এ্যাডমেকারের উর্বর মস্তিস্কজাত অ-মার্কেটিং ও অ-ইথিকসে পরিপূর্ণ সেলস-ব্যবস্থাপনা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশে

কৌশিক আহমেদ
Published : 28 August 2012, 04:25 PM
Updated : 28 August 2012, 04:25 PM

বাংলাদেশে খুব সহজে প্রাপ্য চাকুরী হচ্ছে কোনো কোম্পানীর মার্কেটিং বা সেলস বিভাগে। মার্কেটিং বা সেলস নামে চাকুরী গুলোর নাম থাকলেও বেশীরভাগ কোম্পানী এর মধ্যে প্রভেদ করতে পারে না। কারণ তাদের এইচআরডি নামে কোনো বিভাগই নেই, ফলে জ্ঞানও সীমিত। কোম্পানীর হর্তাকর্তারা নিজেরাও ঠিকমত বুঝতে পারে না তার আসলে মার্কেটিং এর লোক দরকার না কি সেলসের।

সোজা কথায় একটা কোম্পানীর যদি এমন কোনো প্রোডাক্ট থাকে যা অন্য কারো দোকানে দোকানে বিক্রি করতে হয় যা তারা আবার সাধারণ গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে তাহলে সে কোম্পানীর সেলসের লোক লাগবেই। কোনো কিছু সেল করা যদি এমন হয় যা ক্রেতা (দোকানদার) তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তেই কোনো কিছু কিনে ফেলতে পারেন – এমন সব পন্য বাজারজাত করার জন্য সেলসের চাকুরী। এই একই ধরণের পন্যের জন্য মার্কেটিং-এর লোকও প্রয়োজন, কারণ বাজার বৃদ্ধি ও পন্যের গুনগান গাওয়ার জন্য সেলসের লোকের সেই মাত্রায় দক্ষ না হলেও চলে, যা মার্কেটিং এর লোকেরা করতে পারে।

কিন্তু এছাড়া যাদের প্রোডাক্ট এমন যা অন্যের দোকানে দেয়া যায় না সাধারণ গ্রাহকের কাছে বিক্রির জন্য – মানে যাদের ডাইরেক্ট সেলিং করতে হয় সরাসরি ক্রেতার কাছে – তাদের জন্য উপযুক্ত হচ্ছে সেই সমস্ত মানুষ যাদের সেলসের জ্ঞান আছে। এক্ষেত্রে শুধু সেলস-জ্ঞান থাকাই যথেষ্ট নয়, তাকে মার্কেটিং জ্ঞানও থাকতে হবে। মানে উপযুক্ত ব্যক্তিকে মার্কেটিং ও সেলস পৃথকভাবে ভালো করে বুঝতে হবে এবং সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে। এসমস্ত ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞান সহায়ক হলেও একাডেমিক জ্ঞান থাকা অত্যন্ত বাঞ্ছনীয়।

বাংলাদেশের সেলস ও মার্কেটিং ফিল্ডে যারা চাকুরী করে এবং যারা প্রার্থী খোঁজে তাদের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিয়ম করে ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে মনে হলো – এই সেক্টরটা সবচেয়ে বেশী অবহেলিত এবং এখানে যারা কাজ করে তারা অবমূল্যায়িত। এর ফলে এই সেক্টরে কোনো কোয়ালিফাইড ছেলেমেয়ে কাজ করে না এবং যারা কাজ করে তাদের আবার যোগ্যতাও নাই, একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড নাই। একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকায় অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান দিয়ে বেশীরভাগ সেলস বা মার্কেটিং এর লোক খুব বেশী ভালো মার্কেটিং টেকনিকও এপ্লাই করতে পারে না, পরিবর্তিত সিনারিওর সাথে গবেষণালব্ধ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে না।

বাংলাদেশের যেকোনো পন্যের মার্কেটিং ও সেলসে এই অভাবটা দেখা যায়। কেবলমাত্র বিদেশে মার্কেটিং ও সেলসে পড়াশুনা করা কিছু ছেলেমেয়েদের খুবই ভালো করতে দেখা যায়, তারা বড় কোম্পানীগুলোতে কাজ করে এবং বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেতনধারী। এছাড়া সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের মার্কেটিং এর চিত্র ভীষণরকম হতাশাজনক, কিছু এ্যাডমেকারের উর্বরমস্তিস্ক জাত নন-মার্কেটিও ইথিকসে পরিপূর্ণ একটা সেলস-ব্যবস্থাপনা চলছে বাংলাদেশে। এর ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ একটা প্রডাক্ট হিসাবেও মার খাছে চরমভাবে। বাংলাদেশের বৈদেশিক কুটনীতির মার্কেটিংও এর ধারাবাহিকতায় চরমভাবে নিম্নমানের ও হতাশাজনকভাবে ব্যর্থ।