জয়তু বাংলাদেশ! জয় হো!

কাজী রাশেদ
Published : 9 March 2015, 05:37 PM
Updated : 9 March 2015, 05:37 PM

বাংলাদেশের দামাল ছেলেদের হাতে মহা পরাক্রমশালি বিট্রিশ রাজকে আবারো পরাজয়ের গ্লানিতে ডুবতে হল। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে এই ইংলিশ বাহিনীকেই পরাজিত করেছিলো বাংলার দামাল টাইগাররা। তখন অনেকেই মনে করেছিলো ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে। সেই মনে করাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বাংলাদেশের ছেলেরা আরো একবার ইংলিশ বাহিনীকে পরাজিত করে প্রমাণ করে দিলো বাংলাদেশ কোন ঝড়ে বক পড়া দল নয়। আর সেইসাথে এটাও প্রমাণ করে দিলো পৃথিবীর যে কোন দলের সাথে খেলে জিতে নিতে পারে কাংক্ষিত লক্ষ্য। এই বিট্রিশরাই যখন আমাদের মাতৃভূমিকে ছিনিয়ে নিয়েছিল, তখনো বাংলার দামাল ছেলেরাই বিট্রিশরাজকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলো। আজ বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা ওই বিট্রিশদেরকে হারিয়ে পুরানো দিনের কথাই মনে করিয়ে দেয়। এই জয় সূর্য সেনের জয়, তিতুমীরের জয়, ক্ষুদিরামের ফাঁসির বিরুদ্ধে জয়।

খেলার শুরুতেই দুই ওপেনার এবং পৃথিবী খ্যাত অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে বড়ো বাজে ভাবে হারিয়ে বাংলাদেশ পড়েছিলো এক গভীর সংকটে। তামিম এবং সাকিবের এই দায়িত্বহীন ভাবে ফিরে আসায় প্রত্যেকের মনে শঙ্কা জাগিয়েছিলো আজ বুঝি আর হলো না।

ধন্যবাদ রিয়াদ, ধন্যবাদ সৌম্য আর মুসফিককে, ধন্যবাদ রুবেল, মাশরাফি আর তাসকিনসহ সকল খেলোয়াড়দের। বড়ো সংকটের সময় দলের হাল ধরে মোটামুটি একটা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। সংগ্রহটা ছিলো ইংলিশদের বিপক্ষে বড়োই অনিরাপদ। তারপরেও এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশী কোন ব্যাটসম্যা্নের পক্ষে ম্যাজিক ফিগারে যাওয়ার রেকর্ড। যার মূল্য সে পেয়েছে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়ে। মুসফিক তার স্বভাবসিদ্ধ ব্যাটিং করে দলকে এগিয়ে নিয়েছে দারুন ভাবে। অপরদিকে সৌম্যের রানও কম মূল্যবান নয়  দলের জন্যে। সেইসময় সৌম্য এবং রিয়াদের টিকে থাকাই ছিলো সবচেয়ে প্রয়োজনীয়।

টান টান উত্তেজনায় জয়কে ছিনিয়ে আনার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের প্রায় নেই বললেই চলে। সেই অবস্থাতে রুবেলের দুর্দান্ত বোলিং আর অধিনায়ক এবং তাসকিনের মুল্যবান উইকেট ইংলিশদের বিশ্বকাপের রথ থামিয়ে দিতে মূল ভূমিকা রেখেছে।

বাংলাদেশের এই জয় অধিনায়ক মাশরাফি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে সঠিক কাজটি করেছেন। এই জয় আসলেই বাংলাদেশ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরই প্রাপ্য। বাংলাদেশের মানুষ আজ অনেকদিন পর উল্লাসে ফেটে পড়েছে। প্রতিদিনের আগুনে পুড়ে মরার দুঃসহ যন্ত্রনার মধ্যে এযেন এক পসলা শান্তির বৃষ্টি। বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের প্রত্যেক সদস্যের জন্য আমাদের অভিনন্দন, আমাদের প্রাণঢালা শুভাশীষ। এই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে দেশের ভাবমূর্তিকে করেছে উজ্জ্বল থেকে উজ্জলতর। জয় বাংলাদেশ, জয় বাংলা। জয় হো।