গণতন্ত্রের নামে কী হচ্ছে এসব?

নাসির আহমেদ কাবুল
Published : 10 March 2012, 02:58 PM
Updated : 10 March 2012, 02:58 PM

গণতন্ত্রের নামে কী হচ্ছে এসব! কেন এমন বৈরি আচরণ একে অন্যের সঙ্গে। কার স্বার্থ জড়িত এ ধরনের কর্মকাণ্ডে। এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্তদের মনে এ প্রশ্নটি এখন জোরেসোরে উচ্চারিত হচ্ছে।

১২ মার্চকে সামনে রেখে দেশের প্রধান দু'টি দল যখন মুখোমুখি অবস্থানে, তখন এসব প্রশ্নগুলোতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ দেশের সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রের কথা শুনে আসছে স্বাধীনতার অনেক আগ থেকে। এ জন্য রক্ত ঝরেছে ছাত্র-শিক্ষক থেকে শুরু করে মেহনতি মানুষের। কিন্তু গণতন্ত্র কী, কার স্বার্থ জড়িত এর সঙ্গে- বিষয়টি খুব ধোঁয়াসা। অভিজ্ঞতা খুব তিক্ত।

ভোটের সময় এলেই 'জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস'- কথাটিকে নানা রঙে রাঙিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ভোট আদায় করা হয়। তারপর গণতন্ত্রপন্থীদের আর খুঁজে পায় না ভোটদাতারা। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো তখন আর্তনাদ করে রাস্তাঘাটে- হোটেল রেস্তোরাঁয় চায়ের টেবিলে। স্বপ্নতাড়িত মানুষগুলো বিষাক্ত বিশেষণে বিশেষিত করে নেতানেত্রীদের। তা কি তারা জানেন না? যদি জানতেন, তাহলে অন্তত সংসদ বর্জন হতো না, হরতাল-আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়ানোর উৎসব চলতো না। মিছিলে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ কিংবা রাবার বুলেট ছোড়া হতো না। এগুলো না হলে জনগণ গণতন্ত্র কী তার আঁচ কিছুটা হলও উপলব্ধি করতে পারতো।

আমাদের পোড়া কপাল, আমাদের গণতন্ত্র এখনও শিশু। হাঁটতে শেখেনি এখনও! কবে যে এই গণতন্ত্রের যৌবনপ্রাপ্তি হবে, কবে মাথা উুঁচ করে দাঁড়াবে- তারও কোন ঠিক নেই।
১২ মার্চ কী হবে? জ্বালাও-পোড়াও যজ্ঞে মেতে উঠবে আন্দোলনকারীরা? তাদের ঠেকাতে রাবার বুলেট নিক্ষেপ হবে? তা না হলেও কাঁদানে গ্যাস, পুলিশের লাঠিার্জ তো হবেই। এ তো নতুন কিছু নয়। প্রশ্ন হলো কার স্বার্থে? এখানে জনগণের সম্পৃক্ততা কতটুকু? এটাকে কি গণতন্ত্র বলে?

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। ভোটের মাধ্যমে তারা সরকার নির্ধারণ করে। পাঁচ বছর পর আবার জনগণের ভোটে সরকার বহাল অথবা নতুন করে নির্বাচিত হবে- এটাই তো গণতন্ত্রের
ভিত্তি- জনগণের সম্পৃক্ততা। স্বার্থান্বেষী মহল ছাড়া এর বিকল্প কেউ চিন্তা করে না। এ দেশের সাধারণ মানুষ আজ এই সত্যটা উপলব্ধি করতে পেরেছে। আর এই উপলব্ধি যতো জোরালো হবে, আমাদের শিশু গণতন্ত্রও ততো দ্রুত বয়োপ্রাপ্ত হবে, সাবালক হবে। না হলে আমরা যেই তিমিরে, সেই অন্ধকারেই থেকে যাবো। বিষয়টি আমরা সাধারণ মানুষ বুঝি, বুঝতে হবে রাজনীতিকদেরও।

১০-০৩-২০১২