেন্ট ঢুকেই অন্যমনস্ক ভাবে ফিরতেই থমকে গেলাম।আমি অবাক বিশ্বয়ে দেখছি তাদের কে।সেখান থেকে নিজের অস্তিত্বটাও কল্পনা করতে বড় ঘৃনা হচ্ছে।তাদের মধ্যে সুন্দরের যে পূজারী,সে সুন্দর দেখে এই যে আমি মুগ্ধ,হয়তো শ্রদ্ধা করিও বটে,তারা কেমন যেন হিংস্র ভঙ্গিতে দুপুরের আহার সম্পন্ন করছে।ঐ মুহুর্তে আমি যেন তাদের অন্তর মহলের ভিতরকার মনুষ্যটা দেখতে পাচ্ছি।ক্ষুধার্ত,হিংস্র,বন্য কুর্তাগুলো তাদের আহার নিবারনের জন্য অন্ধ বিশ্বাসী মনুষ্য প্রানগুলো্র গরম গরম তেলে ভাজা কড়মড় করে খাচ্ছে।সে খাওয়া দেখে দেহ মন ছটফট করতে লাগলো।আমার চারিপাশ যেন ঘুরছে,আমি যেন স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।আর সবাই ছুটছে তো ছুটছে…দেহ মনে উপচে পড়া ঢেউয়ে যেন অপ্রকাশিত কান্না এসে ছটফট করছে।কিন্তু আমি কানতে পারছি না।একটু পরে দেখি আরো কতকজন উপস্থিত।তারাও এই দুপুরে তেলে ভাজা কড়মড় খেতে এসেছে।যেন মনে হলো বলি,,আয় খোকারা,আমার সোনামনিরা,কতদিন তোরা খাস না,আয়,তোদের জন্য দেখ কত কত কড়মড়ি বানিয়েছি।

পরে শুনলাম প্রতিদিনই নাকি এসব রেস্টুরেন্টে তাদের আহার সম্পন্ন হয়।আর business কে উন্নতি করার জন্য নতুন নতুন ফন্দি আটকায়।বেচারা,টাকা, তোর জন্য কিছু মানুষ অসহায় জীবন-যাপন করছে,আবার তোর জন্যি কিছু মানুষ সাহেবি চাল দিচ্ছে।আর ভাবছে কিভাবে আরো ফন্দি বের করা যায়।

এ এমন বিষয় যে লিখলে শেষ হবে না।তাই এবার শেষ করতে চাই।কোম্পানির নামটা বললাম না,বললেও কোনো লাভ নায়।বললে হয়তো মিডিয়াগুলো এগিয়ে আসবে।উঠে পড়ে লাগবে ভাল কোনো ব্যবস্থা সৃষ্টিতে।আর এসব দেখে সরকার কি করবে?জানা কথা……বন্ধ হয়ে যাবে কোম্পানিটি।তাতে লাভ হল কার?জনগনতো আটকে পড়লো আবারো।কোম্পানিটিরও অনেক ক্ষতি হল,আর ক্ষতি হবে জেনেই তো আগে ভাগে বাড়ি,গাড়ি বানিয়ে নিল।এভাবেই চলছে…… সরকার,,কোম্পানিগুলো,,মিডিয়া,,আর সাধারন জনগনের জীবন।