মেধাবিদের স্থান করে দিয়ে রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারা সৃষ্টির নির্ধারক হবে নেটিজেনরা

শরিফুজ্জামান
Published : 23 May 2012, 04:12 PM
Updated : 23 May 2012, 04:12 PM

ছাত্ররাজনীতি থেকে জাতীয় পর্যায়ে আসার মত নেতার অভাব প্রকট। অন্যদিকে ব্যবসায়ী বা আমলা থেকে রাজনীতিতে আগমনের ধারা রয়েছে। কিন্তু গতানুগতিক ধারার বাহিরে উদীয়মান তরুন নেতৃত্ব রাজনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তরুনদের এই আগমন ইতিবাচকভাবে দেখার কারন তারা তাদের লেখাপড়া শেষ করে অবস্থান তৈরী করে রাজনৈতিক অঙ্গনে যুক্ত হয়েছেন। তারা টেন্ডারবাজি বা তদবির করছে না। আবার আমলা বা ব্যবসায়ীও নয় যে আর্থিক বিষয় তাদের কাছে রাজনীতির লক্ষ হবে। বিশ্বায়নের যুগে আমরা সবাই ইন্টারনেট সিটিজেন মানে নেটিজেন। আরব বসন্ত হয়েছে ইন্টারনেটে। সচেতন নেটিজেনরাই নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করে রাজনীতিতেও পরিবর্তন আনতে পারবে। অন্তত প্রথমে বিশ্বাস করতে হবে আমরা পারবো।

ইতিবাচক ধারা তৈরি করবে নেটিজেনরা
—————————————————
সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তারেক রহমানের মত ভবিষ্যত সম্ভাব্য শীর্ষ নেতাদের সহযোগী, অনুসারী বা প্রতিদ্বন্দ্বি, প্রতিপক্ষ হিসাবে গতানুগতিক ছাত্ররাজনীতির ধারার বাহিরে ফজলে নুর তাপস, আন্দালিব পার্থ, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মাহি বি চৌধুরী, তুহিন মালিক, শামা ওবায়েদ, জাকারিয়া সপনরা তাদের একটি ক্লিন ইমেজের অবস্থান তৈরি করেছেন। বাংলাদেশের হতাশার রাজনীতির মাঝেও পজিটিভ চিন্তাধারার লোকেরা আছে বলে আশা আছে। ইন্টারনেটের যুগে শিক্ষিত নতুন প্রজন্ম সচেতন হচ্ছে। তারাই ইতিবাচক ধারা সৃষ্টি করে পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে।

তুহিন মালিক
—————————————————
তুহিন মালিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক করে বৃটেনের অ্যাশেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার আইনে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করেছেন এবং আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। আমার আগের লেখায় একজন পাঠক লিখেছেন তার ডিগ্রী ভুয়া। তথ্যটি সঠিক নয়, ডিসটেন্স রার্নিং বহু বছর ধরে এদেশে প্রচলিত। তুহিন মালিক বড় দুই দলের বাহিরে একজন গ্রহণযোগ্য নেতা। মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। রাজনীতিতে আমরা ভূমিকা রাখতে পারি তা তার পক্ষে জনমত তৈরি করে প্রমান করতে পারি।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত
—————————————————
মোহাম্মদ আলী আরাফাত যুক্তরাষ্ট্র থেকে এমবিএ পাশ করে এখন একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি সুচিন্তা ফাউন্ডেশন নামের একটি সামাজিক সংগঠন অনেক মেধাবী ও ক্লিন ইমেজের তরুনদের শক্তিশালী সংগঠন। ইন্টারনেটে প্রচারনায় আরাফাতের কর্মিবাহিনীর সাফল্য ইর্শনীয়। তার যুক্তিক উপস্থাপনার কারনে প্রায় সব চ্যানেলের টকশো গুলির নিয়মিত জনপ্রিয় বক্তা তিনি। আমি তার বক্তব্যে একমত হই বা না হই তার উপস্থাপিত বক্তব্য এবং সততা সরকারের ভাবমুর্তি ভাল রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

মাহি বি চৌধুরী
—————————————————
মাহি বি চৌধুরী বাবার রাজনৈতিক সুনামের পাশাপাশি তরুনদের মাঝে জনপ্রিয়। তার সততা ও গ্রহনযোগ্যতাও প্রশ্নাতীত। ফেসবুকের কয়েকটি সক্রিয় গ্রুপের মধ্যে তার উদ্যোগে পরিচালিত ব্লু ব্যান্ড গ্রুপ সকল দলের আলোচনার শক্তিশালী প্লাটফরম।

ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস
—————————————————
ফজলে নুর তাপস বংশীয় রাজনৈতিক ঐতিহ্য ছাড়াও বৃটেন থেকে আইন বিষয়ে পড়ে এখন সংসদ সদস্য। ধানমন্ডির উন্নয়নে সে খুব জনপ্রিয়। যুবলীগের সভাপতি হিসাবে তার নাম শোনা যাচ্ছে যা দলকে শক্তিশালী করবে।

আন্দালিব রহমান পার্থ
—————————————————
ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থেরও পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে। লন্ডন থেকে আইন বিষয়ে পড়েছেন। জনপ্রিয় সংসদ সদস্য। টিভি ও সংসদে তার বক্তব্য তাকে যুবসমাজে জনপ্রিয় করে তুলেছে।

গোলাম মাওলা রনি
—————————————————
গোলাম মাওলা রনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হলেও দলের সমালোচনা করতে ভয় পায় নাই। টিভি ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি এবং দিধাহীন বক্তব্য দলীয়ভাবে ভাল অবস্থান দুর্বল করলেও তার জনপ্রিয়তা বেড়েছে।

জাকারিয়া সপন
—————————————————
জাকারিয়া সপন একজন কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ। তথ্য প্রযুক্তি ছাড়াও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে রাজনীতি সচেতন। তার প্রতিষ্ঠিত প্রিয় ব্লগ মত প্রকাশের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনের একজন অগ্র সৈনিক।

শামা ওবায়েদ
—————————————————
শামা ওবায়েদ একজন তথ্য প্রযুক্তিবিদ। ওবায়দুর রহমানের মেয়ে হলেও সে তার নিজের গুণাবলী দিয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করেছে। রাজনীতি যুক্ত হওয়ায় বিএনপি শক্তিশালী হয়েছে। বিএনপির ইন্টারনেট প্রচারণায় নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।

সুষ্ঠু রাজনীতি প্রতিষ্ঠার দায় আমারা এড়াতে পারি না
————————————————————
আমাদের রাজনীতিতে অপসংস্কৃতি রয়েছে, ষড়যন্ত্র রয়েছে, কারও জনপ্রিয়তায় ঈর্শ্বান্বিত হয়ে অপপ্রচারের ধারা আছে। হলুদ সাংবাদিকতা আছে। যুবসমাজকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য যোগ্য মেধাবী ও ক্লিন ইমেজের নেতার সত্যি বড় অভাব। উদীয়মান ছাত্রনেতারা বিএনপি আওয়ামী লীগ যারাই ক্ষমতায় ছিল সেই প্রভাব বিস্তার করে টাকা কামানোতে ব্যস্ত হয়ে নিজেদের ইমেজকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব তৈরির পথকে খুলে দিতে আমাদের দায়িত্ব আছে। টেন্ডার ও তদবিরবাজির লিয়াকত বা পিন্টুর মতো নেতাদের বিপরীত ধারায় তুহিন, পার্থ, মাহি, আরাফাত, সপন, শামা বা তাপসদের মত ব্যক্তিদের জন্য পথ অবশ্যই মসৃন নয়। ভিন্ন ধারার ব্যক্তিবর্গ এবং গতানুগতিক ধারার ক্লিন ইমেজের বাহাদুর বেপারি, শহীদ উদ্দিন এনি, আসাদুজ্জামান রিপন, আল মাহমুদ সপনদের মত ছাত্ররাজনীতির সফল নেতৃত্বদের জন্যও আমাদের করনীয় আছে। তাহলে আমাদের মধ্য থেকেই তাদের মত নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে। এদেশের রাজনীতির জনমতের নিয়ন্ত্রক হোক নেটিজেনরা। সেই অবস্থান তৈরি হচ্ছে এবং হবে যদি আমরা আরও সচেতন হই।