রাজনৈতিক সীমারেখা টপকানো এক ভাষণ

জয়নাল আবেদীন
Published : 7 March 2016, 08:50 PM
Updated : 7 March 2016, 08:50 PM
একাত্তরের পঞ্জিকায় এই দিনটি না থাকলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না। সোনার বাংলা স্বাধীন হতো না। মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার মন্ত্র লুকিয়ে ছিলো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো জনতার উদ্দেশ্যে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণটির ভেতরেই।
ঐতিহাসিক সেই ভাষণ আজ ছেচল্লিশে পা দিলো। উপস্থিত জনতার আবেগী হৃদয়কে দুমড়ে-মুছড়ে দেওয়া ভাষণের দিন আজ।
সেই বজ্রকণ্ঠ কানে বাজলে পঁয়তাল্লিশ বছর পরেও গা শিউরে ওঠে। লোম দাঁড়িয়ে যায়। কবিতা মানুষকে এতখানি জাগাতে পারে, বুক চিতিয়ে লড়ার প্রেরণা দিতে পারে- তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ বিশ্বভূমে আর নেই।
আজ সেই দিনেই কেউ একজন এসে এমন একটি ভাষণ শোনাতো; যে ভাষণ শুনে পাষণ্ডদের বুক কেঁপে উঠতো! নিষ্ঠুরদের মন নরম হতো। সকল রকম পৈশাচিকতার অবসান ঘটতো!
আসুন, আমরা নিজেরাই হয়ে ওঠি নতুন বাংলাদেশের তেজদীপ্ত ভাষণের একেকজন প্রবক্তা। পদে পদে হোঁচড় খাওয়া মানুষদের মেরুদণ্ড সোজা করতে আমরেই বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে যাই। ফুলের মতো সুরভিত শিশুদের সুন্দর পৃথিবী গড়ে দিতে আমরাই হয়ে উঠি একেকজন বীরপুরুষ।
৭ মার্চের ভাষণ কেবল একজন নেতার বক্তৃতা নয়, সে তো বাংলাদেশি বাঙালির রক্তে আবেগের স্রোত বইয়ে দেওয়া পংক্তিমালা! আসুন, সেই ভাষণকে রাজনৈতিক সীমরেখায় আটকে রাখার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসি। এখান থেকেই খুঁজে নিই পজেটিভ বাংলাদেশ।
শেষে আরেকটি কথা-
সেই ভাষণ পাঠ্যবইয়ে আছে। থাকাটা দরকারিও। পাশ করতে হলে অন্য অধ্যায়ের মতো এই ভাষণটিও মুখস্ত করার চেষ্টা করে খুদে শিক্ষার্থীরা। পাশ করার জন্য মুখস্ত করলে যা হয় আর কি! তাতে কী লাভ?
বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি মুখস্ত করিয়ে কোনো লাভ নেই। এই ভাষণের প্রতিটি শব্দ, বাক্য মুখস্ত করার চাইতে একবার করে প্রত্যেককে এর অডিও রেকর্ডটা শোনানো উচিত। সেটি পরীক্ষা পাশের চাইতে বেশি কার্যকরি হতে পারে।
লেখক : সাংবাদিক, news.joynal@gmail.com