উৎপল চক্রবর্তী আমার কেউ ছিলেন না!

কাজী শহীদ শওকত
Published : 20 May 2017, 06:40 PM
Updated : 20 May 2017, 06:40 PM

উৎপল চক্রবর্তী আমার কেউ ছিলেন না। তিনি ব্লগ ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ব্লগার ছিলেন। তিনি আরও অনেক কিছু ছিলেন। আমরা দুজন কেউ কারও ছিলাম না। তবে আমাদের কথা হতো।  সাক্ষাতে, ইনবক্সে।


এই ছবিটির মতোই প্রাণবন্ত দেখেছি তাঁকে– লেখায় এবং কথায়। সবসময় মজা করতেন। গুরুগম্ভীর হয়ে অন্তত তাঁর সামনে থাকা দায় ছিলো যে কারোরই। এমনকি ব্লগের মন্তব্যগুলোতেও তাঁর সেই স্বভাবজাত রসিকতা পাঠকের নজর এড়াতো না। একটা উদাহরণ দেওয়া যায়।
.
তখন কেবলই শুরু করেছেন বিডি ব্লগে। কয়েকটি লেখাতেই আমার প্রিয় বনে গিয়েছেন। ইঞ্জিনিয়ার এই ভাইটি সেদিন লিখলেন গম্বুজ স্থাপনা দিয়ে। মন্তব্যের ঘরে লিখলাম –

"আপনার আগের লেখাগুলোও পড়েছি। এবং এটিতেও বরাবরের মতো জ্ঞানের অনেক অনেক রসদ পেলাম। গম্বুজ নিয়ে এতো কিছু জানার ছিলো!
তথ্যের বাইরে আপনার লেখার আরেকটি বড়ো চৌম্বকিয় (চৌম্বকিয় কারণ, এর ফলে বড় লেখাটিও পড়তে পাঠক বাধ্য হন) গুণ হলো, চমৎকার হিউমার। আপনার আগের লেখাগুলোতে সেটি আরও বেশি পেয়েছি। এটি তুলনামূলক সিরিয়াস লেখা বলেই আরও বেশি হিউমার দেওয়া গেল না নিশ্চয়ই।
'বাঁশ বাগানের মাথার উপর…" লেখাটির লিংক আমার এক সাম্প্রতিক ব্লগে যুক্ত করেছি…"
.
তিনি জবাব দিলেন-
"লেখা একটু বড়ো হয়ে গেলে সেই আজাইরা প্যাচাল লোকে আজকাল শুনতে চায় না , আর সেই সময়ই বা কোথায় ! দিন শেষে লিখে ফেলবার পর মনে হয় , নিজের পড়ার জন্যেই বোধ হয় লিখেছি । আপনারা যারা নিয়মিত এখানে লেখালেখিতে আছেন , আপনাদের ইন্টারেকশন দেখি ভালো লাগে , ক্লাব কালচার , পার্লামেন্ট কালচার , সচিবালয় কালচার , স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কালচার -সে রকম একটি কালচার এখানেও হয়তোবা আছে যার শিষ্টাচার আমার জানা নেই , তাই মন্তব্য করি না। আপনি আমায় পড়েছেন তা পড়তেই পাড়েন, আমার লেখা ভালো লেগেছে তা লাগতেই পারে , প্রতিদানে ধন্যবাদ দিতে নাহি চাই , কিন্তু আপনি প্রথম হাতটা বাড়িয়েছেন আমার দিকে – তাতে আমি কি নিদারুণ মুগ্ধ হয়েছি এবং কতখানি তাহা সেটাও আপনাকে জানাইতে নাহি চাই আমি।…"
.
এই ছিলেন উৎপল দা। ছিলেন বলছি কারণ আসবেন বলে তিনি আর এলেন না। আসবেন না।
দাদা, এভাবে চলে গেলেন!  এই তো সেদিনও কতো কাছে বসেছিলাম আপনার!