ময়মনসিংহ জংশনে, বিকেলে কি দুপুরে এসে, দুই নাম্বার প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আনমনা না হয়ে আপনার তাকাবার সময় যদি হয়, তবে তাকে দেখতে পাওয়ার কথা। একলা বসে, মাথা নিচু করে ভাবছে, কিংবা ঝিমাচ্ছে। চোখ প্রায় বন্ধ। দিনের আলো তার চোখে খুব লাগে। চুপচাপ বসে থাকা, হাঁটা, আর স্টেশনে ট্রেন এসে থামে যখন, তখন যাত্রীদের কাছাকাছি এসে কিছু টাকার ব্যবস্থা করা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই তার। সেদিন আমারও কাজটাজ ছিলো না তেমন। পাশে বসতে চাইলে না করলেন না। জামালপুরের রানাগাছা মধ্যপাড়া গ্রাম-এ বাড়ি ছিলো এক সময়। সে অনেক আগে। এই গ্রামটি কোন্ উপজেলায়, কোন্ ইউনিয়নে—তা জানা নেই তার। সিগারেটটা বাড়িয়ে ধরতেই নিলেন। কাঠিওয়ালা ম্যাচ একখানা সাথেই ছিলো তার। আয়েশ করে সিগারেটে টান দিলেন….আমি ফোনের রেকর্ডারটা অন করে নিলাম। আমার দিকে খুব একটা তাকালেন না তিনি। ধীরে ধীরে কথা বললেন। অনেক কথা। আমাদের তাড়া ছিলো না।
.
কী নাম আপনার?
-সুলতান
কী করেন?
-ইস্টিশনে থাকি
পেশা নাই কোনো? কাজকর্ম?
-কাজকর্ম আপাদতো নাই…আছিন, কাজকর্ম এক সময় করছি…রিক্সা চালাইছি। রিক্সা চালানির সময় পরিশ্রম অইছে অনেক। পরিশ্রম অইলে পরে ছাইড়া দিসি। অহন আছি এইন্যোই (এখানেই)। এমনে কোনো পরিশ্রম নাই।
খাওয়া-দাওয়া?
-খাওয়া-দাওয়া অয়; হোটেলেই অয়।
টাকা-পয়সা ক্যামনে মিলে?
-টাকাপয়সা মাইনসের কাছথনে নেওন্নাগে।
সংসার-টংসার নাই?
-নাহ, (খানিক মৌনতা)…সংসার তো আছেই; এইডাই তো সংসার।
এইডাই সংসার?
-হ, এইডাই সংসার। এওন্তেই শান্তি। চলতে চলতে এনোকাই শান্তি।
বন্ধু-বান্ধব নাই আপনার?
-বন্ধু-বান্ধব ছিলো এক সময়। অহনকা আমি নিজেই চলতাছি। একলাই চলতাছি।
এই যে সারাদিন একলা বইয়া থাহেন, খারাপ লাগে না আপনার?
-মোডামুডি খারাপ লাগেই। তহন চলাফেরা করি, দূরেটুরে যাই।
দূরে কই যান?
-ওই দিকে।
রেললাইন ধইরা ধইরা?
-হুম, যাইতেই থাহি। আবার এইদিকে আডি (হাঁটি), পাক্কা রাস্তা দিয়া। আটতে আটতেই দিন যায়গা।
কতোদিন ধইরা আছেন এই ইস্টিশনে?
-ইস্টিশনে বছর খানেকের বেশি।
সকালে কী খান?
-সকালে রুডি খাই।
দুপুরে?
-দুপুরে ভাত খাই। আইজকা অহনও খাই নাই। এই যে সিগেরেট দিলেন এইডাই খাইলাম।
এইভাবেই জীবন চলবো?
-হ। এইভাবে তো গেছেইগা পরাই। আর দুয়েক দিন। তারপরে মুনে করুনই যে পাওয়াই যাবো না।
ক্যা? পাওয়া যাবো না ক্যা?
-বালনাগে না। এনো থাকলে অসুবিদা। ইস্টিশনে তো, অসুবিদা। মোডামুডি যদি একটা বারায়া যাইতে পারিগা, তাও এডা সুবিদা অবো।
কই যাবেন?
-এই দূরেদারে ঢাকাডুকা।
অইখানে গিয়া কী করবেন?
-দেহি যদি ভালো কাজমুজ পাই।
কী কাজ পারেন আপনি?
-রিক্সা চালাবার পাই।
এই যে এইখানে বইসা থাকেন। কাজটাজ এইখানেও তো করতে পারেন।
-এহানে কাজ আপনের ক্যামনে করমু কইন, অই বাউডা নাই। মানুষের তো একটা সুযোগ-সুবিদা লাগে; এইডা কই?
সুযোগ-সুবিদা কী লাগে?
-সুযোগ-সুবিদা মানে মনডা ভালো লাগবো, হাতে কিছু ট্যাহাপইসা থাকতে অবো। এরপরে কাজটা যে যাইয়া ধরমু, হেইডা রেডি থাকতে অবো। এই রেডিডা আমনের নাইকা।
কিন্তু আপনি তো চেষ্টাও করেন না। আপনি যে এইখানে বইয়াই কাডায়া দিতাছেন।
-এহানেও তো আছিই। এডাও মুনে করুইন যে জাগাই (জায়গাই), ঢাহাও (ঢাকা) জাগাই। ওইখানেও কাজই করতে অবে, এখানেও কাজই করতে অবে। ঢাহাও মানুষ আছে, এনোও মানুষই আছে।
বিয়াশাদি করতে ইচ্ছা করে না?
-বিয়াশাদি তো…হ, বিয়াশাদি ইচ্ছা করে। এইডার মধ্যে না নাই। বউ-পুলাপান নিয়া থাকতে তো ইচ্ছাই করে। তাও তো দেহি নাই।
মানুষ নাই?
-মানুষ আছে। কিন্তু মানুষ থাকলে কী অবো, আপনার পাইতে হবে না!
কিন্তু এই অবস্থায় থাকলে তো …
-এই অবস্থা ছাড়া তো কোনো অবস্থা দেহি না।
এই অবস্থায় কেউ মাইয়া বিয়া দিবো?
-এই অবস্থায় আর দিবো? বিয়াশাদি করতে ভালো পরিবেশ লাগবো, ভালো বাড়ি লাগবো। ভালো পোষাক যে আছে, এই পোষাকটায় কাজ করবো। যেমুন এডা কাজ করবো কী—ওইডা দেইক্কাই আমনেরে নিয়া যাবো। তারপরে যে, নিজের আরাম আয়েশটা লাগবো।
তো আপনি বিয়াও করতে চান, আবার অবস্থাও নাই, তাইলে এটা ক্যামনে হবে, বাস্তবায়ন হবে ক্যামনে?
-বিয়া অহন না করলে কি নিজের খারাপ লাগবো না? খারাপ লাগবো।
কবে করতে চান বিয়া?
-বিয়া আমি অহন আর করমু না। বিয়া এডা করছিলাম। এডা ছেলে হইছিলো। ছেলেডা অহন থাকে বাজিতপুর।
আপনার বাড়ি কি বাজিতপুরে?
-না, জামালপুরে, ছিলো। অহন আর নাইকা।
বিয়ে করছিলেন, পরে কি বউ চইলা গেছে?
-জ্বি, পলায়া গেছে গা।
পলায়া গেলো কেন?
-বউ পলায়া যাবো না! মনে করুইন বউডা তো আর ভালো না। তার মনে চায় নাই।
নাকি আপনি খাওয়াইতে পরাইতে পারেন না কইরা গেছে গা?
-রিক্সা চালাইয়া আমনের খাওয়াইছি। রিক্সা চালাইয়া চাইল কিনছি, ডাইল কিনছি। বউডা মনে করুইন মাইনসের লগে গেছে গা। ছেলেডা, মনে করছিলাম ছেলেডারে নিয়া কিছু করমু। ছেলেডাও গেছে গা।
ও কি মায়ের কাছেই থাকে?
-জ্বি।
আচ্ছা, এই যে এইভাবে থাকেন, পাগলের মতো। লোকজন আপনেরে পাগলটাগল কয় না?
-লোকজনে তো পাগল কয়ই। কতোজনে দেখতেও পারে না।
এই যে এক বছর বইয়া বইয়া এই ইস্টিশনে কাডায়া দিলেন। কোন কাজটাজ করলেন না? ইচ্ছা হয় নাই কাজটাজ করতে?
-না। এহানে পাওয়া গেলো; আমনের খাইদ্য পাওয়া গেলো। মানুষে কিছু দিলো।
খাবার পাওয়া গেলে আর কাজ করতে ইচ্ছা হয় না!
-খাবার নাইগাই (জন্যই) তো কাজটা। খাবারের জন্যি তো মুনে করুইন আপনের কাজ করতে অবো। সামনে ভাত থাকলে, কাজ না করলেও চলবো, ভাত খাইলে। ত্যা আমনের কী…(পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হলুদ বগিটাকে দেখিয়ে) এইডারে ভাইঙাভুইঙ্গা আবার এডা কিছু বানাবাইন, বানায়া হাইরা ওই খাওয়াই। ত্যা তো এইডাই, আর কী? কাজ তো আমনের এইহানিই (এইটুকুই), কিন্তু পাওয়া যাইতেছে না।
অনেক ট্যাহাপয়সা থাকলেই কি সুখ নাকি?
-অনেক ট্যাহাপয়সা দিয়া আমনের, বেশিদূর চলাফেরা করা যায়। দেশ-বিদেশ ঘুরুন যায়। ভালো ভালো মানুষ দেহুন যায়। আর এমনে,নিজের আতো ট্যাহা নাই, হাটতেই সমস্যা অয়। আইট্টা কিছুদূর গেলে পইড়া যাওন নাগবো গা। কারও কাছে চাওন্নাগবো, ভাত দেইন, পেডো খিদা। হয়তো দিবো, হয়তো না। চাওনই যায় না।
নিজেরে সুখী মনে করেন, নাকি দুঃখী মানুষ মনে করেন?
-আমি আমারে সুখী মনে করি।
লোকে যে বলে যে, টাকাপয়সা ছাড়া সুখ হয় না। আপনের তো টাকাপয়সা নাই। তারপরেও সুখী?
-হ আমি সুখী; কারণ মন ভালো আছে তো। ভালো যদি না থাকতাম, তাইলে এই যে, ভাল্লাগতো না।
টাকা-পয়সা হইলে কি মন ভালো থাকে না?
-টাকাপয়সা…(চিন্তিত)… হ, টেহাপয়সা অইলে মন ভালো লাগে।..(কয়েক সেকেন্ড নিশ্চুপ) ট্যাহাপয়সা ছাড়াও মন ভালো।
ট্যাহাপয়সা অইলে কী করতেন?
-খাইতাম, মাছ-গোস্ত, …এরপরে …কলা, দুধ…খাইতাম।
ট্যাহাপয়সা অইলে বিয়া করতেন না একটা?
-বিয়া অহন আর করমু না।
জীবন তো অনেক বড়ো, এই দীর্ঘ জীবন ক্যামনে কাডাবেন একলা একলা?
-এমনেই চলবো। এমনেই চলবো।
পরে কী? মইরা যাবেন গা!
-হ্যা…মরমু, যহন মরণ আবো তহন মরমু। মারা যাব…যেদিন মুনে করুইন নাগবো না দুনিয়াডা, ওইদিন যামু গা। নাই। তহনকা নাই। আর মুনে করুইন যে এই আছে, এই মুনে করুইন আমিও আছি। তুই যতক্ষণ আছস, ততক্ষণ আমিও আছি। যেভাবেই থাহি। থাকমু।
দেশের খবর-টবর কিছু লইন?
-দেশের খবর লই। লইয়া হাইরা, বাদ দেই। খবর দিয়া কী অবো। যেডা গেছে গা ওইডা গেছেই।
দেশের অবস্থা ক্যামন এখন?
-ভালো, দেশের অবস্থা ভালো।
আপনের শখ কী?
– শখ…থাকা। দুনিয়াডার মধ্যে থাকাডাই শখ। আর কোনো শখ নাই।
থাকা?
-হ…থাকা।
থাকার জায়গা কই এইখানে?
-ওই অনো, পাক্কাত্।
প্ল্যাটফরমের উপরে?
-না ওইডা প্লাটফরম কয় না; পাক্কা কয়, পাক্কা।
আপনে যে কইলেন ঢাকাডুকা যাবেন গা। যাইয়া রিক্সা চালাবেন। তো পরে রিক্সাটিক্সা চালায়া ট্যাহাপয়সা হইলে, তখন আপনার পরিকল্পনা কী?
-তহন আবার আডাআডি (হাঁটাহাঁটি)। যাতে আটলে ভালো লাগে। অহনকা যে আছি, অহন ট্যাহা নাই, বন্ধ। ট্যাহা নাই, অহন আমার আডা বন্ধ।
রোদেলা নীলা বলেছেনঃ
খুব চেনা একটা মুখ,মনে হয় কোন এক অচীন স্টেশনে সে বার বার ফিরে আসে ।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
সত্যিই তাই। কবির চোখে দেখা এই ফিরে ফিরে আসা সুলতান শুধু স্টেশনেই নয়, ছড়িয়ে আছে ফুটপাতে, পার্কে, ব্রিজের নিচে। এই সুলতানরা রাষ্ট্রের কাছে, সমাজের কাছে অদৃশ্য হয়ে, কিংবা উৎকট উৎপাত হয়ে বেঁচে থাকা শিখে গেছে। আবার নিজেদেরকে সুখিও ভাবতে পারছে।
দেশিয় বাস্তবতায় চোখ রেখে কারণ হিসেবে আরবান স্প্রলিং আর পুলিং যাই বলুন, সেটা দুর্বার বরাবরই। আর সত্যটা এমনই–একটা বিরাট অংশ উদ্বাস্তু হয়ে আছে, হয়ে পড়ছে। ভবঘুরে কিংবা ছিন্নমূলদের সংখ্যার একটা হিসেব সরকারের কাছে নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে, কিন্তু তার কোনো আপডেইট নেই। থাকলেও তার অথেনটিসিটি নেই। বঙ্গদেশে এ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান কিভাবে মাঠে না গিয়েও বদলানো হয়, তা জানা আছে। সে যেমনই হোক, এমন কখনোই ভাবছি না, সরকার এ ব্যাপারে খুব দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে, যেখানে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আরও বহু জরুরী, গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক সুবিধা উপেক্ষিত পড়ে আছে, মরচে ধরে আছে।
আমরাও অনেকেই সুলতান, যদিও আছে বাস্তুর সংস্থান। আরেকটা তফাৎ হলো, সুলতান ভাণ করে না। আমাদের অনেক ভাণ থাকে, ভাণে ভাণে নাগরিক আরও অনেক সুলতানের জানগুলো যানবাহনে ছুটে ছুটে নিবুনিবু জ্বলে চলে। লাইফ ইজ বিউটিফুল–এই বলাতে ঐশ্বরিক বিশ্বাসের স্বরূপ সেঁটে থাকে। আমাদেরও আছে নিরুপদ্রপ সালতানাত এক— বিরচণে রাজা-রাণী, ঘোরসওয়ার, অরণ্যের অধিকার, জন্তু-জানোয়ার শিকার করে নিজেরাও বসি ভাগে। অতঃপর আর কি… ভোগে-বিলাসে ত্যাগে উৎসবে, চিৎকারে, শীৎকারে, সৎকারে, সান্ত্বনায় অনুকম্পায় যায়, দিন যায়।
কী আছে গীবনে! এত্তোবড়ো এমেরিকাতেও নাকি প্রতি দশ হাজারে আঠারো জন বাস্তুহীন।
——-
The length of this was inspired by ZulZub Bhai (জুলফিকার জুবায়ের)
ফারদিন ফেরদৌস বলেছেনঃ
জুলজুবের জয় হোক।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
জয় জুলজুব
জয় বাংলা ।
লেখার সময় সত্যিই জুবায়ের ভাইয়ের কথা মনে হইছে ক্ষণে ক্ষণে।
জুলফিকার জুবায়ের বলেছেনঃ
শওকত ভাই, পাঠক হিসেবে আমার অধিকার আছে মার্কিং করার।
আপনার মূল পোস্টকে আমি ৯৯/১০০ দিলাম। আর কবি রোদেলা নীলা আপুর জন্য নির্ধারিত আপনার প্রতিমন্তব্যটিকে ১০০/১০০ দিলাম। ( সঙ্গত কারণে মন্তব্যকে আমি বেশি নাম্বার দিলাম। )
●
সকল স্বপ্নদ্রষ্টা এবং নিবিড়-কর্মীদের জয় হোক! তবে জয়টা ফারদিন ভাই আর শওকত ভাইকে দিয়েই শুরু হোক।
তারা যেন জয়ের মশাল মোনেম অপু ভাইয়ের দিয়াশলাই দিয়ে জ্বালিয়ে নেন; এবং প্রাণশক্তির অভাব বোধ করলে নিতাই বাবু দা’র কাছে হার মেনে নেন। নিতাই দা’র জয় হলে আমাদেরও জয় হবে, নিশ্চিত!
●
জয় হোক আমাদের এই রঙিন ব্লগের!
রোদেলা নীলা বলেছেনঃ
জুলফিকার ভাইয়ের ভূত আপনের ঘাড়েও চাপসে ভালো,বুঝলাম। 😮 😮 😮 😮 😮
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
ভূত নয়—প্রভাব। আর ভাবও জমলো। এই আর কি।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
জুবায়ের ভাই
একাডেমিক লাইফে কোনোদিন ৯৯ বা ১০০ কোনোটাই পাওয়া হয়নি। ব্লগিয় জিন্দেগির এই ক্ষণে এতো মার্ক্স মনে অনেক উত্তেজনা, আনন্দ সঞ্চার করেছে। ভাষায় প্রকাশ করা দায়।
রোদেলা আপুকেও এই ১০০ নম্বর পাওয়ার উপলক্ষ তৈরির জন্য ধন্যবাদ জানাই।
ফারদিন ভাইয়ের সাথে আমি ঘুরেফিরে এসেই যাচ্ছি। ভালোই।
রোদেলা নীলা বলেছেনঃ
খানা দিতে হবে ।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
সে না হয় হবে। 😛
নিতাই বাবু বলেছেনঃ
ওহঃ যখন ময়মনসিংহ গিয়েছিলাম, তখন যদি রেলস্টেশনে যেতাম তবে হয়তো লোকটাকে দেখতে পেতাম ৷ লোকটার জন্য খুব মায়া হচ্ছে দাদা ৷ আবার যদি আসি তো লোকটাকে দেখাবেন কিন্তু ৷ ধন্যবাদ দাদা, ভালো থাকবেন ৷
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
দাদা, এরপর আপনি এলে একবার যাবো স্টেশনে। মনে থাকবে।
ভালো থাকবেন।
মনোনেশ দাস বলেছেনঃ
সমৃদ্ধ ভূমিকাটির পরতে পরতে দীর্ঘ চর্চার স্বাক্ষর।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
মনোনেশ দা,
আপনার এই সাত শব্দের মন্তব্য আমার কাছে সাতটা এ্যওয়ার্ড একসাথে পাওয়ার মতো আনন্দের। একজন ঋদ্ধ সাংবাদিকের এমন কমেন্ট অনুপ্রেরণার, আপ্লুত হওয়ার।
অনেক ধন্যবাদ।
সৈয়দ আশরাফ মহি-উদ্-দ্বীন বলেছেনঃ
এরকম সুলতানদের অহরহই দেখা মেলে। কিন্তু কখনোই এদের মনের কথা জানা হয়নি। অত্যন্ত সুন্দর ভাবে এদের জীবন চিত্র তুলে এনেছেন শহীদ ভাই। জগতে কত কিছুই অজানা রয়ে গেলো ! অনেক শুভেচ্ছা ভাই।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
আশরাফ ভাই
ঠিকই বলেছেন।অতো সময় কই! কতো জনই তো এরকম আছে চারপাশে! সুলতানের সুখ “খাইদ্য” পাওয়া গেলো বলে। অনেকেরই এই সৌভাগ্য নেই।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
মোনেম অপু বলেছেনঃ
কাজী, “সুলতান”-কে ছোটবেলায় আমাদের গ্রামেও দেখেছি। ঠিক এরকম চেহারা-অবয়ব। এবং কথায় এরকমই দার্শনিক। নাগরিক সাংবাদিকতায়, সাংবাদিকতায় এমন নজির তৈরি সহজ নয়। আরেকটা বিষয় জুবায়ের-সুকান্তেরও এখনও নজরে পড়েনি। পড়লেও অন্তত আমার এ মন্তব্য লেখার সময় পর্যন্ত তা মন্তব্য আকারে প্রকাশিত হয়নি। তোমার এই ১০০তম পোস্টটি শতপূর্তির মতোই বিরাট।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
সংখ্যার ব্যাপারটি আপনি খেয়াল করেছেন জেনে ভাল্লাগছে। আপনাকে এবং আর আরদের আমার Century-র শুভেচ্ছা।
এদিকে সংখ্যা নিয়ে তো ব্লগে ভুতুড়ে কাণ্ড ঘটে আছে। নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন?
ধন্যবাদ, মোনেম ভাই।
ফারদিন ফেরদৌস বলেছেনঃ
কাজী শহীদ শওকত ভাই আপনি আমার সুহৃদ ও সতীর্থ লেখক ভাবতেই প্রাউড ফিল করছি।
সুলতান সুখে আছেন। এটাই জেনেই আমি সুখী হচ্ছি। আর ভাবছি এতো অল্পতেই ওঁর মতো সুখ কোথায় গেলে পাই?
বন্ধুর জন্য সেঞ্চুরির অশেষ অভিনন্দন থাকল।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
সেইম হিয়ার, ভ্রাত:। আমিও আপ্লুত। অভিনন্দন আপনাকেও।
জুলফিকার জুবায়ের বলেছেনঃ
শওকত ভাইয়ের ১০০তম পোস্টে শুভেচ্ছা জানানো হয় নাই! মোনেম ভাই, অনুগ্রহ করে ১০০ ভাগ দোষ আমাদের দিবেন না। এখানে কিছু দোষ স্বয়ং ব্লগেরও আছে। ব্লগে প্রবেশ করতে যেয়ে আজ অনেকবার বিফল হয়েছি। তবে এটাও সত্য আপনি মনে করিয়ে না দিলে, এই গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টটা হয়ত আমার লক্ষ্য করা হতো না।
তবে যেহেতু এবার প্রবেশ করতে পেরেছি, শওকত ভাইকে জানাই সেঞ্চুরি পূর্ণ করার অভিনন্দন! তবে ১০০ করেই তিনি যদি ভেবে থাকেন, ‘ব্লগারদের অভিজাত পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হয়েগেছি – এখন আমাকে পায় কে’, তবে তিনি ভুল করবেন। ১০০০ করতে এখনও অঅনেক বাকী।
শওকত ভাই, খুব কম কেউ আত্মউন্নয়নে একনিষ্ঠ। আবার খুব কম কেউ লেখার ‘বানান ও গঠনরীতি’ নিয়ে সচেতন। আপনি সেই কম কেউদের একজন। শুভেচ্ছা রইল আপনি যেন কখনও সেই কম কেউদের সীমানা থেকে বের না হয়ে আসতে পারেন।
আপনার কণ্ঠটা বিক্রয়যোগ্য। আশা করি আপনার সাধনা সেদিকেও থাকবে। আমারা চাই টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র আপনার কণ্ঠ উচ্চমূল্যে কিনে নিক।
মোনেম ভাই, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল সঠিক যথাসময়ে উজ্জীবিত করার জন্য।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
না, না ভাই, অভিজাতটাত ভাববো কেনো। এখনও তো হাত মকশো’র মধ্যেই আছি… একদিন নিশ্চয়ই আরও পরিশীলিত হবে লেখাসব। ততোদিনে হাজার পেরোবে তো নিশ্চয়ই–আশা ছাড়ছি না।
.
অনেক অনেক ধন্যবাদ জানবেন।
সাজ্জাদ রাহমান বলেছেনঃ
কাজী শহীদ শওকত যেমন বলেন ভালো। লেখেনও চমৎকার, কোন সন্দেহ নাই। রোদেলার এক লাইনের মন্তব্যের পরে তাঁর মন্তব্যটি আলাদা করে আরেকটি রচনা হতে পারতো। বলা যায় একটা ছিলো স্ফুলিঙ্গ, বাকিটা আগুন। শওকত ভাইয়ের মুল লেখা এবং মন্তব্যে দেশের ভবঘুরে মানুষদের জীবনচিত্র ও পরিসংখ্যান খুব সুন্দর ভাবে উঠে এসেছে। বিনা বাক্য ব্যয়ে দুটি রচনাই সমৃদ্ধ। তবে কি জানেন- ভবঘুরে জীবনে এক ধরণের সুখ রয়েছে যেটা সংসার জীবনে নেই। সেটা হলো স্বাধীনতা। কিছু পেলাম তো খেলাম, বাকি সময়টা ঘুমিয়ে কাটালাম, এটাই হচ্ছে এই জীবনের অন্যতম সুখের দিক। দুঃখের দিক হচ্ছে খাবার, আশ্রয়, বস্ত্র এবং অসুখ বিসুখ হলে চিকিৎসার কোনো বালাই নেই, সেবা করার নেই কেউ। কোনো একটি চলচ্চিত্রে দেখেছি স্বাধীনতা পরবর্তিকালে সরকারি লোকজন এসে ভবঘুরেদের ধরে ধরে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে ভবঘুরে আশ্রয়কেন্দ্রে । সেই প্রতিষ্ঠানগুলো কিন্তু এখনও আছে। কিন্তু সেখানে কারা থাকে, তার খোঁজ নিলে হয়তো জানা যেতো।
সুলতান চরিত্রটি আমার দারুন পছন্দ হয়েছে, প্রশ্নকর্তার প্রশ্ন এবং সাক্ষাৎকারে তার উত্তরের প্রকাশভঙ্গী ও বক্তব্য দারুন। মনে পড়ছে কোনো এক কাগজে আমাদের দেশের একজন নামকরা স্থীর চিত্রগ্রাহক ‘ঘর নাই’ শিরোনামে একটি ধারাবাহিক রচনা লিখতেন। আমি খুব মনযোগ দিয়ে লেখাগুলো পড়তাম। কাজী শওকতের লেখাটিও এক নিঃশ্বাসে পড়েছি। সবাইকে জানিয়ে রাখি সুলতানের জীবনের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত জীবনের অনেকটা মিল রয়েছে। সেটা নিয়ে কোনো একদিন লিখবো ভাবছি। শওকত ভাইকে ধন্যবাদ জানাই চমৎকার একটি রচনা পাঠকদের উপহার দেয়ার জন্যে।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
অনেক ধন্যবাদ, সাজ্জাদ ভাই। গল্পটা তবে শুনতে হয়।
মজিবর রহমান বলেছেনঃ
শওকত ভাই,
শতম পোষ্টের হৃদয় নিংড়ানো শুভেচ্ছা।
যেমন বাচন ভঙ্গি তেমন লেখার কোশল আপনার দারুন এক জীবন নিয়ে আপনার এই লেখা। আসলেই এই মানব জীবন। বিড়ি ধরানর ম্যাচ তাঁর আছেই নায় বিড়ি। সেটা পথচলতি মানুসই ভরসা। খুব ভাল লাগলো।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
শুভেচ্ছা, ধন্যবাদ। এবং ভালবাসা রইলো।