গলায় দড়ি দিতে চান জাফর স্যারঃ সরকার কী করছে?

কাজী রাশেদ
Published : 30 August 2015, 08:20 PM
Updated : 30 August 2015, 08:20 PM

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জনপ্রিয় লেখক এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব জাফর ইকবাল গলায় দড়ি দিতে চেয়েছেন। শাবিপ্রবির শিক্ষকেরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অনিয়ম এবং পড়ালেখার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আন্দোলন ক্রে আসছিলেন এবং ভিসির অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন তখন একদল ছাত্র লীগের ছেলে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে শিক্ষকদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং নিরযাতন করে শিক্ষকদের সরিয়ে দেয়। এই ঘটনায় ছাত্ররা শিক্ষকদের গায়ে লাথিও মারে বলে প্রত্যক্ষ দর্শীর বিবরনে পাওয়া গেছে।

সবচেয়ে দুঃখজনক হলেও সত্যি বর্তমানে এইসবই চলছে সবখানে। যে যেভাবে পারছে নিজেদের স্টাইলে চালিয়ে যাচ্ছে। আইনের তোয়াক্কা অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে আমাদের দেশ থেকে। বাজারে গেলে মনে হয় না দেশে কোন সরকার বা বাজার নিয়ন্ত্রনের জন্যে কোন সংস্থা বাংলাদেশে আছে। সরকারী হিসাব মতে দেশে পর্যাপ্ত পরিমানে পিঁয়াজের মজুদ থাকার পরেও বাজারে পিয়াজের ঝাঁঝে দেশবাসীর অবস্থা নাস্তানাবুদ পর্যায়ে। এছাড়া সকল প্রকার শাক সবজির মুল্য যে ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে মধ্যবিত্ত আর নিন্মবিত্তের বাজার করাই ছেড়ে দিতে হবে বলেই মনে হচ্ছে। অবশ্য দেশ যেহেতু এখন নিন্ম মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হয়েছে তাতে করে নিন্মবিত্ত আর মানসিকভাবে মধ্যবিত্তের এই দেশে টিকে থাকাই মুস্কিল হয়ে পড়বে।

সারা বিশ্বে যখন জ্বালানি তেলের মুল্য কমতে কমতে প্রায় অর্ধেকেরও কমে এসে ঠেকেছে তখনো আমাদের দেশের সরকার তেলের মুল্য না কমিয়ে পূর্বের মুল্যে স্থির রেখে আগের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের চিন্তায় মসগুল হয়ে আছেন। তেলের মুল্য বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারের মুল্যের সাথে সমন্বয় করে নিরধারন করলে জাতীয় উৎপাদনখরচ কমে, জনগনের নাগালের মধ্যে এসে পড়ে অনেক নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য। অথচ সরকার সেই জ্বালানী তেলের মুল্যের সমন্বয় না করে হটাত করে গ্যাস এবং বিদ্যূতের মুল্য বাড়িয়ে দিয়ে জনগনের সাথে মসকরা করলেন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে তৈরির যে মহা পরিকল্পনা করেছেন এবং সেই মোতাবেক কাজ করে চলেছেন তাতে দেশের সাধারন মানুষের প্রচুর সমর্থন বিদ্যমান। কিন্তু সেই জনগনের তার হাত কে শক্তিশালী করতে প্রয়োজন খেয়ে পরে বেচে থাকার ন্যনুতম গ্যারান্টি। এই গ্যারান্টি শুধুমাত্র একটি স্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থা, শান্তিপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ, সন্ত্রাসমুক্ত আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিই দিতে পারে।

কে। বাজারের উপর কোন নিয়ন্ত্রন নেই কোন সংস্থা বা মন্ত্রনালয়ের। সরকার দলের এম পি এবং ক্ষমতার অংশিদারেরা নিজের নিজের এলাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলে যাচ্ছেতাই ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। এবং এইসব অপকর্মের জন্য মাশুল দিতে হচ্ছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

১৯৭২ থেকে ৭৫ এর পনেরই আগশট পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে জাসদ, গনবাহিনী, মাওবাদি, চীনাপন্থী বাম সংঘঠন এবং স্বাধীনতা বিরোধী সশস্ত্র দল উপদলের বিরোধীতার সমুক্ষীন হতে হয়েছিলো। আর আজ কিন্তু কিছু বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত জঙ্গী গোষ্ঠীর অপততপরতা ছাড়া কোন শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ নেই। তবে অপ্রিয় হলেও সত্যি এখন প্রধানমন্ত্রী সকল পরিকল্পনার প্রধান শত্রু হয়ে দাড়িয়েছে তার নিজের দলের লাগামছাড়া কিছু নেতা উপনেতারা।

প্রতিদিন একটু একটু করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে যাচ্ছে। মানুষের সহ্যের সীমা যদি ছাড়িয়ে যায় তখন কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আপনার মহা পরিকল্পনার পরি উরে গিয়ে শুধুমাত্র কল্পনাটাই পরে থাকবে।

চারিদিকে বিষাক্ত নাগিনীরা কিন্তু ওঁত পেতে সুযোগের অপেক্ষায় আছে। মানুষের ধৈর্যের সীমা ভেঙ্গে পড়লে হায়েনা আর স্বাপদেরা অন্ধকার থেকে আলোতে বেড়িয়ে আসবে। আজকে যারা আপনার ক্ষমতায় বলীয়ান হয়ে নিজেদের ক্ষমতা কে যাহির করছে তখন এদের কাউকেই পাশে পাবে না। আর জনগন?

ধৈর্যহারা জনগন আলেয়াকেই আলো মনে করে সবসময়। যেদিন নবাব সিরাজুদ্দৌলা পরাজয় বরন করে বাংলা ইতিহাসে পরাধীনতার গ্লানি বইয়ে আনলেন সেদিনো বাংলাদেশের জনগন প্রতিদিন এর মতোই হালের গরুসহ ফসল রুইতে গিয়েছে, ৭৫ এর মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের খবর রেডিওতে শুনে শধুই কপাল চাপড়িয়েছে বাংলার আপামর জনগন কিন্তু কিছুই করতে পারে নাই। কারন সেদিন কোন নেতাই প্রতিরোধের ডাক দেন নাই। ভাগ্যের লিখন বলে নীরবে চোখের পানি ফেলেছে আর পুনরায় যে যার মতো কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলো। আর মনে করেছে কি জানে কিছুদিনের জন্যে হয়তো মুক্তি দিলে দিতেও পারে এইসব হায়েনার দলেরা।