'যারা নামাজ পড়োনি তারা হাত ওঠাও। শিক্ষিকার নির্দেশ পেয়ে আমরা হাত ওঠাই। পর মুহূর্তেই শিক্ষিকা জেসমিন আক্তার খুন্তি গরম করে আমাদের হাতে-পায়ে ও শরীরে লাগিয়ে দেয়। আমরা চিৎকার দিলে জেসমিন আপা বলতে থাকেন, এতোটুকু গরম সহ্য করতে পারো না। দোজখের আগুন সহ্য করবা কীভাবে?'-নামাজ না পড়ার অজুহাতে গত ১ মে রাজধানীর কদমতলীর নামা শ্যামপুরে তালিমুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসার মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও শিক্ষিকা জেসমিন আক্তারের হাতে নির্যাতনের শিকার শিশু ছাত্রী রেখা, সুমি ও জান্নাতুন ফেরদৌসী পাখিসহ কয়েকজন এভাবেই বর্বর নির্যাতনের বিবরণ দিয়েছিল।
ওই শিশুরা শরীরে উত্তপ্ত খুন্তির ছ্যাকার যন্ত্রণায় এখনও কাতর। বর্বরতার চিহ্ন ওদের শরীরে। তবে গতকাল ৮ মে মঙ্গলবার পুলিশ ওই শিক্ষকে (!) ঢাকার অদূরে নবাবগঞ্জের আত্মীয়র বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে।
সাত থেকে দশ বছর বয়সী ১৪ শিশু ছাত্রীদের উপর এমন বর্বর নির্যাতন চালিয়েছিলেন শিক্ষিকা নামধারী এই জেসমিন। নির্যাতনের সময় শিশুরা চিৎকার দিলেও মন গলেনি এ শিক্ষিকার। দম্ভ করে বলেছিলেন, দোজখের আগুন আরও কড়া। সে আগুন সহ্য করবা কীভাবে? অব্যশই সেদিনই জনরোষে পড়ে মাওলানা স্বামী মাসুদুর রহমানকে নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। তবে নির্যাতিত শিশুদের অসহ্য যন্ত্রণা দেখে তাদের বাবা-মায়েরা বলেছিলেন, এ কেমন শিক্ষিকা?
গ্রেফতারের পর জেসমিন শিশুদের ওপর নির্যাতনের কথা স্বীকার করলেও দাবি করেছেন, তখন তার মাথা ঠিক ছিল না। তবে তার একথায় বিশ্বাস নেই পুলিশের। পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি নিলেও আদালত তার রিমান্ড আবেদন না মঞ্জুর করেছেন। একই সঙ্গে জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে ৮ মে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকা মহানগর আদালত।
৮ এপ্রিল, ২০১২