বিভিন্ন ব্যস্ততার জন্য দিনে বাজার করার সময় করার সময় বের করা কঠিন। তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে চেষ্টা করি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি একসাথে কেনার জন্য। মতিঝিলে আমার পত্রিকা অফিসের নিচে ফুটপাতে সবজিসহ অন্য নিত্যপণ্যের বাজার বসে বিকাল ৫টার পর। অফিস শেষ করে প্রায়ই শাক-সবজি কেনার জন্য সেখানে একবার ঢু মারি। বেশ কিছুদিন অভ্যাস হয়ে গেছে অফিস থেকে বেরুনোর সময় বউকে ফোন দেয়া। ফোন দিয়ে আসলে তাকে জানাই আমি আসছি! তাছাড়া কোন কিছু আনতে হবে কিনা এটা জানার জন্যও ফোন দিতে হয়।
গতকাল বুধবার রাতে পত্রিকা অফিসের কাজ শেষে অফিস থেকে একটু আগেই বের হয়েছি। বের হবার সময় বাসায় যথারীতি ফোন দিলাম। কোন কিছু কেনা লাগবে না জেনে বাসার দিকে রওনা হলাম। শাহবাগ পর্যন্ত আসার পরে বাসা থেকে ফোন দিয়ে বলা হল কাচা মরিচ আনতে হবে। কাটাবন মোড়ে নেমে গেলাম হাতিরপুল বাজারে। হাতিরপুল বাজারে সবকিছুর দাম সবসময় একটু বেশিই থাকে। কিন্তু বাসার আশেপাশে অন্যকোন বাজার না থাকায় বাধ্য হয়ে সেখান থেকেই বাজার করতে হয়।
কেনাকাটায় আমি কোনদিনই পটু না। বাজারে গেলে সবসময় ভয়ে থাকি না জানি কি পরিমাণ ঠকতে হয় আমাকে। তাই সচরাচর একদামের মানে ফিক্সড প্রাইসের দোকানগুলোতে কেনাকাটা করি। সবজির দোকানতো আর ফিক্সড প্রাইসের হয়না সাধারণত। তাই সবজি/মাছ কেনার সময় আমি বাজারে ঢুকে আগে বিক্রেতাদের চেহারা দেখি। যাকে দেখে মনে হয় এইলোক মানুষকে কম ঠকায় তার কাছ থেকেই জিনিসপত্র কিনি। আর ভাবতে থাকি ছোটবেলা থেকেই দাম-দর করার অভ্যাসটা যে কেন গড়ে উঠেনি
পরিচিত এক দোকানদারকে বললাম, ২০ টাকার মরিচ দেন। উনি সামান্য কয়েকটা মরিচ দিলেন একটা পলিথিনে। পরিমাণ কম দেখে বললাম, ভাই আমি ২০ টাকার মরিচ চাইছি। দোকানদের সহাস্যে বললেন, সাংবাদিক সাহেব, আপনি বোধহয় জানেন না যে মরিচের কেজি ২৫০ টাকা। আমি কথা না বাড়িয়ে মরিচের পোটলাটা প্যান্টের পকেটে ঢোকালাম।
বাসায় ঢুকলে বউ জিগাইলো, মরিচ আনো নাই? প্যান্টের পকেট থেকে মরিচের পোটলাটা বের করে দেয়ার বউতো অবাক। পোটলা প্যান্টের পকেটে কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে আমি বললাম, আগে গুনে দেখতো কতটা মরিচ আছে এখানে। গুনে দেখা গেল সেখানে ২৩টা কাঁচামরিচ আছে।
২০ টাকা দিয়ে ২৩টা কাঁচামরিচ কিনেছি। এ অবস্থায় বউ যদি ভাবে আমি বাজার করতে গিয়ে ঠকে আসি, এতে আমি তার দোষ খুঁজে পাই না। মরিচের কেজি ২৫০ টাকা কেন হয় আমার ছোট মাথায় এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাই না!