মা তুমি রেণু-মা

মুহম্মদ নূরুল হুদামুহম্মদ নূরুল হুদা
Published : 15 August 2020, 07:10 AM
Updated : 15 August 2020, 07:10 AM


মা তুমি রেণু-মা

মা তুমি রেণু-মা, গণবাঙালির বুকে মুখ রেখে দিব্য ত্রসরেণু,
জাতিবাঙালির ঘরে ঘরে, মা তুমি, আলোকের মধুরেণ রেণু;
সন্তানেরা যুদ্ধজয়ী, রাখালিয়া পথ ধরে দিনশেষে হেসে হেসে
ফিরিয়ে আনবে আজ ধূলি-ধূসরিত পথে গোধুলির সব মনধেনু;
মা তুমি রেণু-মা, গণবাঙালির ঘরে ঘরে তুমি আজ দিব্য ত্রসরেণু।

জানালার মুখোমুখি সাজিয়ে রেখেছো তুমি উড়াল অধীর;
অপেক্ষায় কেটে গেছে জন্ম-মৃত্যু, জননীর দৃষ্টির তিতির;
ঘুরে ঘুরে তীরে এসে ঘুরে ঘুরে ফিরে গেছে সুদূরে-নিকটে
যখন জীবনসঙ্গী, জাতিমঙ্গলের দীক্ষা নিলে বিরহে-সঙ্কটে;
সতীর সংসারে বসে জাতিপিতা বাজালেন মৌনমিলনের বেণু;
মা তুমি রেণু-মা, জাতিবাঙালির বুকে-মুখে তুমি দিব্য ত্রসরেণু।

যে মুহূর্তে তছনছ হয়ে গেলো সাজানো সংসার, তুমি নির্দ্বিধায়
মধুমতী তীর ধরে ছুটে গেলে পালতোলা গহনায় পলিমোহনায়,
নিজেকে করলে চাষ সদ্যোজাত পলিচরে, ধাবমান ইলিশ-নৌকায়;
তোমাকেই লক্ষ্য করে জাতিকন্যা জাতিপুত্র ছুটে যায় জাতিঠিকানায়;
তুমি মাঠে মাঠে ফলিয়েছো ছয়ঋতু সাতরং, কত ফসলিয়া মেনু;
মা তুমি রেণু-মা, জাতিবাঙালির বুকে-মুখে তুমি দিব্য ত্রসরেণু।

রাসেলের ছোট্ট বুকে বুক রেখে ধারণ করেছো বুকে সব বাঙালি সন্তান;
মা তুমি রেণু-মা; আর হাসিনার মা, রেহানার মা, কামাল-ও-জামালের মা;
মা তুমি অনাদিকাল এ বাংলার ঘরে ঘরে জাতিবাঙালির চিরমাতৃপ্রাণ।
তোমাকেই শুঁকে শুঁকে সন্তানেরা পেয়ে যায় বাংলামায়ের সব সোঁদাঘ্রাণ।
মা তুমি রেণু-মা, মাঠে মাঠে ছয়ঋতু সাতরং, আরো কত ফসলিয়া মেনু;
মা তুমি রেণু-মা, জাতিবাঙালির বুকে-মুখে তুমি ভাসমান দিব্য ত্রসরেণু।
০৮.০৮.২০২০

জাতির জননী

শৈশবেই শুরু হলো খোকা-খুকী খেলা,
কৈশোরের মধ্যভাগে ঘনিষ্ঠ ঘরনী;
যৌবনে জোয়ার এলে ত্রস্ত সারাবেলা;
জয়তী জননী কাঁধে সংসার-তরণী।

খোকা শুধু খোকা নয়, বাঙালির নেতা,
ঘর থেকে চর থেকে সব গৃহকোণে;
গণবাঙালির সুখে দুখে সহমর্মী ত্রাতা,
যুবতী জননী শুধু স্বপ্নকাথা বোনে।

খড়ের বেড়ার ফাঁকে পূর্ণিমার রাতে
মধুমতী তীরে তীরে হাসে জোছনাধারা,
জননী যুবতী জাগে দিবসে ও প্রাতে,
পতি বন্দি রাজরোষে, অবরুদ্ধ কারা।

সব পুত্র সব কন্যা স্বশিক্ষা-দীক্ষিত,
যখন বাউলা বাংলা আপন সংসার;
গৃহধর্মে গণধর্মে তিনি পরীক্ষিত,
স্বাধীনতা শুদ্ধ মন্ত্র, বুকে সদাচার।

সুখে দুখে ভালোবেসে সন্তান-লালন
নিজে মাতা নিজে পিতা স্নেহে-প্রেমে তিনি,
আটচালা সংসারের দায়িত্ব গ্রহণঃ
স্বনিষ্ঠ সংসারী তিনি, জাতির জননী।

একাত্তরে জনকের পাশে জাতিমাতা,
নিরবে নিলেন সব অনাথের ভার;
ঝড়েজলে সর্বক্ষণ সন্তানের ত্রাতা,
আঁচলে দিলেন মুছে বেদনা অপার।

তাকে যারা তাক করে হেনেছে আঘাত
অজাচারী তারা নয় এ বঙ্গসন্তান;
এখন ভাগাড়ে তারা খাদ্য হায়েনার,
অনন্তজীবিত শুধু মুক্ত মাতৃপ্রাণ।

যতদিন বাংলাদেশে হাসে চন্দ্রতারা
ততদিন জাতিমাতা, স্নিগ্ধস্নেহধারা;
যতদিন নদনদী, সবুজ বসতি –
ততদিন সন্তানেরা মাতৃবুকে হারা;

মা, তোমার বুকে বুকে জাতিসন্তানেরা;
মা, তোমার চোখে চোখে পবিত্র প্রহরা;
ফুরোয় না, ফুরোয় না মাতৃদুগ্ধধারা।
০৮.০৮.২০২০