.
লেখক-শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীদের যে নতুন প্যানেল ক্রিয়েট হয়েছে, সেটা কি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বিপরীতে কোনো প্ল্যাটফর্ম কি না আমার তা বোধগম্য না। হ্যাঁ, এই নতুন প্ল্যাটফর্মটিতে বাম রাজনীতি মতবাদের লোকজন আসেন, যারা সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। তাদের প্রতিবাদ যৌক্তিক না অযৌক্তিক সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ, বা আমি তা ব্যাখ্যার যোগ্যতা রাখি না।
.
ভাস্কর্য প্রতিসারণের ইস্যুতে এই নতুন প্যানেলটি যখন সোচ্চার হয়ে উঠেছিল, তখন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নেতারা ছিলেন সরকারের পক্ষে। দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় বইলে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রণম্য ব্যক্তিত্বদের টনক নড়ে। তারা বিবৃতি পাঠান, সমাবেশ করেন শহীদ মিনারে।
কিন্তু কথা হল, যখন ইস্যু একটাই, আন্দোলন-দাবি-মত-পথ সব একই দিকে ধাবিত হয়, তখন দু'পক্ষের একত্রে একটি জায়গায় দাঁড়াতে সমস্যা কোথায়? হলি আর্টিজান ইস্যুতে একপক্ষ দাঁড়াবেন শহীদ মিনারে, আরেকপক্ষ দাঁড়াবেন প্রজন্ম চত্বরে। দুই পক্ষ একসাথে শোক জানাতে কোথায় যৌক্তিক বাধা তা আমি জানি না।
লেখক-শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীদের নতুন প্যানেলটি অবশ্য বরারবই বলছে, জোট নেতারা আওয়ামী লীগ ঘেঁষা। কে কাকে ব্রাত্য করবেন, কে কাকে সম্মান জানাবেন, তা নিয়ে তর্কাতর্কি এক লেগেই থাকে। তবে জোটের নাম যখন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, তখন নেতাদের উচিত ছিল, সবাইকে একই ছাতার নিচে দাঁড় করানো। যখন দু'পক্ষ আলাদা হয়ে দাঁড়ান, তখন মনে হয় দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন আওয়ামী ও বাম ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আর এ সুযোগে রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা হায়েনারা বারবার হুঙ্কার ছুঁড়ে, কালিমা ছড়ায়, ভাঙ্গন ধরায় ঐক্যে।
আমি জানি না, এক পতাকাতলে আসবেন কি-না দেশের প্রথিতযশারা। যখন দেয়াল ভাঙ্গবে, তখন দেখা যাবে এদেশে মৌলবাদীদের দোসর রাজনীতিবিদরাও সুর বদলে ফেলেছেন। নব প্রজন্মের মানুষ হিসেবে, এ মিনতি আমার বড়দের প্রতি। বড়রা নিশ্চয় বিচক্ষণ। তারা আমাদের নিশ্চয় এমন কোনো পথে পরিচালিত করবেন না যা আমাদের বিভ্রান্ত করে। যা পথ বিচ্যুত করে আমাদের টেনেহিঁচড়ে নিয়ে চলে ইতিহাসের কালো এক অধ্যায়ে….