আর কতকাল খেলার পুতুল!

মোস্তাফিজ ফরায়েজী
Published : 25 Jan 2013, 08:10 AM
Updated : 25 Jan 2013, 08:10 AM

ছোট্ট একটি দেশ বাংলাদেশ। এই ছোট্ট দেশে নানা সমস্যা। আর এই সমস্যাগুলো নিয়ে নানা জনের নানা মত। ধর্মের প্রতি এদেশের মানুষ চিরদিনই দুর্বল। তীব্র অনুভূতিপ্রবণ এবং সহানুভূতিশীল এদেশের মানুষ। কোন জঘন্য ব্যাক্তির ফাঁসি হলেও অনেকে তার প্রতি সহানুভূতি জানায়, মামুলি সন্ত্রাসীর লাশ দেখতেও এদেশের সাধারণ মানুষ ভিড় জমায় থানায়। পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তি প্রিয় মানুষেরা বাস করে এদেশে। এই বাংলাদেশীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে যুগে যুগে অনেকে এদেশের মানুষদের নিয়ে খেলা করা হয়েছে এবং খেলা চলছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান যেমন বাংলাদেশকে নিয়ে খেলা করেছে তেমনি ভারতও খেলা করেছে। ১৯৭১ এর আগে পাকিস্তানের রাঘব বোয়ালরা যেমনি খেলা করেছে তেমনি ১৯৭১ সালের পর আমরা দেখেছি বঙ্গবন্ধু কিভাবে এদেশের মানুষদের নিয়ে খেলা করেছে। এর আগে দেখেছি ব্রিটিশদের বঙ্গ-ভঙ্গ নিয়ে খেলা করতে। এর পর দেখেছি জিয়া'র খেলা, তারপর এরশাদ ও বেগম জিয়ার খেলা। এখন চলছে শেখ হাসিনার খেলা।

এদেশের মানুষ যদি শান্তি প্রিয় না হত তবে কি হত এতদিনে? এটা একটা বড় প্রশ্ন।

প্রশ্নের উত্তর খুবই সহজ। আজ আমরা হরতাল দেখতাম না। তেলের দাম অযথা বৃদ্ধি হত না। দেশের রাস্তাগুলো ভালো হত। দেশের সব বিভাগের ভিতর সড়ক যোগাযোগ থাকতো। এবং ইত্যাদি ইত্যাদি।

এর কারণ এগুলোর সমাধান অনেক আগেই হয়ে যেত।

তাহলে এদেশের মানুষের শান্ততাই কি শেষ অবধি কাল হয়ে দাঁড়ালো। হয়তো তাই হবে।

স্বাধীনতার কথায় আমরা যদি আসি তাহলে বলতেই হবে বাংলাদেশের মানুষ অন্য দেশের মানুষ থেকে অনেক স্বাধীন। এখানে আপনি স্বাধীনভাবে ধর্ম চর্চা করতে পারবেন কেউ আপনাকে বাঁধা দিবে না অথবা নিষেধ করবে না বরং আপনার সাথে ধর্ম উৎসব পালন করবে। অথবা আপনি যদি একজন সন্ত্রাসী হতে চান তবে এদেশে আছে অবাধ স্বাধীনতা। কোন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ থাকলেই আপনি যত অপকর্মই করেন না কেনো আপনার কিছুই হবে না। সুদ-ঘুষ-দুর্নীতি করার স্বাধীনতা যেমন এখানে আছে, ভালো হয়ে থাকার স্বাধীনতাও এখানে আছে।

এখন দেখার বিষয় এই শান্তিপ্রিয় অসাম্প্রদায়িক মানুষেরা তাদের অধিকার সমূহ কিভাবে পায়। এমনিতেই পেয়ে যাবে নাকি বাঁকা পথে আসবে এই অধিকারসমূহ জানা নেই, তবে জানা আছে অধিকার আদায় করে নিতে হয়। হয়তো বাঙ্গালীরা একদিন তাদের অধিকার আদায় করে নিবে। শুধুমাত্র সময় গুনার পালা আমাদের, কারণ সচেতনতা এখন অতি দ্রুত বিস্তৃত হচ্ছে।

এই অকালে সকালের প্রত্যাশায় শুধু কি আমরা প্রহরই গুনে যাব?