টেকনাফ স্থল বন্দর অর্ধশত ইয়াবা ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণে

কাশেম
Published : 21 May 2012, 10:25 AM
Updated : 21 May 2012, 10:25 AM

চট্রগ্রামে র‌্যাবের হাতে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ইয়াবার চালান ধরা পড়ার পর নড়ে চড়ে বসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত সীমান্ত শহর টেকনাফের প্রায় অর্ধশত ইয়াবা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত এসব ইয়াবা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে আইনশৃংখলা বাহিনীর ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সূত্রে জানা গেছে, তালিকাভুক্ত এসব ইয়াবা ব্যবসায়ী সারা দেশ জুড়ে ইয়াবার জাল বিস্তার করেছে। চট্রগ্রামে দেশের এ যাবত্কালের সবচেয়ে বড়ো ইয়াবার চালান ধরা পড়ার পর ইয়াবা চোরাচালানের নিরাপদ ট্রানজিট হিসেবে পরিচিত সীমান্ত শহর টেকনাফের স্থল বন্দর ও টেকনাফ-কক্সবাজার-চট্রগ্রাম রুট কেন্দ্রিক ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। অনেকেই ইয়াবা পাচারের নতুন কৌশল খুঁজছেন। আবার অনেকে গা ডাকা দিয়েছেন। সীমান্ত বাণিজ্যের আড়ালে যেসব ব্যবসায়ী মূলত ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত তারা সতর্কাবস্থায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দ্রুত কোটিপতি ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর সীমান্ত বাণিজ্যের অনেক ব্যবসায়ী অন্যান্য বৈধ পণ্যের আড়ালে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার করছে। আবার সীমান্তের অনেক বৈধ নিরীহ ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে প্রভাবশালী চক্র ইয়াবা পাচারে বাধ্য করছে। অন্যথায় টেকনাফ স্থল বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। টেকনাফ স্থল বন্দর নিয়ন্ত্রণকারী একটি শক্তিশালী চক্র ইয়াবাসহ বিভিন্ন অবৈধ পণ্য পাচারে সরাসরি জড়িত। এমনকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকারী টেকনাফের অর্ধশত ইয়াবা ব্যবসায়ীর তালিকা চূড়ান্ত করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হলেও এখনও পর্যন্ত ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে এসব রাঘববোয়ালরা।

এদের মধ্যে সিংহ ভাগই নিজেদের ব্যবসায়ী পরিচয় দিলেও ইয়াবাই তাদের মুল ব্যবসা বলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিশ্চিত হয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা মতে, টেকনাফের লেঙ্গুরবিল এলাকার মোস্তাক আহমদ, দিদার হোসেন, ডেইল পাড়ার মৌলভী বোরহান, জালিয়াপাড়ার সিরাজ মিয়া, শামনুন্নাহার জ্যোতি, জাদিমুরার আবদুল্লাহ হাসান, কেকে পাড়ার জাহেদ হোসেন জাকু, ডেইল পাড়ার নুরুল আমিন, জালিয়াপাড়ার সৈয়দ আলম, উত্তর লম্বরীর কামাল হোসেন, চৌধুরী পাড়ার জহির, নাজির পাড়ার জাফর নুর আলম, আবদুর রহমান, নাইট্যংপাড়ার তৈয়ব মিয়া, পিচ্চি আনোয়ার, মন্ডলপাড়ার নুর হোসেন, হারিয়াখালীর কবির আহমদ, শাহপরীর দ্বীপের ইব্রাহিম, জালিয়াপাড়ার শুক্কুর, মুজিব, লেদার মোহাম্মদ আলম, নুর মোহাম্মদ, নাইট্যংপাড়ার জামাল, কেকেপাড়ার একরামুল হক, নাইট্যংপাড়ার আনোয়ার, নুর মোহাম্মদ, ইসলামাবাদ এলাকার মোহাম্মদ হোসেন, আবদুর রাজ্জাক, ডেইলপাড়ার আবদুল্লাহ, মনুপাড়ার জাকির হোসেন ও বাস স্টেশনের একটেল রমজান শতাধিক সিন্ডিকেট তৈরী করে টেকনাফ স্থল বন্দর থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইয়াবা পাচার করছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকালে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আসাদগঞ্জ এলাকার একটি গুদাম থেকে ২ লাখ ৭০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এ সময় বাংলাদেশে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের অন্যতম গডফাদার আব্দুর রশিদসহ ৪ জনকে আটক করা হয়। আটক আব্দুর রশিদ (৫০) টেকনাফের শাহপারীরদ্বীপের হাজী আলী আহমেদ এর পুত্র এবং তিনি চট্টগ্রামের হালিশহরস্থ কর্ণফুলী আবাসিক এলাকায় বসবাস করেন। ইয়াবার চালানটি টেকনাফ স্থল বন্দর হয়ে চট্রগ্রামে পৌঁছে বলে জানতে পেরেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। এদিকে ধরা পড়া ইয়াবার চালানের সাথে জড়িত অনেকের নাম আলোচিত হচ্ছে। টেকনাফ স্থল বন্দর কেন্দ্রিক সীমান্ত বাণিজ্যের সাথে জড়িত অনেক ব্যবসায়ী বর্তমানে আতংকে গা ডাকা দিয়েছে।