কম্পিউটার অপারেটরদের প্রত্যাশা ও দাবি

মোঃ জিয়াউল হক
Published : 16 Nov 2011, 05:16 PM
Updated : 16 Nov 2011, 05:16 PM

বাংলাদেশ জুডিসিয়াল কম্পিউটার অপারেটরস্ এসোসিয়েশন (বাজুকঅএ) এর প্রত্যাশা ও দাবীঃ

চাকুরী ক্ষেত্রে পরস্পর সহযোগিতা, বেতন বৈষম্য দূরীকরণ, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞানের আধুনিকায়নের মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তির সুফল সকলের মাঝে বিকশিত করার লক্ষ্যে-বাংলাদেশ জুডিসিয়াল কম্পিউটার অপারেটরস্ এসোসিয়েশন (বাজুকঅএ) নামে শুধুমাত্র বিচার বিভাগে কর্মরত কম্পিউটার অপারেটরদেরকে নিয়ে একটি সংগঠন ২০১০ সালে আত্মপ্রকাশ করে। পরবর্তীতে চলতি সালের ১৭ মার্চ তারিখ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরস্পর-পরস্পরের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান, প্রযুক্তির নানাবিধ ব্যবহার নিয়ে ওয়েব কনফারেন্স, একে অপরের সহযোগিতাসহ কর্মক্ষেত্রে কম্পিউটার পেশাজীবিদের ভাগ্যউন্নয়নে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে- ই-মেইল, ওয়েবসাইটসহ ফেসবুকে নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে পোষ্ট প্রকাশিত হয়ে আসছে। যেখানে পরস্পর যেমনিভাবে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞানের বিকাশ ঘটাতে পারছে, তেমনি উপকৃত হচ্ছে অন্যরাও।

প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বর্তমানে নিমিষেই বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের খবর নেয়া যায়। কোথায় কি ঘটছে তা সরাসরি দেখা যায় ঘরে বসেই। আর এই প্রযুক্তির সাথে জড়িত পেশাজীবিদের যে কি করুণ দশা তা সরেজমিনে খতিয়ে না দেখলে বিশ্বাস হবে না কারো। বিচার বিভাগ পৃথক হবার পর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসী এবং মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসীতে প্রতিটি জেলার সিজেএম কোর্টে ৬৪টি এবং সিএমএম কোর্টে ৪টিসহ মোট ৬৮টি কম্পিউটার অপারেটর পদ সৃষ্টি করা হয়। সেই মোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু এই প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অধিকারী টেকনিক্যাল পারসনকে ব্যবহার করা হচ্ছে অ-প্রাসঙ্গিক ও পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন সব কাজে। যেখানে দেখা যায়- কেউ আছে পেশকারের দায়িত্বে, কেউবা নাজির, আবার কোথাও হিসাব রক্ষক। তারা যেমনিভাবে তাদের মেধাকে প্রয়োগ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি অবমূল্যায়িত হচ্ছে উক্ত পেশার দায়িত্ববোধের। ক্রিমিনাল রুলস্ এন্ড অর্ডার (সিআরও) বইটিতে কম্পিউটার অপারেটরদের দায়িত্ব সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা না থাকায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও সিআরও'তে ১৯৮নং পৃষ্ঠার ৪৪৮ রুলস অনুযায়ী প্রত্যেক কর্মচারীর ডিউটি কার্ড করার বিষয়ে সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়া জটিলতা রয়েছে কর্মস্থল নির্ধারনেও। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিচার শাখা-৪ এর ২৯/০৪/২০০৮ইং তারিখের ৬৬০ নং স্মারকে জুডিসিয়াল/ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসীর বিভিন্ন পর্যায়ের পদ সৃজন ও সরকারের মঞ্জুরী জ্ঞাপন পত্রে প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে সেরেস্তার প্রধান এবং কম্পিউটার অপারেটরদেরকে সেরেস্তায় দেখানো আছে। কিন্তু অধিকাংশ ম্যাজিস্ট্রেসীতে প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদ না থাকায় কম্পিউটার অপারেটরগণ সেরেস্তোর দায়িত্ব পালন করতে পারে, যাহা যুক্তিযুক্তও বটে। বাস্তবিক পক্ষে তা না করে- কাউকে রাখা হয়েছে নেজারত শাখায়, কাউকে জে.এম শাখায়, কাউকে বা নকল শাখায়, আবার কেউ আছে বিভিন্ন আদালতের অধীনে। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে শৃঙ্খলা, হ্রাস পাচ্ছে কর্মস্পৃহা, সৃষ্টি হচ্ছে কর্মচারীদের মধ্যে অন্তঃদন্দের। যাহা কর্মচারী শৃঙ্খলাবোধের পরিপন্থী। একজন কম্পিউটার অপারেটর যেখানে চলমান বিশ্বের প্রযুক্তিকে ছড়িয়ে দিবে তাদের দায়িত্ব ও সেবার মাধ্যমে। সেখানে তারা নিজের দায়িত্বটুকুই পালন করতে পারছে না।

বিশ্ব যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে, যেখানে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে আমারা সেখানে যুগ যুগ ধরে এনালগ পদ্ধতিকেই আকড়ে ধরে আছি। আমাদের মধ্যে যেন কোন অনুভুতি নাই। আমরা অনুভুতিহীন হয়ে গেছি। আমরা চিন্তা শক্তি হারিয়ে ফেলছি। কোন বিষয়টিকে প্রধান্য দিতে হবে সেটাই ভুলে যাচ্ছি। দেশে যেখানে লাখ লাখ তরুণ প্রজন্ম ডিজিটাল শব্দটিকে নিয়ে কৌতুহলী সেখানে দেশের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের লোকজন দৃষ্টিহীন হয়ে আছে। কোন প্রকার ভ্রক্ষেপই করছে না, অথচ এই বিশাল তরুণ সমুদ্র একদিন দেশের নেতৃত্বে আসবে।

বর্তমান বিশ্ব কম্পিউটার প্রযুক্তি নির্ভর। আর এই প্রযুক্তির ছোয়া জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিলে লক্ষ লক্ষ বেকার ও তরুন প্রজন্ম যেমনিভাবে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে তেমনিভাবে দেশ হবে উৎপাদনশীল ও আত্মনির্ভরশীল ঘটবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন জাতি হবে স্বনির্ভর, আত্মপ্রত্যয়ী, দেশ হবে ডিজিটাল বদলে যাবে দেশের প্রেক্ষাপট, বাস্তব রূপ লাভ করবে বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপরেখা। যাকে আমরা বলছি ডিজিটালাইজেশন বা ডিজিটাল বাংলাদেশ। সেজন্য প্রথমেই যেটি জরুরী দক্ষ প্রযুক্তিবিদ তৈরি করে তাদেরকে লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদান করা এবং ইত্যেমধ্যে এই প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত অর্থাৎ সরকারী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত কম্পিউটার পেশাজীবীদের মূল্যায়ন করাও একান্ত আবশ্যক। কম্পিউটার প্রযুক্তি নিয়ে অতীতেও বিভিন্ন সরকারের সময় কম্পিউটারাইজেশন, ই-কমার্স, ই-গভর্নেন্স ইত্যাদি মুখরোচক স্লোগান শোনা গেছে। কিন্তু বাস্তবে তার কিছুই প্রতিফলিত হয়নি। কম্পিউটারের মতো একটি আধুনিক প্রযুক্তি এখনও ব্যবহৃত হচ্ছে শুধুমাত্র টাইপ মেশিনের বিকল্প হিসেবে, আবার কোথাও পরে আছে দক্ষ ব্যবহারকারীর অভাবে, নষ্ট হচ্ছে প্রযুক্তির এই মূল্যবাদ সম্পদ। আমাদের দেশে কম্পিউটারের দক্ষতা সম্পন্ন লোকের যথেষ্ট অভার রয়েছে। আর যে স্বল্পসংখ্যক কম্পিউটার পেশাজীবী সরকারি দপ্তরে কর্মরত আছেন তাদের অবস্থা খুবই করুণ। স্নাতক / স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি করে তারা হতাশার অতলে নিমজ্জিত। পিয়ন, টাইপিস্ট, স্টেনোটাইপিষ্ট, স্টেনোগ্রাফারসহ সকল শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ থাকলেও কম্পিউটার অপারেটদের পদোন্নতির কোন সুযোগ নেই, আর নেই যুগোপযোগি যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, যেখানে এই প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে। কিন্তু আপডেট হচ্ছেনা এই পেশার সাথে জড়িত কম্পিউটার পেশাজীবীদের দক্ষতা এবং পরিবর্তন হয়নি তাদের ভাগ্যের।

১৯৮৫ সালে প্রণীত THE COMPUTER PERSONNEL (GOVERNMENT AND LOCAL AUTHORITIES) RECRUITMENT RULES, 1985 প্রণীত হলেও এই বিধিমালা সবক্ষেত্রে অনুসরণ করা হচ্ছে না। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে/ প্রতিষ্ঠানে এই পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন গ্রেডে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে বৈষম্য। তাছাড়া এই বিধিমালাকেও আপডেট করা হচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে। আবার এই বিধি অনুযায়ী কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ করা হলেও সব দপ্তরে পরবর্তী পদোন্নতিযোগ্য সিনিয়র কম্পিউটার অপারেটর (১ম শ্রেণী) পদ না থাকায় কম্পিউটার অপারেটরগণ দীর্ঘদিন যাবৎ একই পদে থেকে যেমনি বঞ্চিত হচ্ছে পদোন্নতি থেকে তেমনি অবহেলিত হচ্ছে সর্বক্ষেত্রে, এমনকি সমমান কিংবা অনেক নিম্নপদে কর্মরতরাও ইনক্রিমেন্ট, সিলেকশন গ্রেড ও পদোন্নতি পেয়ে সিওদেরকে ডিঙিয়ে অনেক বেশি বেতন আহরণ করছে। সেইক্ষেত্রে কম্পিউটার অপারেটরগণ শুধু একই পদে থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সকল সুযোগ সুবিধা থেকে। এর ফলে দীর্ঘদিন এমনকি ১৮-২০ বছর ধরে একই পদে কর্মরত থেকে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়ে ধীরে ধীরে তাদের কর্মস্পৃহা হ্রাস পাচ্ছে। তাই সকল সরকারি দপ্তর / পরিদপ্তরে সিনিয়র কম্পিউটর অপারেটর / সহকারী প্রোগ্রামার / প্রোগ্রামারের পদ সৃষ্টি করতে না পারলে কর্মরত কম্পিউটার অপারেটরদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিদ্যমান অন্যান্য সাধারণ পদে পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করা একান্ত প্রয়োজন। এ ছাড়াও টাইপিস্ট, স্টেনো-টাইপিষ্ট ও স্টেনোগ্রাফারগণ টেকনিক্যাল পারসন হিসেবে অগ্রীম ইনক্রিমেন্ট ও সিলেকশন গ্রেড পেয়ে থাকেন। কিন্তু কম্পিউটার অপারেটর অপারেটরগণ কম্পিউটারের মতো একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে দক্ষতাসম্পন্ন হয়েও তারা এ ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের নেই কোন অগ্রীম ইনক্রিমেন্ট, নেই সিলেকশন গ্রেডের ব্যবস্থাও। এইচএসসি / সমমান শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, নার্স ও ব্লক সুপারভাইজারগণ (বর্তমানে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা) দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তার পদমর্যাদা ও বেতনস্কেল লাভ করলেও স্নাতক / স্নাতকোত্তর কম্পিউটার অপারেটরগণ আজও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। এ ছাড়াও কম্পিউটার অপারেটর পদটি তৃতীয় শ্রেণীর কিন্তু ১৯৮৫ সালে প্রণীত কম্পিউটার পারসোনালদের নিয়োগবিধি অনুযায়ী পদোন্নতিযোগ্য পদ হলো সিনিয়র কম্পিউটর অপারেটর বা সহকারী প্রোগ্রামার, যা দ্বিতীয় ও প্রথম শ্রেণির মর্যাদাসম্পন্ন। তাই কম্পিউটার অপারেটর পদটি তৃতীয় শ্রেণী থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত করা আবশ্যক। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে সরকারি দপ্তরে কর্মরত কম্পিউটার পেশাজীবীদের সক্রিয় ও আন্তরিক অংশগ্রহণ অবশ্যই প্রয়োজন আর তা কম্পিউটার পেশাজীবীদের বঞ্চিত রেখে কখনোই সম্ভব নয়।

অতি সম্প্রতি আইসিটি অফিসার্স ফোরাম গঠিত হওয়ায় বাংলাদেশ জুডিসিয়াল কম্পিটার অপারেটরস্ এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রাণ ঢালা অভিনন্দন এবং সেই সাথে পৃথক আইসিটি ক্যাডার ও বেতন স্কেলের ঘোষনার দাবীতে সরকারকে প্রস্তাব দেয়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।

আইসিটি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগের অধীনে আইসিটি অধিদপ্তর গঠনের প্রক্রিয়া দেশে ই-গর্ভনেন্স চালুর প্রথম পদক্ষেপ। আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি আইসিটি অধিদপ্তরে সরকারের কেন্দ্র থেকে মাঠপর্যায় পর্যন্ত আইসিটি সংক্রান্ত সকল পদসমূহে একটি সুস্পষ্ট চেইন রয়েছে। এতে করে তথ্যপ্রযুক্তিতে কর্মরত সর্বস্থরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের তাদের মেধা বিকাশ এবং মানোন্নয়নে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন। বস্তুতঃ ই-গর্ভনেন্স প্রক্রিয়া কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের টিমওয়ার্ক। তাই আইসিটি সংক্রান্ত অফিসার এবং স্টাফ একে অপরের পরিপূরক।

আইসিটি অফিসার্স ফোরাম এর সদস্যদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিশেষভাবে উল্লেখ করছি যে, আইসিটি সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী সকল পদই ১৯৮৫ সালের কম্পিউটার পার্সোনেল গেজেট অনুযায়ী নিয়োগকৃত। উর্দ্ধতন পদ সমূহ নীচের পদগুলোরই ধারাবাহিকতা। উক্ত গেজেট অনুযায়ী ৩য় শ্রেণীর কম্পিউটার অপারেটর পদটি প্রথম শ্রেণীর এসিসটেন্ট প্রোগ্রামার পদটির ফিডার পদ বিধায় যৌক্তিক কারণেই কম্পিউটার অপারেটর পদটি উল্লেখিত বিধি ছাড়া সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগকৃত ২য় শ্রেণীর কম্পিউটার অপারেটর পদের সাথে সংগতি রেখে একই শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন হওয়ায় ১৯৮৫ সালের কম্পিউটার পার্সোনেল গেজেট অনুযায়ী নিয়োগকৃত কম্পিটার অপারেটর পদটিও দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত হওয়া যুক্তিযুক্ত এবং বৈষম্য নিরসনে জন্য সমতাবিধানের লক্ষ্যে আমরা এর দাবীদার।

১৯৮৫ সালের গেজেটটি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, বাংলাদেশে কম্পিউটারের সংখ্যাধিক্য হয়েছে ১৯৯৩ সালের পরে। কিন্তু সার্ভিস রুল তৈরি করেছে ১৯৮৫ সালে। এটি কিন্তু বর্তমান উন্নয়নশীল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে যুগোপযোগীও নয়। ১৯৮৫ সালের গেজেটে যে বেতন স্কেল দেওয়া আছে তা ১৯৮৫ সালের পে-স্কেলের নয়। ফলে প্রশ্ন উঠেছে আসলে গেজেটটি কি ঠিক আছে? প্রনিধানযোগ্য যে, এ বিধিতে ৩য় শ্রেণীর কম্পিউটার অপারেটর পদ হতে পদোন্নতি পেয়ে ১ম শ্রেণীর এসিসটেন্ট প্রোগ্রামার পদে নিয়োগ হবে। সংগত কারণেই কি সরকারের অন্যান্য বিভাগে ২য় শ্রেণীর পদ থেকে ১ম শ্রেণীর পদ পদোন্নতি হবার বিষয়টির এখানে ব্যত্যয় ঘটেনি ? তাছাড়া ২য় শ্রেণীর শিক্ষাগত যোগ্যতায় পদটি তৃতীয় শ্রেণী, এটা কি সুস্পষ্ট বৈষম্য এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয়?

পরিশেষে, সরকারী দপ্তরসমূহে কর্মরত কম্পিউটর অপারেটর পদবি পরিবর্তন করে এ পদের নাম 'আইসিটি অফিসার' করে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীতকরণ ও টেকনিক্যাল পারসন হিসেবে অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট ও সিলেকশন গ্রেড প্রদান এবং পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টিসহ যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সংস্থাপন মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, আইসিটি অফিসার্স ফোরাম সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

দাবীসমূহঃ
১. কম্পিউটার অপারেটর পদটিকে ২য় শ্রেণীর মর্যাদা প্রদান;
২. ব্লক পদের পরিবর্তে ১০০% পদোন্নতির বিধান করা;
৩. জুডিসিয়াল ভাতা (৩০%) প্রদান করা;
৪. স্পেশাল ইনক্রিমেন্ট ও সিলেকশন গ্রেড প্রদান;
৫. পদ পরিবর্তন করে আইসিটি অফিসার করা;
৬. একই শিক্ষাগত যোগ্যতায় সর্বোচ্চ সুবিধা সমভাবে সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করার

ক্ষেত্রে সারাদেশে অভিন্ন নিয়োগ নীতিমালা (মন্ত্রণালয় থেকে মাঠ পর্যায়) প্রণয়ন ও সংশোধন করা