বঙ্গ বর্ন বিদ্বেষ…

সোহাগ আল ইমরান
Published : 20 March 2012, 05:04 AM
Updated : 20 March 2012, 05:04 AM

বঙ্গ। বঙ্গ শব্দটি বর্নের ভিত্তিতে তিন ভাগে ভাগ করলে দেখা যায় ব-ঙ-গ।কিন্তু এই বঙ্গকে আমি সম্পূর্ণভাবে বর্ন দ্বারা বিশ্লেষন করবো না।একে আমি চার ভাগে ভাগ করছি বাস্তব ভিত্তিতে।দক্ষিন বঙ্গ,উত্তর বঙ্গ,পূর্ব বঙ্গ,পশ্চিম বঙ্গ।এখন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে এই চার প্রকার বঙ্গ ছেড়ে দিই।চার বঙ্গ দক্ষিন,উত্তর,পূর্ব ও পশ্চিম ভিত্তিতে সকল ছাত্র ছাত্রীদেরকে ভাগ করে নিল।আর প্রত্যেক পদের সর্বোত্তমরা ক্যাম্পাস অঙ্গনে,বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে জড় হয়ে হুকুমজারি করছে আর প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বীর সৈনিক হতে।

তাহলে তো ভালই তাই না,বাংলাদেশে এমন বঙ্গ তৈরি করা তাহলে সার্থক হল।একটা ঘটনা বলি,এই সার্থক বঙ্গের প্রশিক্ষণ পদচারনা।বঙ্গগুলো তাদের সৈনিকদের এভাবে বলছে,শোন ঐ সব বঙ্গদের কারো সাথে যেন মিশবে না,যখনি দেখবে কোন সমস্যা তখনি জানাবে আমাদের,দরকার হলে পায়ে পা বেধে হাত চালাবে।উত্তম ভাজার মত চাবিয়ে চাবিয়ে খাবে,তারপর পরে আমরাই দেখবো কি করা যায়।এমন প্রশিক্ষন হলে পালোয়ানদের মনের অবস্থা কি হবে বলুন?ঐ সময়ে পালোয়ানদের এমন অবস্থা যে এখনি দাপট দেখিয়ে ফেলে দা,কুড়াল,চা পাতি লয়ে।আর বলে বস কোন চিন্তা করবেন না,সা-লা-রা কাছে আসলে হয় একদম জায়গায় শেষ করুম।

তাহলে সেরকমি একটা ঘটনা শুনুন।একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিক এমনি চার বঙ্গ দ্বারা বিভক্ত।তাদের পালোয়ানদের এমনি সব পরামর্শ দেন তারা।তো একদিন এক বঙ্গের ছেলের সাথে অন্য বঙ্গের ছেলের সাথে গ্যাঞ্জাম বেধে গেল।ঐ সময় একটু মারামারিও বেধে গেল।একে ওপরকে দেখে নেবে বলে সাশিয়ে দিল।বিকাল হল,সন্ধা হল,রাতের প্রথম প্রহর শেষ প্রায়।বিশ্ববিদ্যালয় তখন ঘুমান্ত।ঝি ঝি শব্দের গুঞ্জনে চাঁদের আলো যখন মিটি মিটি করে জ্বলছে আরো আবেগ তাড়িত করে ঠিক এমন সময় মেঘের বজরো ধ্বনি!!!হাল্কা ঘুমের ঘোরে এমনি শোনালো।এবার আরো বেশি।না,না ,এ তো মেঘের শব্দ নয়,হলে'র উপরের ঘর গুলোতে লুকিয়ে রাখা রড বের করার শব্দ।আর চিতকার।হ্যা আকাশ ফাটা চিতকার।একে একে প্রখর হচ্ছে সময়ের চলমানে।এভাবেই কাটলো এক নির্ঘুম ভয়ার্ত রাত।মাসে এক দুইবার এমন ঘটনা ঘটে থাকে হটাত হটাত।সকাল হলে জানতে চায়লাম কি ঘুটেছিল গতকাল রাতে,কেন ঘটেছিল?একই ব্যাচের,একই বিভাগের এক বঙ্গের ছাত্রের পা অন্য এক বঙ্গের ছাত্রের গায়ে পা লেগেছিল।আর ভিন্ন বঙ্গ বলে বেধে গেল প্রথম ধাপে।আর মধ্যরাতে তা পরিপূর্ণ পেল ঐসব আদর্শ গুরু চরনে।

আজব কাহিনী।একই বিভাগের,একই শ্রেনীর,একই বিষয়ে এক সাথেই ক্লাস করে।আর সামান্য গায়ে পা লেগেছে বলে ঝি ঝি পোকাদের থমকিয়ে আবেগ তাড়িত চাঁদকে দমিয়ে মেঘের গর্জনে কি শুদ্ধিতার কাজ করছে দেখ?আহ গর্বে মোর ধন্য হল আমার দেশের জোয়ান ছেলেদের ভালবাসা দেখে।বাবা-মা'র রক্ত ঝড়া পরিশ্রম গুছায়ে রাখে তার জোয়ানের ভান্ডার,আর সৈই জোয়ান নাকি আদর্শের ঠেলায় বাচেঁ না।রক্ত ঝাড়ে রাত বেরাতে।রক্ত ঝড়ার এই হলো প্রকারভেদ।

একটা গল্প পড়েছিলাম অনেক আগে,একটি লোক একটি ছুরি দিয়ে একজন মানুষকে খুন করে ছুরিটা রাস্তার কোনে ফেলে রাখলো।ঐ ছরিটা এক শিশু পেল।আর বাড়িতে গিয়ে ঐ ছুরি দিয়ে মাটি খুড়ে একটা চারা গাছ রোপন করলো।একই ছরি কিন্তু দুইজনের দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতায় দুইভাবে ব্যবহার হলো।এই হলো মানুষের মনের প্রকারভেদ।

তাই বলছি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করুন।মানুষ আমরা অন্তত এক বঙ্গ না হই চার বঙ্গ হলেও দৃষ্টিভঙ্গিকে ভাল কাজে লাগাতে পারি।আমাদের অনুসারিদেরকে ভাল দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা আদর্শ হতে সাহায্য করুন।আপনার ঐ নেতাগিরি সম্মুখ পাড়ে গনগান,পিছনে গেলে দুর্নাম আর দুর্নাম।