খানসামার ভাঙা রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণে নেই এলাকাবাসীর সচেতনতা

মোঃ আব্দুল মোমেন
Published : 1 June 2018, 09:43 AM
Updated : 1 June 2018, 09:43 AM

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কাচিনীয়া থেকে খানসামা সদর পর্যন্ত রাস্তাটি নির্মাণে এলাকাবাসীর দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। ষোল কিলোমিটার দীর্ঘ এ রাস্তা নির্মাণ নিয়ে একসময় হাল ছেড়ে দিয়েছিল উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। তারা ভেবেছিল, হয়তো রাস্তাটি আর কোনো সরকারই পাকা করবে না। এর মধ্যেই স্থানীয়দের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে বর্তমান সরকার সুন্দরভাবে রাস্তাটি পাকা করে দেয়।

কিন্তু নির্মাণের পরে দেখা গেল দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষিত এ সড়কটি ব্যবহারে স্থানীয়দের দায়িত্বহীন আচরণ। তারা সড়কটিকে নিজেদের মনে না করে এর যথেচ্ছ ব্যবহার করছেন। ধান, গম, ভুট্টা রোদে শুকানোসহ যাবতীয় কাজ সারছেন রাস্তাতেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের বেশ কিছু জায়গায় ভেঙে গেছে। কিন্তু স্থানীয় কেউই রাস্তাটি ঠিক করতে এক কোদাল মাটি নিয়েও এগিয়ে আসেনি। রাস্তাটি সবার উপকারে আসলেও সরকারি সম্পত্তি ভেবে ছোট ছোট ভাঙাগুলো কেউ ঠিক করছে না। রাস্তাটির বেহাল অবস্থা নিয়ে স্থানীয় শতাধিক লোকের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। আশ্চর্যের বিষয়, কেউ ভাঙা রাস্তাটি মেরামতের জন্য একটু আগ্রহও প্রকাশ করেনি।

স্থানীয়রা জানান, বন্যার সময় এবং তার পরবর্তী সময়ে বৃষ্টির পানির কারণে রাস্তার অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে। আবার কেউ কেউ রাস্তার ধারে নিজেদের পুকুর বা জমির মাটি কাটায় অনেক স্থানে ভেঙে গেছে। ভাঙা অংশগুলো যথাসময়ে সংস্কার না করায় ধীরে ধীরে তা বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। এতে ভাঙনের পরিমাণ আরো বাড়ছে।

এই রাস্তা সরকার তৈরি করলেও, তা তো জনগণের টাকা দিয়েই হয়েছে। রাস্তার মালিকানা তো প্রকারান্তরে জনগণেরই। সেই অর্থে রাস্তাটির সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং মেরামতের দায়িত্ব সরকারের একার নয়। আমরা ব্যবহারকারীরা সচেতন না হলে সরকার তো এটা ঠিক রাখতে পারবে না।

আমি ষোল কিলোমিটার রাস্তায় প্রায় শখানেক মানুষকে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তাদের বলেছি, রাস্তাটি আমাদের, ব্যবহার করছি আমরা, আমাদের টাকায় তৈরি। সুতরাং সরকারের আশায় না থেকে আসুন আমরা নিজেরাই একটু একটু করে ভাঙা জায়গাগুলো ঠিক করে নেই।

কথাগুলো অনেকেই মন দিয়ে শুনেছেন। কেউ হয়তো মানবেন, কেউ হয়তো মানবেন না। অনেকে আবার সরকারের আশায় বসে থাকবেন।

এটা দু:খজনক যে 'সরকারি' ভেবে রাস্তার মতো কমন প্রোপার্টিগুলো আমরা রক্ষণাবেক্ষণ করছি না। উল্টো ধ্বংস করছি নিজেরাই। তাই সবার আগে পরিবর্তন করা দরকার আমাদের মানসিকতার। আমরা পরিবর্তন হলেই পরিবর্তন আসবে বাংলাদেশের।

——————————-