প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি না প্রাইভেট ফার্ম

কামরুল হাসান
Published : 1 Feb 2015, 06:37 PM
Updated : 1 Feb 2015, 06:37 PM

বেশ কিছুদিন ধরেই প্রাইভেট ভার্সিটি নিয়ে ব্লগে বেশ কিছু লেখালেখি হচ্ছে। আর এর প্রায় প্রত্যেকটিতেই একটি মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়েই বেশি মাতামাতি হচ্ছে, আর সেটি হচ্ছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। বাস্তবে কিন্তু প্রায় প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরই একই অবস্থা। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই কিন্তু বিএসসি করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করছি। ক্লাস রুম সংকট, শিক্ষক সংকট ও খেলার মাঠের সংকট সহ যা বলা হয়েছে, তা সত্য কিন্তু তা তো শুধু ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একার নয়, প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরই একই সমস্যা।

হয়তো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়না যে কখন এক ব্যাচ বের হবে তারপর তারা ক্লাস রুমে ঢুকবে, কিন্তু তাদেরও কিন্তু শিক্ষক সংকট আছে। এর শাখা ক্যাম্পাস নিয়ে কথা বলা হয়েছে কিন্তু এমনও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যারা শপিং মল ভাড়া নিয়ে ক্লাস নেয়, দেখলে বোঝাই যায় না আসলে বিশ্ববিদ্যালয় না শপিং মল। যদিও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একটি ক্যাম্পাসেও একই অবস্থা। বলা হয়ে থাকে "বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা ও হলে যে থাকেনি, সে আসলে শিক্ষা জীবনের আসল আনন্দই পায়নি"। ঠিক লেয়ার কিংবা ব্রয়লার মুরগি যেভাবে একটি ফার্মে বড় করা হয়, আমরাও ঠিক বিশ্ববিদ্যালয় নামের ফার্মে চার বছর পড়াশুনা করছি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে হল তো স্বপ্ন, আমরা কলেজে যে বড় ক্যাম্পাস পেয়েছি তার অর্ধেকও আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাই না। তবে এর জন্য আমি ইউজিসি'কেই দায়ী করি, কারন তারা বারবার সময় বৃদ্ধি না করে কেন অ্যাকশনে যায় না?

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে নিদিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টিও তাদের নজরে আনা উচিৎ, কারন যদিও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জিপিয়ে দেখে নিচ্ছে কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে না। বর্তমানে প্রশ্ন ফাঁসের কারনে জিপিয়ে ৫ দেখে ভালো শিক্ষার্থী ভাবা যায় না। তাই প্রতি বিষয়ে ৯০০ ভর্তি না করে কোয়ালিটি সম্পন্ন ৯ জন ভর্তি করানোও ভালো কারন প্রোডাক্ট ভালো হলে বিজ্ঞাপন কিংবা ওয়েবসাইট রাঙ্কিং লাগেনা, মানুষ নিজেই ভালোকে খুঁজে নিবে।

এক সময় দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় বেশ নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। বর্তমানে তা শাখা ক্যাম্পাস ও সার্টিফিকেট বাণিজ্যের কারনে নামসর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। আর এর জন্য ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে আসা ছাত্রছাত্রীদের । যারা বর্তমানে বেশ বড় বড় পদে থেকেও নিজের ভার্সিটির নাম বলতে লজ্জা পান। ঠিক তেমনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ও যেন নামসর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত না হয় এবং আমাদেরকে যেন ভবিষ্যতে ভার্সিটির নাম বলতে লজ্জা না পেতে হয়, তার জন্য ড্যাফোডিল ভার্সিটি বাবস্থা নিবে এটাই আমি আশা করি।