আগে মৃত্যুর মিছিল থামান, তারপর শান্তির প্রেসক্রিপশন

কাজী রাশেদ
Published : 4 Feb 2015, 07:04 PM
Updated : 4 Feb 2015, 07:04 PM

সাবেক রাষ্ট্রপতি ডাঃ বি চৌধুরী বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবি সংঘঠনের এক গোলটেবিল বৈঠকে দেশের বর্তমান সংকট উত্তরনের জন্যে প্রেসক্রিপশন করেছেন। এবং এই প্রেসক্রিপশনে তিনি ট্যাবলেট দিয়েছেন। এই ট্যাবলেটে যদি কাজ না হয় তখন তার কাছে ইঞ্জেকশন আছে সেই ইঞ্জেকশন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বিএনপি থেকে বিতারিত এই সাবেক রাষ্ট্রপতি অনেক অপমানিত হওয়ার পরেও তার সাবেক দলের প্রতি এখনো প্রচুর পরিমানে অনুগত এটা তার বক্তৃতা বিবৃতিতেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সুতারাং এই মাননীয় ব্যক্তি যখন কোন সমস্যা সমাধানের কথা বলেন তখন স্বভাবতই এক চোখে বিশ্লেষন করেই মতামত দিয়ে ফেলেন।

গোল টেবিল বৈঠকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনেক প্রসংশাও করেছেন। মহান হৃদয়ের অধিকারি হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। এবং মহান হৃদয়ের অধিকারী হওয়ার সুবাদে উনাকেই সংলাপের আহবান জানাতে বলেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে সারাদেশে আগুন আর বোমার আঘাতে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত মানুষ পুড়ে কয়লা হয়ে যাচ্ছে সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেন নাই। তিনি এই বিভীষিকা থামানোর জন্যে বা এই মৃত্যুগুলি বন্ধের  জন্যে তাঁর প্রয় নেত্রীকে কোন আহবান জানান নাই। বরঞ্চ বলেছেন সাতদিন এই বিভীষিকা বন্ধ থাকবে সংলাপ চালানোর জন্যে, যদি সংলাপ ব্যর্থ হয় তবে আবার মানুষ হত্যা, আগুনে পোড়া, বাসে আগুন দেওয়া শুরু হয়ে যাবে।

ডাঃ বি চৌধুরী আপনি বিএনপির কর্মীদের কাছে কতটুকু সন্মানীয় তা জনগনের জানা হয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশের সাধারন মানূষ আপনার পিতা জনাব কসির উদ্দিন সাহেবের সন্তান হিসেবে এবং বাংলাদেশের সেরা চিকিৎসকদের একজন হওয়ার সুবাদে আপনাকে এখনো অনেকেই সন্মান করে, আপনাকে একটি বিশেষ জায়গায় রাখতে পছন্দ করে।

দেওয়া নেওয়ায় মিললো না বলে আপনি নির্মম নাজেহাল হওয়ার পরেও আপনি আবার আপনার পুরানো দলের সাথে গাঁট বেধে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারেন। কিন্তু জনগন এই মুহূর্তে  দেশের পরিস্থিতি যেমন স্বাভাবিক চায় ঠিক তেমনিভাবে গত কয়েকদিনে যেসব মানূষ আপনার প্রিয় নেত্রীর আগুনে পুড়ে মারা গেছে, যারা হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর যন্ত্রনা ভোগ করছে, তাদের দাবী সকল সংলাপের আগে এই সব মানুষ হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগরায় দাঁড় করাতে হবে।

আর যেহেতু আপনিও এখন সেই বোমা মারা, আগুন দেওয়া দলের হয়ে ওকালতি করছেন সেই মতে আপনাকেও জনগনের আদালতে এবং দেশের আইন ব্যবস্থার অধীনে জবাবদিহি করতে হবে।

বিভিন্ন সময়ে বিশ্লেষকরা অভিযোগ করে আসছিলো বাংলাদেশকে একটি অকায্যকর রাষ্ট্রে পরিনত করার এবং এই দেশের মাটিতে জঙ্গী গোষ্ঠীর ঘাটি গড়ে তুলতে পাকিস্তান বিভিন্নভাবে কাজ করে আসছে, জামাতে ইসলামকে, হিজবুত তেহরীকে সহ বিভিন্ন দল গুলোকে অর্থ সাহায্য দিয়ে আসছে। গত ৩১ জানুয়ারী পাকিস্তানী দুতাবাসের কর্মকর্তা মাজহারকে প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে তা সঠিক বলে প্রমান হয়েছে। প্রমান হয়েছে খালেদা জিয়ার টেলিফোনের কথোকপথন মধ্য দিয়ে, যে এই দেশের সার্বভৌমত্ব পাকিস্তানীদের হাতে তুলে ফন্দিফিকির করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন এতো কিছুর পরেও দেশের সাধারন মানুষের জীবন জীবিকার স্বার্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ বের করবেন। কিন্তু যারা বাসে ট্রাকে আগুন দিয়ে সাধারন মানুষকে পুড়িয়ে মারছে তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতেই হতে হবে।

জনগনের মনের কথা হলো এই যে, পুলিশ, বিজিবি বা র‍্যাবের মহাপরিচালক বা আইজি সাহেবরা শুধু মুখে বললে হবে না, যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে তারা কখনোই কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী হতে পারে না। তারা অবশ্যই সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। কঠোর হাতে এখনি এদের দমন করতে না পারলে এই দেশ অকায্যকর রাষ্ট্রে পরিনত হবে। যে অকায্যকর রাষ্ট্র করার স্বপ্ন সফল করার লক্ষ্যে এদেশের কিছু রাজনৈতিক দল অন্য একটি দেশের সাথে ষড়যন্ত্র করে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

ডাক্তার সাহেব আগে মানুষের মৃত্যু ঠেকানোই আপনার প্রথম কাজ। এটা আপনার পেশাগতভাবেও প্রনিধানযোগ্য। সো প্রধানমন্ত্রীকে আহবান না জানিয়ে আপনি আপনার প্রিয় ম্যাডামকে আগে মানূষের মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করতে বলুন। সাপের লেজ দিয়ে কান চুলকালে পরিশেষে সেই সাপে দংশিত হতেই হবে।