১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে শ্রমের উপযুক্ত মূল্য এবং শ্রমিকদের দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজের দাবীতে শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে সেই শ্রমিকদের আন্দোলন থামাতে পুলিশ গুলি চালায় আর এতে অনেক শ্রমিক নিহত হয় । ঔ ঘটনার দিনটি ছিল ১ মে। এই ঘটনার পর ১৯৮৯ সালে প্যারিসে দ্বিতীয় আর্ন্তজাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১ মে দিনটিকে মে দিবস হিসাবে পালনে সিন্ধান্ত হয়। শ্রমিকরা ১ মে কে বিজয় ও সংহতি দিবস হিসাবে পালন করে আসছে। কথা হচ্ছে শ্রমিকরা কাজের মানবিক পরিবেশ ও ৮ ঘন্টা কাজের দাবীতে যে রক্ত ঢেলে দিয়েছিল ১২৫ বছরের পর ও আমরা সেই শ্রমিকদের রক্তের দাম এখনো দিতে পারিনি। একজন শ্রমিক কে দিয়ে আমরা ওভার টাইম ছাড়াই ১২-১৪ ঘন্টা কাজ করাই যা শ্রমিক কর্মচারীরা আই এল ও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ ( যা আমাদের দেশের সরকার অনুসমর্থিত করেছে) অনুযায়ী তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং এখানে যে শ্রমিকদের ৮ ঘন্টা কর্মদিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল তা আজ ভূলুণ্ঠিত। আমরা কাগজে কলমে শুধু শ্রমিকদের কাজ ৮ ঘন্টা রেখেছি বাস্তবে রাখতে পারিনি।
শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ দিতে পারছিনা। শ্রমিকরা আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে যা আমরা বাস্তবেই দেখছি অথচ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর (সংশোধিত ) আওতায় ফ্যাক্টরি অ্যাক্ট ১৯৬৫ এ বলা হয়েছে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। যা শ্রমিকদের দিতে আমরা ব্যর্থ।
আমরা শ্রমিকদের দিয়ে কোটিপতি হবো অতচ শ্রমিকদের বেতন ঠিক মত দেব না তা কি হয় বাংলাদেশে প্রায় অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় শ্রমিকরা বেতন ঠিক মত পায় না আবার পেলে মাসের ১০-১৫ তারিখে পায় যা ধমের সাথে বিরোধিতা কারন আমি একটি হাদিসে পড়ে ছিলাম রাসুল (স:) বলেছেন শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগে তাদের পারিশ্রমিক দিয়ে দাও অথচ আমরা সেই রাসুল এর কথায় শুনছি না।
সরকার বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের কথা মত রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান আজ প্রায় সম্পূর্ন ধংসের দোরগোড়ায় নিয়ে গিয়েছে। যা জন্য বেকার হচ্ছে অনেক শ্রমিক । যার ফলে তাদের দিন কাটছে অনাহারে কণ্ঠের মধ্যে কিন্ত তাদের খোঁজ কেউ না। অথচ এই প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ না করে সঠিক ব্যবস্থাপনা করে লাভের মুখ দেখতে পারতো সরকার। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজের ইচ্ছায় কর্মচারীকে বাদ দেয় এবং নিয়োগ করে যা একজন কর্মচারীকে সব সময় মানসিক চাপের মধ্যে রাখে । তাই এ ব্যপারে সরকারের নজর দেওয়া দরকার।
মে দিবস আসে মে দিবস যায কিন্ত শ্রমিকের ভাগ্যের কোন পরির্তন হয় না। শুধু ঘুরতে থাকে । তাই এবার সবাই মিলে অঙ্গীকার করি শ্রমিকদের রক্তের দাম এবার আমরা দেব। শ্রমিক মালিক সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়ব।
***
ফিচার ছবি: [১: AЯίF | Arifur Rahman এর ফ্লিকার ফটো স্ট্রিম থেকে সংগৃহিত], [২: animeshbain এর ফটোবাকেট থেকে সংগৃহিত]
আসাদুজজেমান বলেছেনঃ
রক্তের দাম!!! শ্রমিকের রক্তের আবার মূল্য আছে নাকি?!?
রক্তের মূল্য চাইতে গেলে তো ওরা তা কিনে নিতে চাইবে!! যেভাবে শ্রমিককে ১০০ টাকায় একদিনের জন্য ওরা কিনে ফেলে!
শ্রমিকেরা সভ্যতার শ্রষ্টা, শ্রমিকেরা আমার সামনের মনিটর নির্মাতা,
আমার স্থাপত্যের রাজমিস্ত্রি, শ্রমিকেরাই শ্রেষ্ঠ, শ্রমিকেরাই বিধাতা,
পয়সা দিয়ে জগৎ কেনা যায় শ্রমিককে না, শ্রমিকের রক্তকে না।
জে জিয়া বলেছেনঃ
ধন্যবাদ । ভাই আসলে আমি শ্রমিকের রক্তের দাম নয় শ্রমিকের পারশ্রমিক দিতে বলিছি । যেন আমরা একজন শ্রমিকের সঠিক মূল্য দেই।
মোঃ মোমিনুল ইসলাম বলেছেনঃ
প্রতি বছর মে দিবস আসে মে দিবস যায় কিন্ত শ্রমিকের ভাগ্যের কোন পরির্তন হয় না ।
মে দিবস আসলে আমরা শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনা সভা মিছিল মিটিং করে থাকি। কিন্তু তাদের ভাগ্যের কোন পরির্তন নিয়ে আমরা ভাবি না। শুধু কাগজে কলমে অধিকার আছে বাস্তবায়ন নাই । হয়তো এভাবে ভাবতে ভাবতে একদিন শ্রমিকের ভাগ্যের পরির্তন হবে।
জে জিয়া বলেছেনঃ
ধন্যবাদ। অবশ্য একদিন পরিবতন হবে।
জাফর ইদ্রিস বলেছেনঃ
হে স্রষ্টা,
তব সখের আঙ্গিনায়
দাঁড়িয়ে শয়তান
চালায় শোষণ আর গায়
সাম্যের গান।
ধরাকে তারা সরা করে
হিংস্র দানব দল
লুটছে নিঃস্বের মুখের গ্রাস
আরও যত সম্বল।
যাদের বক্ষে চরণ ফেলে
আসে নব উত্থান
তাদের রক্ত খাচ্ছে চুষে
সাধু নামের শয়তান।
যাদের দানে সভ্যতার
বাষ্প শকট চলে
নিষ্পেষিত হচ্ছে তারা
ধনকুবের যাতাকলে।
শক্তি দাও শক্তি দাতা
বাহুতে অসুর বল
খুনে লাল হয়ে যাক সব
নর পশুর দল।
জে জিয়া বলেছেনঃ
জাফর ভাই আপনার কে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমার লেখা পড়ে কবিতা লেখার জন্য
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
আমরা শ্রমিকদের প্রাপ্য দিতে পারিনি। কিন্তু শ্রমিকদের মাঝে রাজনীতি ঢুকিয়ে দিয়েছি। ফলাফল হলো শ্রমিক দল, শ্রমিক লীগ!!!
একটু আগে খবরে দেখলাম, বিরোধী দলীয় নেত্রী শ্রমিক দলের আয়োজনে সভায় ভাষণ দিচ্ছেন। যতটুকু শুনলাম, তাতে সরকারের সমালোচনা আছে। শ্রমিক অধিকার নিয়ে কিছু পেলাম না!
কেবল ভাল মজুরীই শ্রমিক অধিকারকে বাস্তবায়ন করে না। শ্রমিকের নূন্যতম জীবনযাত্রার মান রক্ষা করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে তার নিরাপত্তা দিতে হবে। অনেক ফ্যাক্টরির মেশিন চালনায় সামান্য গাফিলতি হলে শ্রমিকের শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। এইসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক। শ্রমিকের স্বাস্থ্য-চিকিৎসাও সুলভে/বিনা পয়সায় রাখার ব্যবস্থা করা জরুরি।
শিশুশ্রমকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করতে হবে। আন্ডারপ্রিভিলেজড স্কুলগুলোতে পড়াশোনার পাশাপাশি হাতের কাজ শেখানোর সুযোগ এবং তা দিয়েই আয়ের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করলে, দ্ররিদ্র পরিবারগুলো তাদের পরিবারের সন্তানটিকে অন্তত পড়ালেখা করানোতে মনোযোগী হবে- ফ্যাক্টরিতে পাঠানোর চেয়ে।
জে জিয়া বলেছেনঃ
আইরিন সুলতানা আপনার দাবী খুবই গুরুতপূণ । আমি এর আপনার সাথে একমত। তবে বিরোধী দলকে শুধু দোষ দিলে হবে না । এর জন্য সরকার দল ও দায়ী।
নাহুয়াল মিথ বলেছেনঃ
গতকাল ১৮ বৈশাখ, ১ মে ছিল সরদার স্যারের ৮৬-তম জন্মদিন। তিনি সকল মুক্তমনা মানুষকে মে দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।